Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

উড়িয়ে দাও ‘পঞ্জাব’

মহাভারতের নাম যদি হত ‘মহা’, কেমন হত? অনেকেই হয়তো এই প্রশ্নের মাথা-মুণ্ডু খুঁজে পাবেন না। খামোখা মহাভারতের নাম ‘মহা’ হতে যাবে কেন? অনেকে হয়তো এমনটাই ভাববেন। কেউ হয়তো রেগে গিয়ে বলতে পারেন, ‘এমন অর্থহীন প্রশ্ন করার অর্থ কী?’

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০০:৫৮
Share: Save:

মহাভারতের নাম যদি হত ‘মহা’, কেমন হত?

অনেকেই হয়তো এই প্রশ্নের মাথা-মুণ্ডু খুঁজে পাবেন না। খামোখা মহাভারতের নাম ‘মহা’ হতে যাবে কেন? অনেকে হয়তো এমনটাই ভাববেন। কেউ হয়তো রেগে গিয়ে বলতে পারেন, ‘এমন অর্থহীন প্রশ্ন করার অর্থ কী?’

যাঁরা এমন ভাবছেন, তাঁদের বলব, এই প্রশ্ন কিন্তু পহলাজ নিহালনির কাছে অর্থহীন ঠেকবে না।

‘উড়তা পঞ্জাব’ নামের একটি ছবিকে মুক্তি পেতে দেওয়ার জন্য যে সব শর্ত সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান পহলাজ নিহালনি রেখেছেন এবং তুমুল সমালোচনার ঝড়ের মুখে পড়েও যে ভাবে নিজের অবস্থানকে জগদ্দল পাথরের মতো অনড় করে দিয়েছেন, তাতে মহাভারত সম্পর্কেও তাঁর এই রকম কোনও মতামতই থাকবে বলে আশঙ্কা করা যায়। ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবিটির অংসখ্য দৃশ্য এবং সংলাপ কেটে দিতে বলেছেন পহলাজ নিহালনি। ছবিটির নাম থেকে ‘পঞ্জাব’ শব্দটি বাদ দিতে বলেছেন। ছবিটির সংলাপেও কোথাও ‘পঞ্জাব’ শব্দটি রাখা যাবে না বলে ফতোয়া দিয়েছেন। মাদকের চোরাকারবার যে ছবির অন্যতম উপজীব্য, সেই ছবির নামে ‘পঞ্জাব’ শব্দটি থাকলে তা পঞ্জাবের অপমান, নিহালনি এমনটাই মনে করেন।

আসলে পঞ্জাবের শাসক শিরোমণি অকালি দল এই ছবির মুক্তি চায় না। মাদকের রমরমা, মাদকের চোরাকারবার, মাদকের প্রতি যুব সম্প্রদায়ের ঝোঁক— এ সবের সঙ্গে পঞ্জাবের বিভিন্ন শহরের নাম বার বার জড়িয়ে যাচ্ছে। ‘উড়তা পঞ্জাব’ ছবিতে সেই সমস্যার প্রতিফলন রয়েছে। রাজ্যটির শাসক দলের পক্ষে এই ছবি যে বেশ অস্বস্তিকর হয়ে উঠবে, তা বলাই বাহুল্য। তাই বড় শরিক বিজেপির দ্বারস্থ পঞ্জাবের ‘শিরোমণি’রা। বিজেপিও চায় না, পঞ্জাবে নির্বাচনের আগের বছরে শরিকের মনে কোনও ক্ষোভের সঞ্চার হোক। অতএব ‘উড়তা পঞ্জাব’ থেকে পঞ্জাবকে উড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর পহলাজ।

এর জন্য পহলাজকে কম কসরৎ করতে হচ্ছে না! দিনভর গালমন্দ শুনতে হচ্ছে বলিউডের এক বড় অংশের থেকে। সে সবের জুৎসই জবাবও খুঁজে বার করতে হচ্ছে। কেউ এক জন বলেছেন, পহলাজ প্রধানমন্ত্রীর চামচা। তিনি আর যান কোথায়? ফুলটস বল দেখে স্টেপ আউট করে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দিয়েছেন সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান। সদর্পে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন— ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর চামচা হব না তো কি ইতালির প্রধানমন্ত্রীর চামচা হব?’

মাফ করবেন পহলাজ, আমরা অজ্ঞ ছিলাম। সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে যে ঘোষিত ভাবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর চামচা হতে হয়, তা আমরা জানতাম না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE