মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
নবান্ন অভিযানের দিন ডিওয়াইএফআইয়ের কর্মী মইদুল ইসলাম মিদ্যার আহত হওয়ার কথা পুলিশকে জানানো হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার চার দিন পরে সোমবার মৃত্যু হয়েছে আহত মইদুলের। তাঁর বাড়ির লোকজনও চিকিৎসার ব্যাপারে কিছু জানতেন না বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে যে ভাবেই মৃত্যু হোক, মইদুলের গরিব পরিবারকে আর্থিক সাহায্য এবং পরিজনদের কাউকে চাকরি দেওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন বলেও জানিয়েছেন মমতা।
সিপিএম অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীরই ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছে। তাদের বক্তব্য, নবান্ন অভিযানে পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মইদুল। এমন ঘটনার পরে আহতদের তুলে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া পুলিশেরই দায়িত্ব। সিপিএমের প্রশ্ন, পুলিশ যে সেই কাজ করেনি এবং তারা জানতই না কে কোথায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন— এটা কি পুলিশেরই ‘ব্যর্থতা’ নয়?
নবান্নে এ দিন একটি প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানের অবসরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। সুজন চক্রবর্তীকে ফোন করেছিলাম। দুঃখ হয়েছিল বলেই তো ফোন করেছিলাম। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। কী ভাবে মারা গিয়েছে, সেটা ময়না তদন্ত হওয়ার পরে বোঝা যাবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘খবর নিয়েছি, পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। তাদের বাড়ির লোককেও জানানো হয়নি। তিন দিন আগে যে ভর্তি হল, বাড়ির লোক, পুলিশকে জানানো হবে না? হাসপাতালের এই নিয়ম রয়েছে। লোকাল থানায় খবর দেওয়া হয়নি। বাড়ির লোকেরাও বলছে, ১৩ তারিখ জানতে পেরেছি। তা হলে দু’টো দিন কোথায় গেল? এ সব প্রশ্ন রয়েছে। কিডনিতে কোনও সমস্যা ছিল কি না?’’
তবে একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি কোনও মৃত্যুকে সমর্থন করি না। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। সুজনবাবুকে বলেছি, যে ভাবেই মারা যাক, ছেলেটির গরিব পরিবার, আমি তাদের চাকরি এবং আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য তৈরি রয়েছি। মৃত্যুর বিকল্প সাহায্য হয় না। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে, আদৌ ওই দিনের ঘটনায় মারা গিয়েছে, না কি অন্য কোনও কারণে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য বলেছেন, গণ-আন্দোলনে নিহত কর্মীর পাশে দল আগের মতোই সর্বতো ভাবে থাকবে।
বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবুও জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে বাড়ির লোকের না জানার অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন তিনি। সুজনবাবু এবং ডিওয়াইএফআই রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, মইদুলের জামাইবাবুর সঙ্গে তাঁদের আগাগোড়া যোগাযোগ ছিল। কী ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে, বাড়ির লোককে জানিয়েই তা করা হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সুজনবাবু বরং পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘কাজ চাইতে গিয়ে তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা পেল লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান! এক জনের মৃত্যু হল। এই ঘটনার জন্য আগে মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘নির্মম ভাবে লাঠি চালানোর পরে কত জন আহত হল, কোথায় তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে, সে সব দেখা তো পুলিশের কাজ। পুলিশ জানত না মানে তাদের ব্যর্থতা নয়? তার দায়িত্ব পুলিশমন্ত্রী নেবেন না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy