হাবড়ার মসলন্দপুরে ফিরল সিকিমে বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত ডাক্তার বিভাসকান্তি পাঠক এবং তাঁর পরিজনদের দেহ। বুধবার। ছবি: সুজিত দুয়ারি
সকাল থেকেই একটা সংবাদপত্র খুঁজছেন তুষারকান্তি পাঠক। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের নার্স থেকে শুরু করে রোগীদের পরিজন এমনকি স্বাস্থ্যকর্মী, যাকেই দেখছেন তাঁকেই বলছেন, ‘‘আজকের পেপারটা একটু দেবেন।’’ বুঝতে পেরেছেন, সোমবার রাতে পশ্চিম সিকিমের দুর্ঘটনায় বাড়ির বাকিদের বড় কোনও বিপদই হয়েছে, যা তাঁকে বলা হচ্ছে না। মোবাইল ফোনটা হারিয়েছেন। তাই খবরের কাগজ থেকে সেই সংবাদ পাবেন এই আশায় বারবার যাঁকে সামনে পাচ্ছেন, তাঁকেই ধরেছেন। কিন্তু কেউই মুখ ফুটে তাঁকে বলতে চাননি, তাঁর স্ত্রী লিলি ওই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। মোট পাঁচ জন মারা গিয়েছেন ওই ঘটনায়। তাঁদের দেহ নিয়ে বাকি পরিজনেরা কলকাতা রওনা হয়ে যান মঙ্গলবার রাতেই। তুষারবাবু ও তাঁর এক আত্মীয় শিলিগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সকাল দশটা নাগাদ শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে তাঁরা সরকারি অতিথি আবাস মৈনাকে যান। তার পর বাগডোগরা থেকে ১২টা ৪০ মিনিটের উড়ানে কলকাতা ফিরে গিয়েছেন।
তুষারবাবুদের পারিবারিক বন্ধু অশোক মিত্র বলেন, ‘‘দাদার শরীর খারাপ, মানসিক অবস্থার কথা ভেবেই বৌদির কথা এখনও জানতে দেওয়া হয়নি।’’
তবে এখনই ওই গাড়ির চালক অসীম রাইয়ের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তাঁরা জানাচ্ছেন না বলে অশোকবাবু জানিয়েছেন। অসীমবাবুও চিকিৎসাধীন। পশ্চিম সিকিমের পুলিশ সুপার তেনজিং লোডে লেপচা জানান, মঙ্গলবার চালকের বয়ান রেকর্ড করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘চালক জানিয়েছেন একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়েই নীচে পড়ে যান। তবে কথাবার্তা অসংলগ্ন। মনে হচ্ছে চালক এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। ওই সময়ে দৃশ্যমানতা কতটা ছিল, সেটাও দেখা হচ্ছে। তিনি সুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো আমরা ফের একবার তাঁর বয়ান রেকর্ড করব।’’
দার্জিলিঙের ডারাগাঁওয়ের বাসিন্দা অসীম সম্প্রতি সিকিমে গিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়ির মালিক উদয় কুমার প্রধান সিকিমের আড়িটাড়ের রেনকের বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, তিনিও ঘটনার পরে ফেরার। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতরের তরফে সিকিমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
কিন্তু দুর্ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও খাদে পড়ে যাওয়া গাড়িটি তুলতে পারেনি সিকিম পুলিশ। তাই গাড়িটির পরীক্ষাও এখনও করা যায়নি। গেজিংয়ের আরটিও সোনম ওয়াংচেন বলেন, ‘‘আমরা তদন্তে কোনও খামতি রাখছি না। শনিবারের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। গাড়িটি ফগ লাইট জ্বালানো ছিল কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy