পঞ্চায়েত ভোটে উত্তর দিনাজপুর জেলায় একচ্ছত্র দাপট দেখিয়েছে তৃণমূল। আবার সাংগঠনিক ভাবে দ্রুত শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে বিজেপির। লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জে এইম্স-এর ধাঁচে হাসপাতালের প্রতিশ্রুতি ফিরিয়েই লড়াইয়ে থাকতে চাইছে কংগ্রেস।
ইউপিএ আমলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকার সময়ে রায়গঞ্জে এইম্স নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। গত লোকসভা ভোটে এক দিকে যেমন রায়গঞ্জ আসন কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে, তেমনই আবার কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকার কল্যাণীতে এইম্স গড়তে তৎপর হয়েছে। জমি দেখা হলেও কল্যাণীতে হাসপাতালের কাজ অবশ্য এখনও এগোয়নি। এই পরিস্থিতিতে ‘উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বার্থে’র কথা বলে রায়গঞ্জেই এইম্স করার ভাবনা ফের সামনে নিয়ে আসছে কংগ্রেস। দলের সর্বভারতীয় ইস্তাহার কমিটির চেয়ারম্যান, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম এই মর্মে প্রস্তাব পেয়েছেন বাংলার নেতাদের কাছ থেকে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এআইসিসি-র নেতা এবং আর এক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুলাম নবি আজাদও ওই দাবির কথা ইস্তাহার কমিটিকে জানিয়েছেন।
সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন রায়গঞ্জে ওই হাসপাতালের দাবি নিয়ে দিল্লিতে দরবার করেছিলেন প্রিয়-জায়া দীপা দাশমুন্সি। অধুনা প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি হিসাবে হাওড়া হুগলি এবং দুই ২৪ পরগনার সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকলেও এইম্স-প্রশ্নে সক্রিয় হয়েছেন দীপা। তাঁর কথায়, ‘‘ওই প্রকল্পের সঙ্গে শুধু প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির নামই জড়িয়ে নেই, উত্তরবঙ্গের মানুষের স্বার্থ এর সঙ্গে জড়িত। ইস্তাহার কমিটিকে তাই প্রস্তাব দিয়েছি, কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরলে কংগ্রেস রায়গঞ্জে এইম্স গড়তে ফের উদ্যোগী হবে, এই ঘোষণা লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে রাখা হোক। বিষয়টি ঘোষণায় রাখা হবে বলেই প্রাথমিক আশ্বাস মিলেছে।’’
লোকসভা নির্বাচনে ইস্তাহার তৈরির আগে জনমত নিতে সদ্যই কলকাতায় এসেছিলেন চিদম্বরম। তখন তাঁর সামনে রায়গঞ্জে এইম্সের দাবির কথা তুলেছিলেন কংগ্রেসের যুব নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রিয়দা’র হাত ধরে কত লোক রাজনীতিতে এসেছেন। অথচ মৃত্যুর পরে সেই মানুষটার স্বপ্নের কথা আমরা ভুলেই যাচ্ছি! সেটা যাতে না হয়, তা দলকেই দেখতে হবে।’’ প্রিয়রঞ্জন দীর্ঘ দিন রোগশয্যায় থাকার সময়ে তাঁর আরোগ্য কামনা করে শহরে হোর্ডিং লাগাতেন কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক। তিনিই এখন প্রদেশ কংগ্রেসের ইস্তাহার কমিটির আহ্বায়ক। তাঁরও বক্তব্য, ‘‘আমরাও চাই, উত্তরবঙ্গের জন্য রায়গঞ্জে ওই কেন্দ্রীয় হাসপাতাল হোক। রাজ্যে আমাদের প্রচার পুস্তিকাকেও বিষয়টা রাখব।’’
রায়গঞ্জের বর্তমান সাংসদ, সিপিএমের মহম্মদ সেলিম লোকসভায় এইম্স-প্রশ্নে সরব হয়েছিলেন। তিনি বলছেন, ‘‘ওই অঞ্চলে স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হলে উত্তরবঙ্গ এবং বিহারের বহু মানুষের উপকার হয়। অথচ রাজ্যের তৃণমূল সরকার কল্যাণীর কথা বলতেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সেটা লুফে নিয়েছে! উত্তরবঙ্গে সম্প্রতি বিজেপির সাংগঠনিক কাজে এসেও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি না়ড্ডা এইম্স নিয়ে উচ্চবাচ্য করেননি।’’ তবে সাংসদের দাবি মেনে শেষ পর্যন্ত রায়গঞ্জে জেলা হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজে রূপান্তর করতে সম্মত হয়েছে মেডিক্যাল কাউন্সিল ও রাজ্য সরকার। আর রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, উত্তরবঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদাসচেষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy