নরেন্দ্র মোদীর পরে এ বার অমিত শাহ। ‘রক্তমাখা হাত নিয়ে’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ কলকাতায় এলেই তাঁর সফরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হবে বলে জানিয়ে দিল সিপিএম। একই সুরে ‘গো ব্যাক শাহ’ স্লোগান নিয়ে পথে নামতে তৈরি কংগ্রেসও। এমনকি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার শরিক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সামাজিক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ শাহের সফরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কর্মসূচি নিচ্ছে।
কলকাতায় এসে আগামী ১ মার্চ শহিদ মিনার ময়দানে সভা করার কথা শাহের। তার জন্য পুলিশের প্রয়োজনীয় সম্মতি পেয়েছে বিজেপি। আর অন্য দিকে, দিল্লিতে হিংসা ও হত্যালীলার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠেছে। এই প্রেক্ষিতেই সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে গণহত্যার রক্তমাখা হাত নিয়ে অমিত শাহ কলকাতায় পদার্পণ করলে রাজ্য সরকার লাল কার্পেট পেতে স্বাগত জানাবে! কিন্তু তীব্র বিক্ষোভ, প্রতিবাদে সরব হবেন এ রাজ্যের ছাত্র, যুব ও গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষ। জানুয়ারিতে ‘গো ব্যাক মোদী’ স্লোগানে যেমন সারা রাজ্য মুখর হয়েছিল, সে ভাবেই শাহের সফরের প্রতিবাদে এগিয়ে আসতে সব মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি।’’ সেলিম জানিয়েছেন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে স্বতঃস্ফূর্ত ও ছকভাঙা প্রতিবাদে শামিল হবে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) তৈরি করতে তাঁর ভূমিকা এবং দিল্লি হিংসা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রেক্ষিতে শাহের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন বাম শরিক দল, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, কংগ্রেসের যুব ও ছাত্র সংগঠন। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘‘এনপিআর এবং এনআরসি তো দূরের কথা, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাবি করছি, দেশটার খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাওয়া আটকাতে সিএএ বাতিল করুন।’’ পাশাপাশিই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পুরীর মন্দিরে গিয়ে বিশ্বশান্তির কথা শুনলাম। সাম্প্রদায়িক হিংসার আঁচ কি আপনি অনুভব করছেন না? দাবি করছি, যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যর্থতার জন্য দিল্লিতে এই কাণ্ড হল, প্রতিবাদ হিসেবে তাঁর সঙ্গে আপনার বৈঠক বাতিল করুন!’’
নোনাপুকুর থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত মিছিল করে এ দিনই শাহের ইস্তফার দাবিতে তাঁর কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ছাত্র পরিষদ। কলকাতা জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি অর্ঘ্য গণ বলেন, ‘‘রক্তমাখা পা নিয়ে শাহ এখানে এলেই প্রতিবাদে উত্তাল হবে ছাত্র ও যুবরা।’’ এনআরসি, এনপিআর-বিরোধী নানা ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা ব্যক্তিগত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে মেল পাঠিয়ে শাহের সভার অনুমতি বাতিল করার আবেদন জানাবে। তাতে কাজ না হলে ১ তারিখ রাজ্য জুড়ে কালো পতাকা নিয়ে মোদীর সফরের মতোই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হবে বলে জানিয়েছেন ‘নো এনআরসি মুভমেন্ট’-এর ফরিদুল ইসলাম। শাহের সভার জন্য অনুমতি দিলেও আজ, শুক্রবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বামেদের উদ্বাস্তু সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি কেন, প্রশ্ন তুলেছেন সেলিম। জায়গা বদলে ওই সমাবেশ আজ হবে এন্টালির রামলীলা ময়দানে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বিক্ষোভের ডাককে আমল দিতে নারাজ। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বামপন্থীরা পেশাদার বিক্ষোভকারী হয়ে উঠেছে! ছোটবেলা থেকেই বিক্ষোভ দেখে এলাম। বামপন্থীদের আবার ছাত্র সংগঠন, তাদের আবার বিক্ষোভ প্রদর্শন! তাদের এই নেতিবাচক, দেশ-বিরোধী রাজনীতি বাংলার মানুষ মেনে নেবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy