Advertisement
E-Paper

গরমে কি ফের টানা ছুটি পড়বে, ভয়ে কাঁটা শিক্ষকেরা

তবে খাতায়-কলমে আগাম গরমের ছুটি নিয়ে কোনও সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানাচ্ছেন শিক্ষা দফতরের এক সরকারি কর্তা। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী, গরমের ছুটি পড়তে এ বার এখনও ঢের দেরি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ০৯:১৯
Share
Save

চৈত্রের তীব্র দহনে ফের স্কুলগুলিতে নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষকেরা। গরম পড়ার পরে গত কয়েক বছরের রীতি মেনে এ বছরও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের যে কোনও দিন গরমের ছুটি ঘোষণা করে দিতে পারেন বলে শিক্ষকমহলে চর্চা চলছে। বেশির ভাগ শিক্ষকের অভিমত, হঠাৎ গরমের ছুটির বদলে দরকারে সকালে স্কুলের ব্যবস্থা করা হোক। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, গ্রীষ্ম প্রধান রাজ্যে কী ভাবেমাত্র ১১ দিনের গরমের ছুটি দেয়শিক্ষা দফতর?

তবে খাতায়-কলমে আগাম গরমের ছুটি নিয়ে কোনও সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানাচ্ছেন শিক্ষা দফতরের এক সরকারি কর্তা। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী, গরমের ছুটি পড়তে এ বার এখনও ঢের দেরি। নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ী, গরমের ছুটি পড়ার কথা ১২ মে। আর স্কুল খোলার কথা ২৩ মে। অর্থাৎ মাত্র ১১ দিনের গরমের ছুটি দিয়েছে শিক্ষা দফতর। গত বছর ৯ মে থেকে ২০ মে ছিল গরমের ছুটি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দেওয়ায় ২১ এপ্রিলই গরমের ছুটি পড়ে যায়। ২ জুন পর্যন্ত গরমের ছুটি দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ প্রায় দু’মাস ছিল গরমের ছুটি। শিক্ষকদের মত, ১০ দিনের গরমের ছুটি বাড়িয়ে প্রায় দু’মাস করে দেওয়ায় পড়ুয়াদের সারা বছরের পাঠ্যক্রম শেষ করাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই এটা চলছে। নির্ধারিত গরমের ছুটি ১০ দিন বা ১১ দিন। পরিস্থিতির চাপে তা বেড়ে হয় প্রায় দেড় মাস। কেন আগে থেকে পরিকল্পনা করে গরমের ছুটি দেওয়া হয় না? প্রয়োজনে সকালে স্কুল করে দেওয়া হোক।’’

বহু শিক্ষকই ছুটির বদলে সকালে স্কুলের বন্দোবস্ত চাইছেন। তা হলে অন্তত পঠনপাঠন ব্যহত হবে না। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘গ্রীষ্ম প্রধান রাজ্যে নির্ধারিত গরমের ছুটি ১১ দিনের। এটা হাস্যকর। প্রয়োজনে পুজোর এক মাসের ছুটি কমিয়ে গরমের ছুটি বাড়ানো হোক। লক্ষ্মী পুজো থেকে কালীপুজো পর্যন্ত স্কুল তো খোলা রাখাই যেতে পারে। হঠাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী গরমের ছুটি ঘোষণা করে দিন, সেটা আমরা চাই না।’’

শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ দেড় মাস গরমের ছুটি থাকার পরে যখন স্কুল খুলছে তখনপড়ুয়ারা আগে যা শিখেছিল তা ভুলে গেছে। অল্পশিক্ষিত পরিবার বা প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা স্কুল নির্ভর পড়াশোনা করে। ছুটির ছড়াছড়িতে তারা পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘টানা গরম কিন্তু থাকে না। মাঝেমধ্যে বৃষ্টিও হয়। দেড়-দু’মাস টানা ছুটি কাম্য নয়। তাতে পড়াশোনার ক্ষতি।’’ শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরমের ছুটির সময়ে মিড-ডে মিলও বন্ধ থাকে। তাতেও অনেক পড়ুয়ার সমস্যা। মিড-ডে মিলের খরচ কমাতেই কি টানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়?— প্রশ্ন শিক্ষকদের একাংশের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Summer Season Summer Vacation School students

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}