বন্ধ করে রাখা হয়েছে এটিএম। নিজস্ব চিত্র।
এটিএম থেকে টাকা তোলার জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েছে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতেই রাজ্যের বিভিন্ন এটিএমগুলিতে হাজির হয়েছেন গ্রাহকেরা। কিন্তু দুর্ভোগের শেষ নেই তাঁদের। অভিযোগ, এটিএমে গিয়েও টাকা পাচ্ছেন না তাঁরা। শুধু এ রাজ্য নয়, গোটা দেশে একই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা।
ব্যাঙ্কে টাকা বদলানোর মতো এ দিন বিভিন্ন এটিএমগুলিতে লম্বা লাইন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল ১১ নভেম্বর থেকে সব এটিএম খোলা থাকবে। গ্রাহকেরা নির্বিঘ্নে সেখান থেকে টাকা তুলতে পারেন। কিন্তু কোথায় পরিষেবা? বেশির ভাগ এটিএমই বন্ধ। যেগুলো খোলা আছে, অভিযোগ, সেগুলোতেও টাকা আসেনি। ফলে ত্রাহি ত্রাহি রব চার দিকে।
নরেন্দ্র মোদী সরকার ৮ নভেন্বর রাতে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন। পর দিন ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় কোনও লেনদেন হয়নি। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্ক খুলতেই বাতিল হওয়া নোট বদলাতে ব্যাঙ্কে হাজির হন হাজার হাজার মানুষ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাঙ্কগুলিতে একই ছবি ধরা পড়েছে। দু’দিন বন্ধ থাকার পর এ দিন এটিএম খোলায় অনেক আশা নিয়ে এটিএমগুলিতে হাজির হয়েছেন গ্রাহকেরা। কিন্তু সময় মতো এটিএমগুলিতে টাকা না আসায় চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। এটিএমগুলিতে টাকা না থাকায় কলকাতার কোথাও কোথাও বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকরা।
ডালহৌসি স্কোয়ারে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
এক গ্রাহক যেমন এ দিন ভোর হতেই এটিএমে হাজির হয়েছেন টাকা তোলার জন্য। কিন্তু নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন। এ রকম পরিস্থিতির শিকার আরও অনেকেই হচ্ছেন।
রাজ্যের সর্বত্র পরিস্থিতি একই রকমের। কোথাও এটিএম খোলা তো টাকা নেই, কোথাও আবার এটিএম খোলেইনি। ফলে টাকা তুলতে গিয়ে অনেকেই ফিরে আসছেন। কেউ কেউ আবার বাধ্য হয়ে সেই ব্যাঙ্কমুখো হচ্ছেন। কিন্তু এমনিতেই টাকা বদলানোর ভিড় রয়েছে ব্যাঙ্কগুলিতে, তার উপর এটিএমগুলোর এ রকম বেহাল পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের অবস্থা তথৈবচ। শহরের এটিএমগুলো তো আছেই, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি মফস্সল ও গ্রামাঞ্চলগুলোর। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে এটিএমগুলোর সামনে উপচে পড়েছে ভিড়। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েও ‘লক্ষ্মী’ নিয়ে ঘরে ফিরতে পারছে না মানুষ। উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতিও এক।
সব মিলিয়ে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে টাকা তুলতে গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এ যেন গোদের উপর বিষ ফোড়ার মতো। এক দিকে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকা বদলাতে গিয়ে ব্যাঙ্কগুলোতে দিনভর ধর্না গিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। অন্য দিকে, এ দিন এটিএম খুলতেই টাকা না পেয়ে আরও সমস্যায় গ্রাহকেরা।
কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছিল এটিএম থেকে ২০০০ টাকার বেশি তোলা যাবে না এক একটি কার্ডে। গ্রাহকদের প্রশ্ন, টাকাই যদি না থাকে তা হলে তুলবেন কী করে? সমস্যা আরও একটা জায়গায়, কোনও কোনও গ্রাহক একাধিক কার্ড ব্যবহার করে টাকা তোলার ফলে দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে এটিএমের ক্যাশ। মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু সর্বত্রই একই ছবি। ভোগান্তির শিকার গ্রাহকেরা।
আজ থেকে খোলার কথা থাকলেও খোলেনি এটিএম। ছবি: সুরবেক বিশ্বাস।
সরকারের দাবি, বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকেই সমস্ত এটিএমগুলিতে টাকা পৌঁছে গিয়েছে। এ দিন সকাল থেকেই এটিএমগুলির পরিষেবা স্বাভাবিক থাকার কথা, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে।
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy