হাজিরা: সিবিআই দফতরে সুলতান । ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
বিধায়ক ভাইয়ের পর সাংসদ দাদা।
নারদ ঘুষ-কাণ্ডে বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদের পর তাঁর দাদা সাংসদ সুলতান আহমেদকে ডেকে পাঠিয়ে সোমবার প্রায় ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ সুলতান সিবিআইয়ের অফিসে আসেন।
সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, আইটি হাব ও ফুড পার্ক তৈরিতে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কলকাতায় নিজের বাড়ির অফিসে বসে ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে তিন দফায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদ। নারদ স্টিং অপারেশনের সম্পাদিত ও অসম্পাদিত ফুটেজে ম্যাথুর কাছ থেকে তিন দফায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে।
তবে, সুলতানদের এই জেরাকে এ দিনও চক্রান্তের তত্ত্বে ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলকে যত সিবিআই-ইডি দেখানো হবে, তৃণমূল তত বড় হবে।’’ অভিষেকের কথায়, তাঁরা মানুষের সমস্যা নিয়ে সরব বলেই নানা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তাঁদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে।
গোয়েন্দােদর দাবি— অসম্পাদিত ফুটেজে দেখা গিয়েছে, নির্বাচনের পর ম্যাথুকে দেখা করতে বলছেন সাংসদ। খোশমেজাজে জানাচ্ছেন, খাস কলকাতায় সরকারি ভর্তুকিতে বাজার দরের অর্ধেক দামে জমি পাইয়ে দেবেন। কাটমানিও নেবেন। কী ধরনের ব্যবসা করতে চান, তা স্থির করার জন্য ম্যাথুকে অনুরোধ করছেন সাংসদ। এমনকী ব্যবসার অংশীদারও হতে চান সুলতান। কোনও পুঁজি তিনি বিনিয়োগ করবেন না, শুধু অর্ধেক দামে জমি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অর্ধেক মালিকানা থাকবে তাঁর।
তদন্তকারীদের দাবি, এ দিন সাংসদকে সম্পাদিত ও অসম্পাদিত দু’টি ফুটেজই দেখানো হয়েছে। শুধু কলকাতায় জমি পাইয়ে দেওয়া নয়, দিল্লিতে কোনও সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন হলে সাংসদ হিসেবে তিনি হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন— অসম্পাদিত ফুটেজে সেটাও দেখা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ফুটেজে দেখা যাচ্ছে— ম্যাথুর কাছ থেকে নেওয়া টাকা, তিনি তাঁর অফিসের এক কর্মচারীকে দিচ্ছেন। ওই কর্মচারী টাকা নিয়ে সাংসদের ঘরের আলমারিতে তুলে রাখছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই কর্মীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ভাই ইকবাল আহমেদের মাধ্যমেই সুলতানের কাছে পৌঁছন ম্যাথু। ইকবালের নির্দেশেই ম্যাথু ১৫ লক্ষ টাকা সুলতানকে দিয়েছিলেন। সপ্তাহ খানেক আগে ইকবালকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এক দিন হাজিরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দাবি করে নাসিংহোমে ভর্তি হয়ে যান ইকবাল। সুলতানের অফিসে টাকা লেনদেনের সময় ম্যাথুর সঙ্গে ইকবালও ছিলেন।
এক তদন্তকারীর কথায়, পরবর্তী পর্যায় সুলতান ও ইকবালকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে হাজিরার জন্য ইডি-র তরফেও সুলতান আহমেদকে নোটিস দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy