পথে: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেস যৌথ মিছিল শহরে। —নিজস্ব চিত্র।
নানা রঙের পতাকা। নানা ধরনের দল ও সংগঠন। রকমারি মানুষ। কিন্তু লক্ষ্য ও গন্তব্য একই।
বিরোধী শিবিরের অন্য রকম মিছিলের ছবি শুক্রবার দেখল কলকাতা। কংগ্রেস এসে পা মেলানোয় বাম ও সহযোগী দলগুলির মিছিলের চেনা ছবি বদলে গেল রাজপথে। চলতি মাসেই বাবরি ধ্বংসের বর্ষপূর্তির দিনে, ৬ ডিসেম্বর সাম্প্রদায়িকতার প্রতিবাদে বড় মিছিল হয়েছিল বামেদের। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জির (এনপিআর) বিরোধিতায় গত ১৯ ডিসেম্বর পৃথক ভাবে পথে নেমেছিল বাম ও কংগ্রেস। অতীতের সে সব মিছিলকেই মেজাজে ও কলেবরে ছাপিয়ে গেল এ দিনের ‘মহামিছিল’। বাম ও কংগ্রেস নেতাদের নিয়ে মিছিলের মাথা যখন এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে ধর্মতলায় গিয়ে ডান দিকে ভিক্টোরিয়া হাউসের দিকে মোড় নিচ্ছে, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে তখনও মিছিলের শেষে লোক জুড়ছে।
বাম ও সহযোগী ১৭টি দল এবং প্রদেশ কংগ্রেস মিলিত ভাবে এ দিনের মিছিলের ডাক দিয়েছিল। যোগেন্দ্র যাদবের সংগঠন ‘স্বরাজ অভিযান’ এবং ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়াও যোগ দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত মিছিল হয় ২০ দলের। বাম ও কংগ্রেস নেতারা এক বাক্যে এ দিনের মিছিলকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বাংলায় তৃণমূল ও বিজেপির বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই পথেই এগোনোর ডাক দিয়েছেন। বিভাজনের নীতি ও বেহাল অর্থনীতির প্রতিবাদে আগামী ৮ জানুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটে দেশ স্তব্ধ করে দিয়ে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের জবাব দেওয়ার জন্য জনতার কাছে আহ্বানও জানিয়েছেন।
সংবিধানের প্রচ্ছদের প্রমাণ মাপের কাট-আউট নিয়ে মিছিলে শামিল প্রতিবাদীরা। —নিজস্ব চিত্র।
বাম বা কংগ্রেসের আর পাঁচটা মিছিলের সঙ্গে এ বারের তফাত ছিল চোখে পড়ার মতোই। সংবিধানের প্রচ্ছদের প্রমাণ মাপের কাট-আউট বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েক জন যুবক। ছাত্রেরা নেমেছেন ‘আজাদি’র স্লোগান নিয়ে। যুবদের দল হাঁটছে ‘হল্লা বোল’ বলতে বলতে। আবার কোথাও মুসলিম মহিলারা দল বেঁধে নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি এবং এনপিআর-এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন। এমনই নানা টুকরো প্রতিবাদ চলমান ছিল মিছিলের মধ্যে। ছোট ছোট দলে মিছিলের পথে যোগ দিয়েছেন আরও অনেকে।
বাম-কংগ্রেসের মিছিলে যোগ দিয়েছেন অনেকে। —নিজস্ব চিত্র।
সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মহাজাতি সদন পর্যন্ত এই মিছিলে বাম নেতা বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, নরেন চট্টোপাধ্যায়, মনোজ ভট্টাচার্য, পার্থ ঘোষ, সমীর পূততুণ্ডদের পাশাপাশি পা মিলিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সোমেন মিত্র, প্রদীপ ভট্টাচার্য, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, শুভঙ্কর সরকারেরা। বিধানসভায় এলেও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে অবশ্য মিছিলে দেখা যায়নি। মিছিল শেষে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে এই পথ হেঁটে এলাম, সেই ভাবেই ধর্মঘট সফল করার জন্য কংগ্রেস-সহ ২০ দলকে নিয়ে এলাকায় এলাকায় স্ট্রাইক কমিটি গড়ে তুলতে হবে। অনেক মানুষ, যাঁরা এখনও অন্য দিকে আছেন, তাঁদেরও টেনে আনতে হবে।’’ দীর্ঘস্থায়ী লড়াইয়ের লক্ষ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুর আহ্বান, বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে সব দল ও সংগঠনকে এক জায়গায় আনার জন্য জেলা ও আরও নিচু স্তরেও সক্রিয় হতে হবে। পিডিএসের সমীরবাবুর কথায়, ‘‘এই ঐতিহাসিক মিছিল নতুন পথের সূচনা করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy