দিঘায় সতর্কবার্তা প্রশাসনের। —ফাইল চিত্র।
ধেয়ে আসছে ‘জাওয়াদ’। আগামী শনিবার উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা উপকূলের মাঝামাঝি কোনও জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। তার জেরে বাংলার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতেও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যেই যাঁরা মাছ ধরার জন্য সমুদ্রে গিয়েছেন তাঁদেরও ফিরতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষকদেরও ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।
আমপান এবং ইয়াসের জোড়া ক্ষত সারিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দিঘা-সহ পূর্ব মেদিনীপুর। এর মাঝেই আবার ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা। বৃহস্পতিবার দিঘা এবং সমুদ্র তীরবর্তী গ্রামগুলিতে প্রচার চালানো হয় প্রশাসনের তরফে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে। তার ফলে শুক্রবার বিকাল থেকে সোমবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ওই সময় পর্যন্ত দিঘা এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।’’
সেইসঙ্গে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া সমস্ত ট্রলার, বোট এবং নৌকাগুলিকেও সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। ওই সব মৎস্যজীবীদের তীরে ফিরতে বলা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে চাষের যাতে ক্ষতি না হয় সেই কারণে রবি শস্য দ্রুত তুলে নেওয়ার জন্যও প্রচার চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া পানের বরজ এবং সব্জি চাষের জমিতে যাতে জল না জমে সে জন্য কৃষকদের আগাম সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে। আমপান এবং ইয়াসের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জেলার প্রতিটি ব্লক এবং পুরসভাগুলিতে মোটরচালিত করাত, দড়ি, গামবুট, হেলমেট, টর্চ ইত্যাদি সামগ্রী আগে থেকেই বিলি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সতর্কবার্তা জারি হয়েছে সুন্দরবন এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতেও। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন এবং মৎস্য দফতরের তরফে বন্দর এলাকাগুলিতে প্রচার চলছে। বিপর্যয়ের আশঙ্কায় নামখানা এবং কাকদ্বীপে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র একটি করে দল মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে পাথরপ্রতিমা এবং সাগরে। সরকারি নির্দেশিকা পেতেই বৃহস্পতিবার থেকে মৎস্যজীবীদের নৌকা এবং ট্রলারগুলি ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে। উপকূল এবং নদী তীরবর্তী নিচু এলাকা থেকে প্রাথমিক ভাবে ১১ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও।
নিম্নচাপের আশঙ্কায় জমি থেকে সমস্ত ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি দফতর। পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখনও পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ ধান মাঠে রয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর। যে সব জমিতে কৃষকরা এখনও পর্যন্ত আলু বীজ রোপণের কাজ শুরু করেনি তাঁদের এখনই আলু চাষ শুরু করতে নিষেধ করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও ব্লক স্তরে শুরু হয়েছে মাইকে প্রচার। অবিলম্বে ধান কেটে তোলার পরামর্শ দিয়েছে জেলা কৃষি দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আপাতত দু’টি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের দল আসছে। এর মধ্যে একটি দল থাকবে ঘাটাল মহকুমায়, অন্যটি খড়গপুর মহকুমায়।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন অঞ্চলে একটি নিম্নচাপ বলয় তৈরি হয়েছিল। এখন তা নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। শুক্রবার আরও শক্তি বাড়িয়ে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy