পুলিশকে আটকে রেখে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: অঙ্গীরা চন্দ।
বরাহনগর এলাকায় শনিবার ভোর ৪টে থেকে অবরুদ্ধ ছিল বিটি রোড। সাড়ে চার ঘণ্টা পর অবশেষে অবরোধ উঠেছে। অভিযুক্ত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট এবং সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।
ডানলপের দিক থেকে শ্যামবাজারের দিকে যাওয়ার পথে সিঁথির মোড়ে অবরোধ চলেছে ভোর থেকে। কোনও গাড়ি সিঁথির মোড় থেকে এগোতে পারছিল না। ডানলপের দিকে যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ রাখা হয়েছিল। যানজট ছড়িয়ে পড়ে শ্যামবাজার পর্যন্ত। কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআরের কপি হাতে পাওয়ার পর অবরোধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিক্ষোভকারীরা।
সিথির মোড় এলাকায় শুক্রবার রাতে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন রবীন্দ্রভারতীর পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীরা। রাত ১১টা থেকে রাস্তার এক দিক আটকে পথনাটিকা চলেছে। আরজি করের ঘটনার বিচার চেয়ে রাতে রাস্তায় প্রতিবাদী স্লোগানও লিখে দেওয়া হয়। অভিযোগ, রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ গোলমাল শুরু হয়।
মত্ত অবস্থায় বাইক নিয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ার পড়ুয়াদের ব্যারিকেডে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ। পুলিশ লেখা বাইকেই ছিলেন তিনি। পড়ুয়াদের উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্যও করেন তিনি। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। অভিযোগ, এর পর এক পুলিশকর্মী ঘটনাস্থলে এসে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে ছেড়ে দেন। এতে পড়ুয়াদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। ওই পুলিশকর্মীও নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে পুলিশের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক বিভাগের প্রাক্তনী আম্রপালি ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। এক সিভিক ভলান্টিয়ার এসে আমাদের ব্যারিকেডে ধাক্কা মারেন। তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন। আমরা তাঁকে আটকেছিলাম, কিন্তু এক পুলিশকর্মী এসে তাঁকে ইচ্ছা করে ছেড়ে দেন। ভোর ৩.৫৫ মিনিট থেকে আমরা ওই পুলিশকর্মীকে আটকে রেখেছি। আমাদের দাবি, ওই সিভিককে এখানে নিয়ে আসতে হবে এবং আমাদের সামনে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।”
দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বিটি রোড আটকে থাকায় নিত্যযাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। সকালের দিকে দিকে যাঁদের বাস ধরার প্রয়োজন, তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। বিকল্প হিসাবে মেট্রো ধরতে দমদমের দিকে যাচ্ছেন কেউ কেউ। অনেকে রাস্তা বন্ধ দেখে ফিরে যাচ্ছেন। এক নিত্যযাত্রী বলেন, “সকাল ৭টার মধ্যে অফিসে পৌঁছনোর কথা ছিল। বাসই আমার ভরসা। কিন্তু রাস্তা তো বন্ধ দেখছি। অসুবিধায় পড়েছি।” যদিও স্কুলবাস, অ্যাম্বুল্যান্স কিংবা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত অন্য কোনও গাড়িকে ব্যারিকেড সরিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
অবরোধ তুলে নিয়ে রবীন্দ্রভারতীর এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম গঙ্গাসাগর গোন্ড। যে সার্জেন্টকে আমরা আটকে রেখেছিলাম, তাঁর নাম তারকেশ্বর পুরি। দু’জনের বিরুদ্ধে কাশীপুর থানায় এফআইআর হয়েছে। পুলিশ আমাদের সেই কপি পাঠিয়েছে। কাশীপুর থানায় ওই সিভিককে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা অবরোধ তুলে নিচ্ছি। অনেক সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়েছেন, তা আমরা চাই না।’’ লালবাজার সূত্রে খবর, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আপাতত সিভিকের কাজ তিনি করতে পারবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy