আইএস যে ভারতে হামলা চালাতে পারে, তা এখন প্রকারান্তরে মেনে নিচ্ছে কেন্দ্র। তাই ভবিষ্যতে গোটা দেশে ওই জঙ্গি সংগঠনকে রুখতে সার্বিক রণকৌশল স্থির করার জন্য আগামিকাল ১২টি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কেন্দ্রের কর্তারা। মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীরের মতো ১২টি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব ও পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের ওই বৈঠকে থাকার কথা। কেন্দ্রের তরফে থাকবেন স্বরাষ্ট্রসচিব এল সি গয়াল, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর প্রধান ও গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর কর্তারা।
সিরিয়া-তুরস্কে সাফল্যে এমনিতেই উজ্জীবিত আইএস। যার প্রভাবে গোটা বিশ্বে ক্রমশ বাড়ছে ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর জনসমর্থন। পিছিয়ে নেই ভারতও। আইএসে যোগ দিতে দেশ ছেড়েছেন বেশ কিছু মুসলিম যুবক। দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশের পরোক্ষ সমর্থনও যে আইএসের পিছনে রয়েছে, তা স্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আশঙ্কা বাড়িয়ে, বৃহত্তর ‘খিলাফত’ বা ধর্মীয় সাম্রাজ্য গঠনের লক্ষ্যে ভারতকে পরবর্তী নিশানা হিসেবে দাবি করতে শুরু করেছে ওই সংগঠনটি। মার্কিন গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, ইতিমধ্যেই ভারত অভিযানের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা। তালিবান, লস্কর-ই-তইবা, আল কায়দাকেও সেই লড়াইয়ে যোগ দেওয়ার ডাক দিয়েছে আইএস।
গোয়েন্দাদের মতে, কাশ্মীরে কিছু বিক্ষিপ্ত অংশে আইএসের পতাকার উপস্থিতি ছাড়া এখনও পর্যন্ত ভারতের মাটিতে ওই জঙ্গি গোষ্ঠীর সক্রিয় উপস্থিতি নেই। আজও যেমন কাশ্মীরের জামিয়া মসজিদে আইএসের পতাকা দেখা গিয়েছে। কিন্তু দু’টি আশঙ্কার বিষয় রয়েছে। এক, আইএসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে মুসলিম যুবকদের বিদেশে যাওয়া। দুই, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আইএসের ভাবধারা প্রচার। দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়েই বেশি ভাবনায় কেন্দ্র। এমন প্রচারেই বেঙ্গালুরু থেকে আটক হয়েছিলেন আদতে দমদমের বাসিন্দা মেহদি মসরুর বিশ্বাস। মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন, শিক্ষিত মুসলিম যুবকদের মধ্যে যাঁরা আইএসের ভাবধারা প্রচার করে সঙ্ঘবদ্ধ গোষ্ঠী তৈরি করতে চাইছেন, শুধু তাঁদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। বাকিদের ক্ষেত্রে আপাতত নরম নীতি নিয়েছে কেন্দ্র। ওই যুবকদের পরিবারকে জানিয়ে তাঁদের নজরদারির আওতায় রাখা হয়েছে। কারণ, এখনই তাঁদের গ্রেফতার করলে তাঁরা আরও কট্টর হয়ে উঠতে পারেন। চরমপন্থী বিশ্বাস বদলাতে তাঁদের কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
কেন্দ্র স্পষ্টই বুঝতে পারছে, এই কাজ একা সম্ভব নয়। তাই আগামিকাল রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। কেন্দ্রের মতে, এখন দক্ষিণ ভারতেই আইএসের প্রচার বেশি। তাই দক্ষিণের রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখতে বলবেন কেন্দ্রের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy