অভিযুক্ত দম্পতির বাড়ি-গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
মাঠে পড়েছিল বাজার করার বড় নাইলনের ব্যাগ। ভিতরে কালো রঙের পলিথিন দেখে সন্দেহ হয় মাঠে আসা কৃষকদের। কাছে যেতে সেই পলিথিনের ফাঁকে দেখা যায় মানুষের দেহাংশ। পুলিশ গিয়ে ওই ব্যাগের ভিতর থেকে উদ্ধার করে এক বালকের মৃতদেহ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের খুড়শি পঞ্চায়েতের দক্ষিণ পলাশী এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া ওই দেহ ঘিরে শনিবার শোরগোল পড়ে। মৃত বালক পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর এলাকার বাসিন্দা সৌরভ সেনাপতি (১২)। নৈপুর গ্রামে তার বাড়ি। শুক্রবার থেকে সে নিখোঁজ ছিল। এ দিন তার এমন অবস্থায় দেহ উদ্ধারের ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পটাশপুর। সৌরভের এক প্রতিবেশীর বাড়ি এবং গাড়ি ভাঙচুর করে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে ক্ষিপ্ত জনতা। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সৌরভের বাবা রূপম সেনাপতি যাত্রা দলের আলোকশিল্পী হিসাবে কাজ করেন। তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে তাঁর ছেলে বাড়ি থেকে নিখোঁজ ছিল। এ দিন সকালে পরিবারের তরফে থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হয়। দুপুরের দিকে সৌরভের থলে বন্দি দেহ উদ্ধারের খবর সামনে আসে। সমাজ মাধ্যমে সেই ছবি দেখে পরিবার।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বালক দুষ্টু স্বভাবের ছিল। স্থানীয়দের একাংশের অনুমান, সৌরভ হয়তো ওই প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে কিছু জিনিসপত্র সরিয়েছিল। সেই রাগেই প্রতিবেশী দম্পতি তাকে শুক্রবার রাতে খুন করে বলে অভিযোগ। মৃতের পরিবারের দাবি, দেহ লোপাটের জন্য সেটি নাইলনের ব্যাগে ভরে শুক্রবার গভীর রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের পোক্তাপোল-দশগ্রাম গ্রাম সড়কের ধারে ফেলে দেওয়া হয়। এ দিন সকাল ১১টার দিকে সেটিই চোখে পড়ে স্থানীয় চাষিদের। মৃতের মা মণি সেনাপতি বলেন, ‘‘ছেলে শুক্রবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। রাতে প্রতিবেশী ওই দম্পতি ছেলেকে খুন করে, হাত-পা ভেঙে ব্যাগে ভর্তি করে। পরে সেই ব্যাগ পশ্চিম মেদিনীপুরে ফেলা হয়। অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই।’’
এ দিন লক্ষ্মীবাজার সংলগ্ন এলাকায় ওই অভিযুক্ত দম্পতির বাড়িতে হামলা চালায় ক্ষিপ্ত জনতা। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে লক্ষ্মীবাজারে পটাশপুর-তেমাথানিতে রাজ্য সড়কও অবরোধ করা হয়। ঘটনাস্থলে এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং র্যাফ মোতায়েন করা হয়। তিন ঘণ্টা পথ অবরোধের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। উল্লেখ্য, অভিযুক্ত দম্পতির আদি বাড়ি মাধবপুর গ্রামে। পারিবারিক সমস্যার জেরে বছর দশকের আগে নৈপুরে শ্বশুর বাড়িতে এসে থাকতেন তারা। এখানে ওষুধের ডিস্ট্রিবিউটরের দোকান রয়েছে দম্পতির। আপাতত তাদের আটক করেছে পুলিশ। এগরার এসডিপিও মহম্মদ বৈদ্যুজ্জামান বলেন, ‘‘বালকের নিখোঁজের ঘটনার অভিযোগে সন্দেহভাজন এক দম্পতিকে আটক করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy