ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের কর্মবিরতি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ফাইল চিত্র।
নবান্নের কড়া বার্তা সত্ত্বেও ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতিতে অনড় সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। সোম ও মঙ্গলবার তাঁরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। অনেক কর্মচারী সংগঠন আবার সব প্রস্তুতি শেষ করে সংগঠিত ভাবে এই কর্মসূচি পালন করবে। মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে এই আন্দোলন হচ্ছে বলেই দাবি রাজ্য সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলির। যদিও, গত বুধবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বাজেট বক্তৃতার শেষ ভাগে ৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তা সত্ত্বেও আন্দোলনের এমন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল সমর্থিত কর্মচারী ইউনিয়ন। আবার ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ওইদিন কর্মবিরতি করলে ভুল বার্তা যেতে পারে বলেই মত তাঁদের।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কর্মসূচির পাল্টা শনিবার নবান্নের তরফে নির্দেশিকা প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী সোমবার এবং মঙ্গলবার অফিসে আসতেই হবে সরকারি কর্মীদের। ওই দু’দিন কর্মবিরতিতে অংশগ্রহণ করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের শো-কজও করা হতে পারে। তবে সরকারে এমন হুমকিকে পাত্তা দিতে নারাজ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা সরকারি নির্দেশিকা দেখেছি। আমাদের কেউ সোম বা মঙ্গলবার অফিস ছুটি করব না। বরং ওই দু’দিন কলম না ধরে আমরা প্রতিবাদ জানাব।’’ কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিজয়শঙ্কর সিনহা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিবাদে শামিল হবই। কিন্তু আমাদের প্রতিবাদ হবে কেবল মঙ্গলবার। ওইদিন আমাদের সংগঠনের কেউ কলম ধরবেন না। ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এ ভাবেই আমরা প্রতিবাদ জানাব। তাই সবাই যখন অফিসে আসব তখন সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে আমাদের কোনও ভাবনা নেই।’’
মাধ্যমিক পরীক্ষার কারণে কেবলমাত্র মঙ্গলবার কর্মবিরতিতে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষার কারণে পরপর দু’দিন শিক্ষকরা কর্মবিরতি করতে অভিভাবকদের মধ্যে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই আমরা কেবলমাত্র একদিন কর্মবিরতিতে অংশ নেব।’’ আর তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘বাম জমানায় সিপিএম যেমন কর্মবিরতি ডাকলে কো-অর্ডিনেশন কমিটি তা সমর্থন করত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ২০১১ সালের ক্ষমতায় এসে বন্ধ, ধর্মঘটের সংস্কৃতিই তুলে দিয়েছেন। সবেতন ছুটির সংস্কৃতিও তুলে দিয়েছেন তিনিই। তাই রাজ্যের কর্মসংস্কৃতি পক্ষে যা ভাল নয়, তা সরকারি কর্মচারীদের করা উচিত নয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ডিএ নিয়ে অবশ্যই আন্দোলনের অধিকার রয়েছে সরকারি কর্মচারীদের। কিন্তু তা কোনও ভাবেই কর্মসংস্কৃতি নষ্ট করে নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy