ধৃত চিনাদের নিয়ে নওদার কারখানায় তল্লাশি সিআইডির।
ল্যাপটপ, কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু কাগজপত্র আগেই বাজেয়াপ্ত করেছিল সিআইডি। সেই তালিকায় এ বার উঠে এল একটি শক্ত বাঁধাইয়ের জাবদা খাতা এবং একটি মলাট দেওয়া ডায়েরি। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ওই খাতা থেকে আঁকাবাঁকা অক্ষরে লেখা বেশ কিছু থেকে মোবাইল নম্বর জোগাড় করা গিয়েছে। সেই সূত্রে চিনাদের ছড়ানো মাদক-জাল আরও কিছুটা গুটিয়ে আনা যাবে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
চুল এবং চারকোলের ব্যবসার নামে তারা কোথায় কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন ওই নম্বরের সূত্র ধরে সেখানে পৌঁছনই এখন গোয়েন্দাদের লক্ষ্য।
তবে, ওই নম্বরগুলি যে একেবারেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তা নিয়ে সন্দেহ নেই তাঁদের। নওদা, মধুপুর, বেলডাঙার কাজিসাহা, বেগুনবাড়ির কয়েক জন চুলের কারবারির পাশাপাশি রয়েছে এলাকার কয়েক জন ছোট ব্যবসায়ীর নামও। তবে, আশ্চর্যের বিষয়, চিনাদের সঙ্গে ব্যবসা ফাঁদার পরেই তাদের আর্থিক অবস্থার বোলবোলাও।
এর মধ্যে, কাজিসাহা ও বেগুনবাড়ির দুই ব্যবসায়ীর প্রায় এক হপ্তার মধ্যে উঠেছে তিন তলা দালান কোঠা। সে বাড়ির জাঁদরেল রং শ্বেত পাথরের দেওয়াল মোজাইক করা মেঝে দেখে পড়শিদের চোখ টাটিয়েছে যেমন তেমনই জেগেছে প্রশ্ন, মাটির মেঝে রাতারাতি এমন পাথরে পরিবর্তনের রহস্য কি?
এক চুলের কারবারি রাস্তার কোলে প্রকান্ড জায়গা কিনে বাড়ি তৈরিতে সবে হাত দিয়েছেন। শাসক দলের স্থানীয় এক নেতা বলছেন, ‘‘পাছে আমরা খোঁজ খবর করি, তাই পার্টি অফিসে এসে আমাদের মোটা অঙ্কের ডোনেশনও দিতে চেয়েছিল ওই ব্যবসায়ী। আমরা রাজি হইনি।’’
বেলডাঙার অন্য এক চুলের কারবারি, যিনি সাত পুরনো মোটরবাইকেই এক দিন সওয়ারি ছিলেন, চিনা-যোগে তাঁর গ্যারাজে এখন দু’টি নতুন গাড়ি, যার এক একটির দাম প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা।
গ্রামবাসীদের অনেকেই বলছেন, ‘‘শুধু রমরমা নয়, বাড়িতে কোলাপসিবল গেট বসিয়ে তা দিবারাত্র তালা ঝুলিয়ে রাখতেও দেখা গিয়েছে ওই পরিবারগুলিকে। আগল খোলা আটপৌরে বাড়ির পরে কি এমন হল যে দিনরাত গেটে তালা দিয়ে রাখতে হবে!’’
সিআইডি’র তদন্তে উঠে এসেছে আরও একটি তথ্য। বছর দুয়েক আগে, ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও এক চিনা নাগরিককে প্রায় নিশ্ছদ্র নিরাপত্তা দিয়ে বেশ কয়েক দিন রেখে দিয়েছিল বেলডাঙার এক বাসিন্দা। পুলিশ অবশ্য তাকে জেরা করেই সে যাত্রায় ছেড়ে দিয়েছিল। সিআইডি এখন কাজিসাহা এলাকার ওই ব্যবসায়ীর গতিবিধির উপরে নতুন করে নজরদারি শুরু করেছে।
কতিপয় ওই ব্যবসায়ীর জন্য চিনারা যে টাকার কার্পণ্য করত না, তা জানা গিয়েছে পড়শিদের কাছে। কিন্তু কেন?
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ওই ব্যবসায়ীরা নানান পদ্ধতি নিতে মরিয়া ছিলেন। তার জন্য মোটা টাকাও নিতেন তারা। তলব কর তাদেরও জেরা শুরু করতে চলেছে সিআইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy