Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

শনিবার ভোট, প্রায় এক মাসের প্রাক্-পর্বে মৃত্যুর পরিসংখ্যান ‘শান্তিপূর্ণ’ পরিস্থিতির কথা বলছে না

পরিসংখ্যান বলছে, ভোটগ্রহণের আগেই রাজ্যে নিহতের সংখ্যা দুই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেছে! মনোনয়ন পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে ভোটের প্রচার-পর্ব শেষ হওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যার নিরিখে এগিয়ে ভাঙড়।

Graphical representation

মনোনয়ন পর্ব থেকেই বিভিন্ন জায়গায় হিংসা, হানাহানি, রক্তপাতের সাক্ষী থেকেছে গোটা বাংলা। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ ২৩:৫৮
Share: Save:

শেষ হল পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার-পর্ব। আর এক দিন পর, শনিবার ভোটগ্রহণ। তার আগে মনোনয়ন পর্ব থেকে শুরু করে এই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় হিংসা, হানাহানি, রক্তপাতের সাক্ষী থেকেছে গোটা বাংলা। ভোটের দামামা বাজার আগে থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা ‘অহিংসা’র বার্তা দিয়েছেন বটে, কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগে বিভিন্ন জনসভা, দলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি থেকে শাসক তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার ‘শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনের কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ভোট করতে তাঁরা কৃতসঙ্কল্প। কিন্তু প্রাক্-ভোট পর্বে সেটা যে সম্ভব হল না, মৃত্যুর পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট।

বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ‘ঐতিহ্য’ দীর্ঘ কয়েক দশকের। সামগ্রিক প্রবণতা বলছে, রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াইয়ে যত দিন শাসক দল ও বিরোধীরা মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে, সংঘাত হয়েছে। গ্রামীণ রাজনীতির বৃত্তে যাঁরা ঘোরাফেরা করেন, তাঁদের মত, পঞ্চায়েত দখল করলে অর্থ এবং দাপট দুয়েরই সুযোগ বাড়ে। ক্রমশ বড় হয় ‘সুবিধাভোগীদের’ বৃত্ত। তার অর্থ, সর্বগ্রাসী নিয়ন্ত্রণের শক্তিবৃদ্ধি ঘটে। এ কথাও অনস্বীকার্য যে, ক্ষমতার উত্থান-পতন মূলত নির্ধারিত হয় গ্রামের ভোটেই। কারণ, ভোটার সংখ্যায় গ্রামাঞ্চল অনেক এগিয়ে। তাই পঞ্চায়েতকে ক্ষমতার প্রথম সোপান ধরে নিয়ে এখান থেকেই রাজনৈতিক সংঘাতের সূত্রপাত হয়। ফলে উঁচুতলার উত্তাপ বাড়তে থাকলে নীচেও তার আঁচ বাড়ে। তীব্র হয় হিংসা, হানাহানি।

বামেরা ১৯৭৭-এ ক্ষমতায় বসলেও পঞ্চায়েত ভোটে বড় সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠা শুরু হয় মোটামুটি ১৯৮৮ অর্থাৎ বাম জমানার তৃতীয় বারের ভোট থেকে। একই ভাবে, বামেদের পতন ঘটিয়ে ২০১১-তে তৃণমূল সরকারে আসার পরে ২০১৩-র প্রথম পঞ্চায়েত ভোট খুব ঘটনাবহুল ছিল না। অনেকের মতে, তার কারণ, মূল বিরোধী শক্তি বামেরা তখন একেবারেই ‘কোণঠাসা’। কিন্তু পরে রাজ্যে বিরোধী শক্তি হিসাবে বিজেপি মাথাচাড়া দেওয়ার পরে ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তেজনা শিখরে পৌঁছয়। এ বারের ভোটে শাসকদলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে বিরোধীরা। যার ফলস্বরূপ, মনোনয়ন পর্ব থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়-ক্যানিং, মুর্শিদাবাদের রানিনগর-ডোমকল, কোচবিহারের দিনহাটা, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। এ ছাড়াও হিংসার ঘটনা ঘটেছে বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া এবং মালদহ জেলাতেও।

Graphics

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পরিসংখ্যান বলছে, পঞ্চায়েতে ভোটগ্রহণের আগেই রাজ্যে নিহতের সংখ্যা দুই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেছে! সব ক’টি ঘটনাই যে পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে সম্পর্কিত, তা অবশ্য জোর দিয়ে বলা যায় না। অনেক ঘটনাই আবার কমিশনের খাতায় নথিভুক্ত নয়। তবুও ভোটের আবহে যে হেতু ঘটেছে, তাই তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক চাপানউতর অব্যাহত। পরিসংখ্যান বলছে, মনোনয়ন পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে ভোটের প্রচার-পর্ব শেষ হওয়া— নিহতের সংখ্যার দিক দিয়ে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে ভাঙড়। মনোনয়নের শেষ দিনে, ১৫ জুন লাগামছাড়া সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল সেখানে। মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও আইএসএফের সংঘর্ষে সেখানে তিন জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে এক জন আইএসএফ কর্মী, নাম মহিউদ্দিন মোল্লা (২৪)। অন্য দু’জন তৃণমূলের কর্মী— রশিদ মোল্লা (৩৪) এবং রাজু সর্দার (৩২)। প্রথম জনের বাড়ি কাশীপুর থানার জয়পুর গ্রামে। অন্য জন ক্যানিং-২ ব্লকের জীবনতলার বাসিন্দা। তৃতীয় জন ভাঙড়-২ ব্লকের বামনঘাটার বাসিন্দা। তাঁর মাথা থেঁতলে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি দাবি করেছিলেন, ‘‘মনোনয়ন জমা দেওয়ার নামে তৃণমূলের সশস্ত্র বাহিনী এলাকা ঘিরে রেখেছিল। সকাল থেকে বোমা-গুলি চলেছে। শাসকদলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।’’ পাল্টা ভাঙড়ে দলের দায়িত্বে থাকা ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার বক্তব্য ছিল, ‘‘ওরা বাইরে থেকে লোকজন, বন্দুক এনে এলাকা ঘিরে গণতন্ত্রকে কার্যত খুন করেছে। আমাদের দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম বহু।’’

ওই একই দিনে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল চোপড়া। সেখানকার কাঁঠালবাড়ি এলাকায় মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া বাম-কংগ্রেসের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় মাথায় গুলি লেগে মৃত্যু হয় মনসুর আলম নামে এক জনের। জখমও হয়েছিলেন সাত জন। তাঁদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুও ছিলেন। গত ১৫ জুন মুর্শিদাবাদের নবগ্রামেও খুন হন তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতি। হোজবিবিডাঙা গ্রামের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম মোজাম্মেল শেখ (৪২)। শাসকদলের দাবি, কয়েক জন নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন মোজাম্মেল। সেই সময় বাম-কংগ্রেস কর্মীরা তাঁদের উপর হামলা চালান। মোজাম্মেলকে মারধর করে মাথায় গুলি করা হয়। তাতেই মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার।

মনোনয়ন শুরুর দিনেই মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও সেই ঘটনার সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এর পর মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্বের মধ্যে গত ১৭ জুন মালদহের সুজাপুরে এক তৃণমূল নেতাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দাবি, নিহত মোস্তফা শেখ (৬২) দলের সক্রিয় নেতা ছিলেন। তাঁকে খুন করার অভিযোগ ওঠে কংগ্রেস কর্মী আসমাউল শেখ এবং আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জেলা কংগ্রেস নেত্রী ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের কোনও ভূমিকা নেই। অভিযুক্তেরা কেউ কংগ্রেসের প্রার্থী নন। টিকিট নিয়ে তৃণমূলের নিজেদের দ্বন্দ্বে খুন হয়েছে।’’ ১৭ জুন গভীর রাতে কোচবিহারের দিনহাটায় শম্ভু দাস (২৭) নামে এক বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শম্ভুর বৌদি বিশাখা দাস এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে টিয়াদহের বিজেপি প্রার্থী। পাল্টা তৃণমূলের দাবি ছিল, ঘরোয়া বিবাদ বা শরিকি দ্বন্দ্বের মতো কারণে খুন হয়ে থাকতে পারেন শম্ভু। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্য নেতা তাপস রায় বলেন, ‘‘তদন্তের আগেই তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা ঠিক নয়।’’

এর পর গত ২৭ জুন দিনহাটায় আরও এক জন নিহত হন। স্থানীয় সূত্রে খবর, জারিধরলায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে এক তৃণমূল সমর্থকের প্রাণ যায়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম বাবু হক (৩৪)। অভিযোগ, তাঁকে গুলি করে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতী এনে পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছে শাসকদল। প্রশ্ন তোলা হয় বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও। পাল্টা বিজেপি দাবি করেছে, ওই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক দাবি করেন, নিহত বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু তাঁর কাছে ভারতের আধার কার্ডও ছিল। নিশীথের দাবি, বাবু আদতে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী’! এই দাবির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পাল্টা নিশানা করেছেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তাঁর বক্তব্য ছিল, যদি কোনও ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর জেলায় অনুপ্রবেশ করে থাকেন, তবে তা তাঁর ব্যর্থতা। নিশীথের পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছিলেন উদয়ন।

গত ১ জুলাই রাজনৈতিক গোলমালে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীও। সেই বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ গ্রামে গুলি করে খুন করা হয় যুব তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল মোল্লার (৪২)। জিয়ারুলকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়েরা তাঁকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে যুব তৃণমূল নেতাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর মাথায় ও পেটে গুলি লেগেছে। পরিবারের দাবি, জিয়ারুল যুব তৃণমূল করতেন বলে প্রায়ই খুনের হুমকি দেওয়া হত। দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন বলে দাবি করেছেন পরিবারের লোকেরা। গত ৩ জুলাই পুরুলিয়ার মানবাজার-২ ব্লকের হেঁসলার কেন্দডি এলাকার বিজেপির বুথ সাধারণ সম্পাদক বঙ্কিম হাঁসদার দেহ উদ্ধার হয় নদীর ধার থেকে। পরিবারের দাবি, আগের দিন বিকেলে নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বঙ্কিম। তার পর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। রাত পর্যন্ত ওই বিজেপি নেতা বাড়ি না ফেরায় খোঁজখবর করা শুরু করেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু তাঁর হদিস মেলেনি। তার পরের দিন সকালে নদীর ধারে বঙ্কিমকে পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা।

গত মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে খুন হয় ইমরান হোসেন নামে ১৭ বছরের এক কিশোরও। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবা-দাদার সঙ্গে তৃণমূলের একটি মিছিলে গিয়েছিল সে। অভিযোগ, ফেরার পথে হঠাৎই রাস্তার পাশের একটি বাড়ি এবং স্কুলের ছাদ থেকে তাদের উপর ইট-পাটকেল ও বোমা ছুড়তে থাকেন আইএসএফ সমর্থকেরা। সেই সময়ে ইমরানের বুকে বোমা লাগে। সেখানেই লুটিয়ে পড়ে সে। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বৃহস্পতিবারও বীরভূমের মহম্মদবাজারের হিংলো অঞ্চলের সেরেন্ডা গ্রামে দিলীপ মাহারা নামে এক বিজেপি কর্মীর দেহ উদ্ধার হয়। দিলীপের স্ত্রী ছবি মাহারা নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন এই পঞ্চায়েত ভোটে। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙাতেও মহেশপুর এলাকার মাঠ থেকে উদ্ধার হয় কামাল শেখ নামে এক জনের দেহ। বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে গত সোমবার, ৩ জুলাই প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে জখম হয়েছিলেন নির্দল সমর্থক আলফাজ হালদার। বৃহস্পতিবার কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।

৯ জুন মনোনয়নের শুরু থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাজ্যে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয় বোমা বিস্ফোরণে। গত ২৪ জুন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বোমা বিস্ফোরণে মারা যান আলিম শেখ। গত ২ জুলাই উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী পরিতোষ মণ্ডলের। স্থানীয়দের দাবি, বোমা বাঁধতে গিয়ে অসাবধানতবশত বিস্ফোরণ ঘটে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

মনোনয়ন পর্ব এবং তার পরে রাজ্য জুড়ে হিংসা, হানাহানির ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বিরোধী দলের নেতারা। তার প্রেক্ষিতে এ বার রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। সেই মতো এ বার ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হওয়ার কথা। অন্য দিকে, রাজ্যের বেশ কয়েকটি হিংসা বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখে দুষ্কৃতীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর দিতে বলেছেন তিনি। তার পরেও শনিবার, ভোটগ্রহণের দিন কি হিংসা এড়ানো সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে।

এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সিপিএমের হার্মাদরা তৃণমূলে ঠিক মতো ভাগ না পেয়ে ফের সিপিএমে ফেরত আসছে। এখন তাদের মূল লক্ষ্য তৃণমূল। ভয়ানক পরিস্থিতিতে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘মনোনয়ন পর্বের আগে থেকে তৃণমূল লাগাতার সন্ত্রাস চালাচ্ছে। তবে মানুষ বেশির ভাগ জায়গায় প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। শান্তির আবহে এই ভোট হচ্ছে না।’’ পাল্টা তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, ‘‘তৃণমূল কর্মীরা শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে প্ররোচনা সত্ত্বেও অত্যন্ত সংযম দেখিয়েছেন। শান্তির পরিবেশ না থাকলে বিরোধীরা এত সংখ্যায় মনোনয়ন জমা দিতে পারতেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2023 Death West Bengal State Election Commission Calcutta High Court Rajiva Sinha C V Ananda Bose
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy