Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

রাজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি সিভিক ভলান্টিয়ার্সের

সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিল ‘পশ্চিমবঙ্গ সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনে’র রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পোড়িয়া। শুক্রবার দুপুরে মালদহ বিমানবন্দরে জেলার সিভিক ভলান্টিয়ার্স-এর বৈঠক হয়। সেখানে সঞ্জয়বাবু বলেন, “আমাদের দিয়ে বুথ দখল করানো হয়েছে। কিছু এলাকায় অন্যের ভোটও আমাদের দিয়ে দেওয়ানো হয়েছে।

মালদহ বিমানবন্দরে সিভিক পুলিশদের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

মালদহ বিমানবন্দরে সিভিক পুলিশদের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৬
Share: Save:

সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিল ‘পশ্চিমবঙ্গ সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনে’র রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পোড়িয়া। শুক্রবার দুপুরে মালদহ বিমানবন্দরে জেলার সিভিক ভলান্টিয়ার্স-এর বৈঠক হয়। সেখানে সঞ্জয়বাবু বলেন, “আমাদের দিয়ে বুথ দখল করানো হয়েছে। কিছু এলাকায় অন্যের ভোটও আমাদের দিয়ে দেওয়ানো হয়েছে। চাকরি পাওয়ার সময় তৃণমূল নেতাদের প্রচুর টাকা দিতে হয়েছে। কেউ হাজার চল্লিশেক দিয়েছে, কেউ বা এক লাখ। এখন ভাল পোস্টিং পাওয়ার জন্যও টাকা দিতে হচ্ছে।” সঞ্জয়বাবুর অভিযোগ, গোটা রাজ্যে ১ লক্ষ ৩০ হাজার সিভিক ভলান্টিয়ার্স-এর মধ্যে ১০ হাজার জনকে আন্দোলন করার জন্য অন্যায় ভাবে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৭ নভেম্বর কলকাতার রানি রাসমণি স্কোয়ারে রাজ্যের সব সিভিক ভলান্টিয়ার্স জমায়েত হবেন বলে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তবে এই অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে নস্যাৎ করে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্য ভাল উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিভিক পুলিশ নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু এঁরা যে সব কথা এখন বলছেন, তাতে তাঁরা নিজেরাই প্রমাণ করছেন পুলিশ তো দূরের কথা, স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার যোগ্যতাও তাঁদের নেই! স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী হিসাবেও তাঁদের শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকার কথা।” পার্থবাবুর অভিযোগ, কিছু উগ্রবাদ, কিছু বামপন্থী ওই সংগঠনের পিছনে মদত দিয়ে পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টা করছে।

এ বছরের গোড়ায় রাজ্যে ১ লক্ষ ৩০ হাজার যুবককে সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার্স হিসেবে নিয়োগের অনুমতি দেয় স্বরাষ্ট্র দফতর। গত ১০ জুলাই চাকরি স্থায়ী করা সহ চার দফা দাবিতে রানি রাসমণি রোডে তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তারপর ২৮ জুলাই রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার্স-এর নতুন নামকরণ করে সিভিক ভলান্টিয়ার্স। পুলিশ শব্দটি কেন সরিয়ে নেওয়া হল, সরকারি ভাবে তার কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ তকমা থাকা সত্ত্বেও বাহিনীর শৃঙ্খলা ভেঙে বিক্ষোভ দেখানোই ওই সিদ্ধান্তের কারণ বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছিল। প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছিলেন, ইউনিফর্মে পুলিশ শব্দটা লেখা থাকা সত্ত্বেও বিক্ষোভ সমাবেশ করাটা কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। এর পরেই তাদের নাম থেকে ‘পুলিশ’ শব্দটি ছাঁটার সিদ্ধান্ত নেয় নবান্ন।

এ বার আবার সেই বিক্ষোভের পথেই যেতে চলেছেন বলে হুমকি দিয়েছেন সঞ্জয়বাবু। কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে এমন শতাধিক সিভিক ভলান্টিয়ার্স-এর এক বৈঠকে সঞ্জয়বাবু বলেন, “মালদহে ৪৮০০ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। রাজ্যে সেই সংখ্যা ১০ হাজার। সকলকে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।” তিনি জানান, আগামী ১০ কিংবা ১১ সেপ্টেম্বর মালদহের পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও হবে। তাঁর কথায়, রাজ্যে তাঁদের সংগঠনের সদস্য এখন ৮৮ হাজার জন। তিনি বলেন, “এদের যদি কলকাতার পথে নামিয়ে দিই তবে কলকাতা ভেঙে পড়বে। কিন্তু আমরা তা করব না।”

রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা এ সব কথা কানে তুলছেন না। মালদহ শহরের বিমানবন্দরের ভিতরে আমগাছের নীচে এই বৈঠকের বিষয়ে জেলা পুলিশ অবশ্য পুরোপুরি অন্ধকারে ছিল। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিমানবন্দর সংরক্ষিত এলাকা। সেখানে বৈঠক করা উচিত হয়নি। তিনি বলেন, “এই ধরনের বৈঠকের কথা জানা ছিল না। আগে জানলে ব্যবস্থা নিতাম। ওই বৈঠকে যাঁরা হাজির ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE