Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta High Court

‘পুলিশ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলে সিবিআইয়ে আপত্তি কেন?’ অভিষেক-কন্যা মামলায় প্রশ্ন হাই কোর্টের

রাজ্যের প্রশ্ন, সিঙ্গল বেঞ্চ শুনানির প্রথম দিন কী ভাবে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল? তারা জানায়, সাংসদের মেয়েকে নিয়ে কটু মন্তব্য করায় দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের উপর কোনও অত্যাচার হয়নি।

Abhishek Banerjee

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৭
Share: Save:

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ের উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন খারিজ করে জানিয়েছে, মামলাকারীর উপর শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, মেডিক্যাল রিপোর্টে সেটা স্পষ্ট। ওই রিপোর্টকে অস্বীকার করা যায় না। তাই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো সিবিআই ওই ঘটনার তদন্ত করবে। রাজ্যের দায়িত্ব, আইন মেনে কাজ হয়েছে কি না, তা দেখা।

উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে দিন কয়েক আগে আয়োজিত একটি পদযাত্রার অংশগ্রহণকারী এক জনকে বলতে শোনা যায়, আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় তাঁর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় আর্থিক সাহায্য দিলেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? ওই প্রতিবাদ মিছিল থেকে অভিষেকের নাবালিকা কন্যাকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।) এক মহিলা ডায়মন্ড হারবার থানায় ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে মামলাও করেন। তার পরেই গত ৭ সেপ্টেম্বর নিমতা থেকে গ্রেফতার হন দু’জন।

তার পরেই ওই যুবক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ের নাম করে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপ করে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। তদন্তে নেমে দুই মহিলাকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ধৃতদের পরিবারের অভিযোগ, হেফাজতে নিয়ে তাঁদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ। আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন পুলিশকর্মীরা। মামলা হয় হাই কোর্টে। যার প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। নির্দেশে তিনি বলেছিলেন, অত্যাচারের ঘটনায় পুলিশের মধ্যে কারা যুক্ত ছিলেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই। তবে সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।

বুধবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সওয়াল করেন, সাংসদের মেয়েকে নিয়ে কটু মন্তব্য করার জন্য গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পকসো ধারা দেওয়া হয়েছে। ওই দুই মহিলার উপর পুলিশি অত্যাচার করেনি। তা ছাড়া, সিঙ্গল বেঞ্চ মামলাটি প্রথম দিন শুনেই কী ভাবে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল? পাল্টা প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘আরজি কর মামলাতেও প্রথম দিনই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এখানে অভিযোগ রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে। রাজ্যের দায়িত্ব, আদৌও আইন মেনে কাজ হয়েছে কি না, সেটা দেখা। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজ্য সমর্থন করতে পারে না।’’ প্রধান বিচারপতি এ-ও বলেন, ‘‘রাজ্য বলছে, পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সঠিক নয়। পুলিশের উপর রাজ্যের এত আত্মবিশ্বাস থাকলে সিবিআই-ই তদন্ত করুক। ওই দুই মহিলার গ্রেফতারি নিয়েও তো প্রশ্ন থাকছে।’’ তার পরেই রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে উচ্চ আদালত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE