১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ হচ্ছে, এই তথ্য সম্ভবত ঠিক নয়। এমনটাই জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। এর পর সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মহাকুম্ভ সংক্রান্ত বিষয়ে বলতে গিয়ে মমতা এই প্রশ্ন তুলেছেন। পাশাপাশি, তিনি এই বিষয়ে বিশিষ্ট মানুষদের গবেষণা করে ‘সঠিক তথ্য’টা জানানোর অনুরোধও করেন।
মঙ্গলবার মমতা বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগর প্রতি বার হয়। কিন্তু মহাকুম্ভ ১২ বছর পর পর হয়। যেমন জগন্নাথদেবের পুরীর মন্দিরে যে নিমকাঠের ঠাকুর হয় তাদের অনেক নিয়মকানুন আছে। আমি যত দূর জানি, সম্ভবত ১২ বছর পর পর সেই নিমকাঠের মূর্তি পরিবর্তন করেন পুরীর সিস্টেম অনুযায়ী দয়িতাপতিরা।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘যাঁরা বলছেন ১৪৪ বছর পরে হচ্ছে, সম্ভবত ঠিক নয়। আমি যতটুকু শুনেছি, ২০১৪-তেও হয়েছে। আমার যদি ভ্রান্তি থাকে আমাকে সংশোধন করে দেবেন। ১৪৪ বছর পর কুম্ভ হচ্ছে, এটা ঠিক নয়। অনেক মানুষ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। আমি কুম্ভে যাঁরা স্নান করছেন তাঁদের কিছু বলছি না। তাঁদের প্রতি আমার সম্মান আছে। আমি কুম্ভস্নান নিয়ে একটি কথাও বলিনি। কে কোথায় যাবে, কোথায় কী করবে, সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। উৎসব সকলের। যে যেটা বিশ্বাস করে সে সেটা করবে।’’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘পুণ্যস্নান যেটা হয়, সংক্রান্তিতে হয় এবং নিয়মকানুন মেনেই হয়। তাই ১৪৪ বছর পরে আবার কুম্ভ হবে বা ১৪৪ বছর আগে এটা হয়েছে— আমি একটু অজ্ঞ এই ব্যাপারে। যদি কেউ বিশিষ্ট মানুষ থাকেন, আপনারা একটু গবেষণা করে জানাবেন, সঠিক তথ্যটা কী! অনেক পরিবার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। ট্রেনে চড়তে গিয়ে মারা গিয়েছেন অনেকে। তাঁরাও যেন ক্ষতিপূরণের আওতায় আসেন।’’
প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকারের যে ত্রুটি রয়েছে সে বিষয়েও মঙ্গলবার মন্তব্য করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি বিয়েবাড়ির আয়োজন করি, আমাকে খাবার অতিরিক্ত রাখতে হয়। ৪০০ লোককে নিমন্ত্রণ করলে ৫০০ লোকের আয়োজন করতে হয়। আর ধর্মের ক্ষেত্রেও তেমনটাই। এটাও উৎসব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কতটা ক্যাপাসিটি আছে, কত মানুষ যেতে পারে সবটা। ভাবনাচিন্তার প্ল্যানিংয়ের ব্যাপারে বলছি। অনেকে এই নিয়ে অসত্য কথা বলছেন। আমি কোনও ধর্মকে জীবনে অসম্মান করিনি। করবও না। গঙ্গাসাগর মেলা হলে আমাদের পাঁচ-ছ’দিন ঘুম হয় না। তাই গঙ্গাসাগর সেতু তৈরি করছি। রাসের সময় কত লোক হয় আপনারা জানেন! পুজো কার্নিভাল যত ক্ষণ পর্যন্ত শেষ না-হয় তত ক্ষণ আমাদের নজর থাকে।’’
আরও পড়ুন:
মৌনী অমাবস্যায় মহাকুম্ভে যে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছিল, সেই বিষয়টির উল্লেখ করেও যোগীকে নিশানা করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা যখন-তখন হতে পারে। তার পরেও তো প্ল্যানিং করতে হয়। যোগী স্যর আমাকে যতই গালিগালাজ করুন, আমার গায়ে ফোস্কা পড়বে না। তবে আমি বলব, যাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র দেননি, ময়নাতদন্তের সার্টিফিকেট দেননি, তাঁদের তা দেওয়া উচিত।’’