কোভিড পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে রাজ্যেও শিশু ও অন্তঃসত্ত্বাদের রুটিন টিকাকরণ এক মাসের উপর বন্ধ। এই কর্মসূচি আর বেশি দিন বন্ধ থাকলে শিশু ও প্রসূতির স্বাস্থ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বুঝে তা আবার শুরু করার মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু ১০৩৫৭টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রায় ২০ হাজার এএনএম (অক্সিলিয়ারি নার্স মিডওয়াইফ)-এর বক্তব্য, উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই তাঁদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। গত কাল, বুধবার থেকে টিকাকরণ শুরু করার কথা থাকলেও মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা-২, উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া-১, জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি-সহ কিছু ব্লকে টিকা দেননি এএনএম-রা। তাঁদের প্রতিবাদের জেরে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকে টিকাকরণ স্থগিত রাখা হয়। বিক্ষোভ দেখালেও শেষ পর্যন্ত এএনএম-রা টিকা দিয়েছেন বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকে। সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়ার পরে টিকাকরণ হয়েছে মালদহের কালিয়াচক এবং হরিশচন্দ্রপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকে।
দায়িত্ব এড়াতে চাইছেন-না জানিয়েই এএনএম-দের বক্তব্য, তাঁদের ন্যূনতম পরিকাঠামো বা নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না। গত রবিবার রাজ্যের সেকেন্ড এএনএম-দের সংগঠন ‘ইউনাউটেড অক্সিলিয়ারি নার্সেস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে রাজ্য প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানানো হয়। সংগঠনের উপদেষ্টা স্বপ্না ঘোষের কথায়, ‘‘পিপিই-র আশা আমরা করি না। কিন্তু অন্তত থ্রি লেয়ার সার্জিক্যাল মাস্ক বা ফেস শিল্ড, গ্লাভস, অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হোক।’’
এএনএম-দের বক্তব্য, হাতেগোনা কিছু জায়গায় কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্তার ব্যক্তিগত চেষ্টায় এএনএম-রা সুরক্ষা সামগ্রী পেয়েছেন। বাকিরা অথৈ জলে। অথচ, জেলায়-জেলায় স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা টিকাকরণ কর্মসূচি চালু করতে চাপ দিচ্ছেন বলে তাঁদের অভিযোগ।
রাজ্যের পরিবার কল্যাণ অফিসার অসীম দাস মালাকারের বক্তব্য, ‘‘মাস্ক, গ্লাভস, জীবাণুনাশকের মতো বিষয় স্বাস্থ্য দফতরের কোভিড টিম দেখবে। তা ছাড়া, ওঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তো উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এক ঘণ্টায় মাত্র ৪-৫ জনের টিকাকরণের নিয়ম করা হয়েছে।’’