ক্লাব ভাড়া করে আয়োজন করা হয়েছিল বিয়ের। কলাগাছ, ঘট দিয়ে সাজানো হয়েছিল গেট। আলোয় ঝলমল করে উঠেছিল ক্লাব। সন্ধ্যার পর থেকে আসতে শুরু করেছিলেন নিমন্ত্রিতেরা। তাঁদের উপস্থিতিতে চার হাত প্রায় এক হতে যাচ্ছিল। কিন্তু তারই মধ্যে পুলিশ ঢুকতে শুরু করে ক্লাবে। প্রথমে পুলিশের উপস্থিতির কারণ জানতে পারেননি বিয়েবাড়িতে জড়ো হওয়া লোকজনও।
কিন্তু যে-মুহূর্তে জানা গেল যে, পুলিশ বিয়ে বন্ধ করতে এসেছে, সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় বাদানুবাদ। তারই মধ্যে এক রকম জোর করেই নাবালিকা কনেকে উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় মেয়ের বাবা এবং পাত্রকে। ঘটনাটি কোনও বাঁকুড়া-পুরুলিয়া-মুর্শিদাবাদ বা উত্তরবঙ্গের কোনও পাড়াগ্রামের নয়। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে খাস কলকাতা শহরের ভিতরেই— গরফা থানা এলাকার মণ্ডলপাড়ায়।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ লালবাজারের ১০০ নম্বরে ফোন করেন এক ব্যক্তি। তিনি জানান, গরফার মণ্ডলপাড়া লেনে একটি ক্লাবে বছর ষোলোর এক নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে। লালবাজার থেকে গরফা থানাকে ফোন করে এই তথ্য জানানো হলে থানার পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। তত ক্ষণে বিয়ে প্রায় শেষের মুখে। তারই মধ্যে পুলিশ গিয়ে বিয়ে বন্ধ করতে বললে অনেকেই রে-রে করে ওঠেন। কনের পরিবারের তরফে প্রথমে দাবি করা হয়, পাত্রীর বয়স ১৮ বছর। কিন্তু তার কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা। শেষে পাত্রীর বাড়ির কয়েক জনকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জানতে পারে, মেয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ছেড়ে দিয়েছিল। ভাল ছেলে পাওয়ায় কনের পরিবার দেরি করতে চায়নি। মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলে। পুলিশ ওই নাবালিকার পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করে। তাতেও দমেনি কন্যা পক্ষ। পুলিশের সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। পুলিশ অকারণে বিয়েতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। শেষে পুলিশ প্রায় জোর করে ওই নাবালিকার বাবা ও পাত্রকে থানায় নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম রঞ্জিত পাল এবং ঝণ্টু পাল। নাবালিকা কনেকে পাঠানো হয়েছে হোমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy