Advertisement
E-Paper

বিএড কলেজের মালিক এবং অধ্যক্ষও চান প্রাথমিক শিক্ষক হতে! কোন চাকরির ‘রেট’ কত? আঙুল পার্থ-মানিকদের দিকেই

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, প্রাথমিক নিয়োগ থেকে বিএড কলেজে রেজিস্ট্রেশন এবং এনওসি, কোথায় কত টাকা নেওয়া হবে তার একটি অলিখিত তালিকা ছিল।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

সারমিন বেগম

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১১:০৩
Share
Save

টাকা, টাকা আর টাকা! বিএড কলেজে রেজিস্ট্রেশন থেকে এনওসি, শিক্ষকতার প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি থেকে চাকরি— প্রাথমিক নিয়োগের সর্বত্রই ছিল টাকার খেলা৷ সেই লেনদেনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষের মতো রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিবিড় যোগ ছিল বিভাস অধিকারী, তাপস মণ্ডল, পলাশ মণ্ডলদের মতো ছোট-বড় এজেন্টের। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে এক সাক্ষীর বয়ান দেখিয়ে এমনটাই দাবি করেছে সিবিআই। চার পাতার ওই বয়ানের প্রতিলিপি আনন্দবাজার ডট কমের কাছে রয়েছে।

সিবিআইয়ের দাবি, প্রাথমিক নিয়োগ থেকে বিএড কলেজে রেজিস্ট্রেশন এবং এনওসি, কোথায় কত টাকা নেওয়া হবে তার একটি ‘অলিখিত তালিকা’ ছিল। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট আদালতে পেশ করেছে সিবিআই। তার সঙ্গে কিছু ‘প্রামাণ্য নথি’ দিয়েছে তারা। সেখানেই রয়েছে মহিদুল হক আনসারি নামে এক সাক্ষীর বয়ান। তিনি ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সিবিআইয়ের কাছে সাক্ষী হিসেবে ওই বয়ানটি দিয়েছিলেন। কী ভাবে ‘প্রভাবশালী’দের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, সেটি ওই বয়ানের সূত্রেই চার্জশিটে দাবি করেছে সিবিআই।

মহিদুল আদতে মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। তাঁর বর্তমান ঠিকানা কলকাতা। একাধিক বিএড কলেজের মালিকানা রয়েছে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে। বিএড এবং ডিএলএড কলেজের মালিক এবং টেট প্রার্থী হিসাবে নিয়োগ দুর্নীতিতে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন মহিদুল।

মহিদুলের দুই ভাই। ছোট ভাই পিএইচডি করে চাকরি পাননি। তাই মহিদুল বিএড কলেজে শিক্ষকতা করেন। মহিদুল নিজে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। এমবিএ পড়া শুরু করলেও শেষ করেননি। ২০১৪ সালে তিনি এবং তাঁর ভ্রাতৃবধূ টেট দিয়েছিলেন। তবে পাশ করতে পারেননি।

ওই ‘প্রামাণ্য নথি’ সূত্রেই সিবিআইয়ের দাবি, তাদের মহিদুল জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে বীরভূমে একটি বিএড কলেজ তৈরি করেন তাঁর বাবা এবং বাবার কয়েক জন বন্ধু। ২০০৯ সালে ওই বিএড কলেজটি চালু হলে তিনি এবং তাঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্য প্রতিষ্ঠানের অংশীদারি নেন। ২০১৩ সালে বর্ধমানে আরও একটি বিএড কলেজ খোলেন তাঁরা। ২০১৫ সাল থেকে সেখানে ডিএলএড কোর্সও করানো হত। সেই সূত্রেই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তলের সঙ্গে তাঁর আলাপ ও পরিচয়।

টেটে বসলেই চাকরি

সিবিআইয়ের জমা-দেওয়া নথি অনুযায়ী মহিদুলের দাবি, ২০১৭ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে আলাপ কুন্তলের। বিএড কলেজগুলির মালিকদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কুন্তল। মহিদুল জানতেন কুন্তল ‘রাজনৈতিক প্রভাবশালী’। তাই সুখেন রানা নামে এক বন্ধুকে নিয়ে তিনি কুন্তলের সঙ্গে আলাপ করেন। প্রসঙ্গত, সুখেনও একটি বিএড কলেজের মালিক। মহিদুল সিবিআইকে জানিয়েছেন, কুন্তল তাঁর কাছে জানতে চান, তিনি ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন কি না। মহিদুল জানান, তিনি এবং তাঁর পরিবারের এক সদস্যা (ভ্রাতৃবধূ) পরীক্ষায় বসেছিলেন। কিন্তু পাশ করতে পারেননি। শুনে কুন্তল বলেছিলেন, তিনি তাঁদের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি ‘জোগাড়’ করে দিতে পারেন। মহিদুলের দাবি, কুন্তল জানিয়েছিলেন, টেটে ছ’টি ভুল প্রশ্ন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। সেই সূত্র ধরে তিনি চাকরির বন্দোবস্ত করে দেবেন। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটে ছ’টি প্রশ্ন ভুল ছিল বলে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় হাই কোর্ট জানায়, সব পরীক্ষার্থীকে ৬ নম্বর করে দিতে হবে।

বিএড কলেজের মালিক চান প্রাথমিক শিক্ষক হতে!

মহিদুল জানান, ২০১৭ সালের নভেম্বরে তাঁকে অ্যাডমিট কার্ড এবং অন্য নথিপত্র নিয়ে কলকাতায় যেতে বলেছিলেন কুন্তল। কথামতো হাই কোর্টে যান মহিদুল। মামলার শুনানির সময় এক আইনজীবী তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড, পরিচয়পত্র ইত্যাদি আদালতের সামনে তুলে ধরেন। তার পরে তাঁদের কাছে এক লক্ষ করে টাকা চান কুন্তল। বয়ানে মহিদুলের দাবি, মোট পাঁচ জন চাকরিপ্রার্থীর জন্য তিনি পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন কুন্তলকে। কিন্তু চাকরি হয়নি। বছর দুয়েক গড়িয়ে যাওয়ার পর কুন্তলকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেন মহিদুল। কুন্তল তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, চাকরি হবেই। কারণ, তত দিনে টেট সংক্রান্ত একটি মামলা সুপ্রিম কোর্ট উঠেছে। তবে পাঁচ জনের চাকরি হবে না। কুন্তল মহিদুলকে জানান, তিনি মহিদুল এবং তাঁদের বিএড কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ নন্দীর চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। মহিদুলের অভিযোগ, তখন তাঁদের কাছে আবার ২ লক্ষ করে টাকা দাবি করেন কুন্তল।

উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি পেতে ৫ লক্ষ টাকা

মধ্যবর্তী সময়ে মহিদুলের চার বন্ধু এবং এক ভাই উচ্চ প্রাথমিক পরীক্ষায় পাশ করে গেলেও ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পাননি। তখনও আশ্বাস নিয়ে হাজির হন সেই কুন্তল। সাক্ষী মহিদুলের বয়ান পেশ করে সিবিআই জানিয়েছে, মহিদুল দাবি করেছেন, কুন্তল পাঁচ জনকে উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেবেন বলে মোট ২৫ লক্ষ টাকা চান। তার কিছু দিনের মধ্যে পাঁচ জনই ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পান। প্যানেলে নামও ওঠে তাঁদের। ফলে কুন্তলের উপর বিশ্বাস জন্মায় মহিদুলের। তিনি নগদ ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে হাজির হন কুন্তলের ‘উজ্জ্বলা অ্যাপার্টমেন্ট’-এ। কিন্তু টাকা দেওয়ার পর ২০২০ সালে হাই কোর্টের নির্দেশে উচ্চ প্রাথমিকের ওই প্যানেলও বাতিল হয়ে যায়।

কুন্তলের কাকু

প্যানেল বাতিল হওয়ায় কুন্তলের কাছে ২৫ লক্ষ টাকা ফেরত চান মহিদুল। ধীরে ধীরে ২৪ লক্ষ টাকা ফেরতও পেয়ে যান। সিবিআইয়ের জমা দেওয়া বয়ানে মহিদুলের দাবি, তখনই কুন্তল তাঁকে জানান, তিনি কালীঘাটের বাসিন্দা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের (‘কালীঘাটের কাকু’) মাধ্যমে সমস্ত চাকরির বন্দোবস্ত করেন। মহিদুল বয়ানে জানিয়েছেন, কুন্তলও সুজয়কৃষ্ণকে ‘কাকু’ বলেই সম্বোধন করতেন।

সিবিআইয়ের সাক্ষী মহিদুল

সিবিআইয়ের তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিটের সঙ্গে দেওয়া মহিদুলের বয়ান অনুযায়ী, ‘অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি তাপস মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় বিএড কলেজের সূত্রে। মহিদুল জানিয়েছেন, বিএড পড়ুয়াদের অফলাইনে নাম নথিভুক্ত করার জন্য টাকা দিতে হত। প্রত্যেকটি বিএড কলেজের প্রত্যেক পড়ুয়াকে অফলাইন রেজিস্ট্রেশনের জন্য ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০ হাজার, তার পর কমিয়ে ৫ হাজার করে টাকা করে দিতে হত। ওই সময়ে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন হত। তবে তা অল্প সময়ের জন্য। মোটামুটি ১০ দিন কাজ করার কথা ছিল অনলাইন পোর্টালটির। কিন্তু সেটি বেশির ভাগ সময়েই কাজ করত না। তাই অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করাতে গেলে দিন দুয়েক পাওয়া যেত। ওই অল্প সময়ের মধ্যে ২০-৩০ জনের বেশি নাম নথিভুক্ত করতে পারতেন না। সাক্ষী মহিদুল সিবিআইকে এ-ও জানিয়েছেন যে, তাঁর বিএড এবং ডিএলএড কলেজে ১০০ জন পড়ুয়া ছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগই অফলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। সকলকেই ৫ হাজার করে টাকা দিতে হয়েছে। সাক্ষ্যে মহিদুলের দাবি, অনলাইন পোর্টালে ওই গোলযোগ ‘ইচ্ছাকৃত’ ভাবে করা হত এবং সেটি করাতেন তৎকালীন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য।

টাকা তোলা নিয়ে তাপস-বিভাসের সংঘাত

সিবিআইকে দেওয়া মহিদুলের বয়ান অনুযায়ী চাকরিপ্রার্থী থেকে ডিএলএড পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা তোলার ‘তাগিদ’ তৈরি হয়েছিল মানিকের জন্য। তাঁর জন্যই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিলেন তাপস মণ্ডল এবং বিভাস অধিকারী। প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তাপসকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ৫৯৫ দিন জেলবন্দি থাকার পর জামিন পান তিনি। সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল এই মর্মে যে, তাপস নিজের সংস্থাকে ব্যবহার করে মানিক-সহ বাকি অভিযুক্তদের নির্দেশে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন। নিজের পরিবারের বেশ কয়েক জনকে ‘অসাধু’ উপায়ে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন।

বিভাসের বাড়ি বীরভূমে। এক সময়ে তাঁর বাড়ি, আশ্রম এবং কলকাতার ফ্ল্যাটে একযোগে তল্লাশি করেছিল সিবিআই। বিভাস ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তবে সিবিআই হানার পরে দাবি করেছিলেন যে তাঁর সঙ্গে অনেক আগেই তৃণমূলের সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছে। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছিলেন বলেও দাবি করে বিভাস। তিনি ‘আর্য ভারত’ নামে একটি নতুন দল তৈরি করেন এবং দাবি করেন, সেটি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন পেয়েছে। সিবিআইয়ের সাক্ষী মহিদুলের দাবি, দুর্নীতিকাণ্ডে তাপস এবং বিভাস পৃথক ভাবে কাজ করতেন। দু’জনের লোকবল আলাদা। দু’জনেই অফলাইনে প্রার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের উপর জোর দিতেন। দুই তরফ থেকেই হুমকি পেতেন বিএড, ডিএলএড কলেজের মালিকেরা।

মানিকের ‘কাছের লোক’ তাপস

রেজিস্ট্রেশনের জন্য তিনি তাপসকে ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলে সিবিআইকে জানিয়েছেন সাক্ষী মহিদুল। নিজের বয়ানে তিনি জানিয়েছেন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিকের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ’ যোগাযোগ ছিল তাপসের। তাঁদের প্রচুর এজেন্ট বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিল। প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে প্রচুর নগদ টাকা তুলেছিলেন তাঁরা। আবার বিভাসও মানিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ এবং ওই অবৈধ নিয়োগপ্রক্রিয়ার অন্যতম ছিলেন। সিবিআইয়ের কাছে মহিদুলের দাবি, অফলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টাকা তোলার পরিকল্পনা ছিল বিভাসের। তাতে সিলমোহর দেন মানিক। প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ‘টোপ’ দিয়ে টাকা তোলার নেপথ্যেও ছিলেন বিভাস।

সিবিআইয়ের কাছে মহিদুলের বয়ান অনুযায়ী, দুর্নীতিতে তাপস ও বিভাসের ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ ছিল। তবে দু’জনেই ছিলেন মানিকের কাছের লোক। মহিদুলের বয়ান বলছে, বিভাস একাই অন্তত এক হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলেছেন। বিভাসের এক জন প্রধান এজেন্ট ছিলেন। তাঁর নাম পলাশ মণ্ডল। তিনি আবার বিভিন্ন জনের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলতেন। মহিদুলের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির নগদ টাকা তোলার পরে লেনদেন হত শিয়ালদহের কাছে ‘পূরবী’ প্রেক্ষাগৃহে। ওই সিনেমাহলে টাকা নিয়ে আসতেv বিভাস এবং পলাশ। তবে সেখানে আরও কারা থাকতেন, তা বিস্তারিত জানাননি মহিদুল।

সিবিআইয়ের সাক্ষী মহিদুল তাঁর বয়ানে দাবি করেছেন, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বিভাস সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এনওসি-র মাধ্যমে বিএড কলেজ থেকে টাকা তোলার বুদ্ধি পার্থকেই দিয়েছিলেন বিভাস। তিনি আরও জানান, বোর্ড অফ এডুকেশনের তত্ত্বাবধানে বিএড কলেজগুলোর রেজিস্ট্রেশন হত। সেই সূত্র ধরে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেছিলেন বিভাস। পার্থের নির্দেশ অনুযায়ী বিভাসের ঠিক করে দেওয়া কলেজগুলি এনওসি পেত। সে জন্য কলেজ মালিকদের দিতে হত ৭ লক্ষ করে টাকা।

সিবিআইয়ের কাছে দেওয়া বয়ানে মহিদুল দাবি করেছেন, প্রাইভেট বিএড এবং ডিএলএড কলেজগুলিতে অনুমোদন দেওয়া হত মোটা টাকার বিনিময়ে। শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তৈরি প্রাইভেট কলেজগুলিকে অনুমোদন পেতে হত গড়ে ২ লক্ষ টাক ব্যয় করে। কলেজের মালিক হিসাবে নিজের অভিজ্ঞতার কথাই সিবিআইকে জানিয়েছেন সাক্ষী মহিদুল। বলেছেন, বিভাস কলেজগুলি থেকে টাকা তুলে পাঠিয়ে দিতেন মানিককে।

একটা সময়ে বিএড কলেজগুলিকে এনওসি প্রদান করত বর্ধমান, কল্যাণীর মতো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। সে জন্য ৭ লক্ষ টাকা করে দিতে হত কলেজগুলিকে। সিবিআইয়ের কাছে দেওয়া বয়ানে মহিদুলের দাবি, তিনি তাঁর কলেজের জন্য দুই কিস্তিতে ৭ লক্ষ করে টাকা দেন বিভাসকে। কিন্তু প্রথম কিস্তিতে ৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরে বিভাসের সঙ্গে তাঁর গোলমাল শুরু হয়। কারণ, বিভাস জানতে পেরে গিয়েছিলেন, রেজিস্ট্রেশনের জন্য মহিদুল তাপসের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। মহিদুল সিবিআিয়ের কাছে দেওয়া বয়ানে দাবি করেছেন, তাঁকে ফোন করে হুমকি দেন বিভাস। এমনকি, এ-ও বলা হয় যে, তাঁর কোনও ‘কাজ’ আর হবে না।

Recruitment Scam SSC Recruitment Teacher Recruitment Scam Case CBI

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}