নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের মামলায় বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু হয়েছে তিন মাস আগে। কিন্তু সে কথা জানেন না মামলার তদন্তকারী আধিকারিক। জানত না আদালতও! বিচারপ্রক্রিয়ার শুনানির দিনে আসামির মৃত্যুর খবর তাঁর আইনজীবীর মুখে শুনে কার্যত হতবাক রানাঘাট মহকুমা আদালতের বিচারক সৌমেন গুপ্ত। বন্দিমৃত্যুর খবর কেন আদালতে জানানো হয়, তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে দমদম সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব তলব করেন বিচারক। জেল সুপারকে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২১ সালে হাঁসখালি থানা এলাকার এক নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল মূল অভিযুক্ত ধলুচাঁদ মণ্ডলকে। এত দিন রানাঘাট পকসো আদালতে মামলা চলছিল। কিন্তু অভিযুক্ত অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য তাকে রানাঘাট উপসংশোধনাগার থেকে দমদম সংশোধনাগারে স্থানান্তরিত করা হয়। বিচারাধীন অবস্থায় সেখানেই ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি মামলার শুনানির দিন ছিল। কিন্তু ওই দিন তদন্তকারী আধিকারিক আদালতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। ফলে শুনানির দিন পিছিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি করা হয়। নির্দিষ্ট সময় আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হন তদন্তকারী আধিকারিক। কিন্তু শুনানি শুরু হতেই অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী সুমন রায় বিচারককে জানান,ধলুচাঁদ মারা গিয়েছেন। যা শুনে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন বিচারক।
পরে সুমন বলেন, ‘‘বিচারাধীন বন্দির প্রায় তিন মাস আগে মৃত্যু হয়েছে। আমরা বিষয়টি আদালতের কাছে তুলে ধরেছি। বিচারক বিষয়টি শুনে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। কারণ অভিযুক্তের মৃত্যুর খবর আদালতে পৌঁছয়নি। কেন সে খবর আসেনি, সে বিষয়ে বিচারক সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন। অভিযুক্তের মৃত্যুতে বিচারপ্রক্রিয়াও শেষ। কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্যই অভিযুক্তের অকালমৃত্যু হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুদ্ধ আদালত সমন জারি করেছে।’’
সরকারি আইনজীবী রাজশ্রী বেহুরা বলেন, ‘‘বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু হলে আদালতকে তা জানানো সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাই বিচারক অভিযুক্তের মৃত্যু কবে ও কী ভাবে হল-তা জানতে চেয়েছেন। ৫ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন।’’