সায়ন লাহিড়ী। — ফাইল চিত্র।
‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামক সংগঠনের ডাকা মিছিলের আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ীকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সায়নকে ছাড়ার সময়য়ীমাও বেঁধে দিয়েছে আদালত। নির্দেশে বলা হয়েছে, শনিবার দুপুর ২টোর মধ্যে তাঁকে ছাড়তে হবে পুলিশকে। আদালতের নির্দেশ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না।
শুক্রবার সায়নের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে। শুনানিতে তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছিল। শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি সিংহ। পরে তিনি তাঁর নির্দেশে সায়নকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলেন। পাশাপাশি বিচারপতি সিংহ নির্দেশে জানান, আদালতের অনুমতি ছাড়া আগামী দিনে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না সায়নের বিরুদ্ধে। শুধু এই মামলায় নয়, অন্য কোনও মামলাতেও যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর থাকে, সে ক্ষেত্রেও কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই মামলায় হলফনামা দেবে রাজ্য।
শুক্রবার ছাত্র সমাজের নেতা সায়নের গ্রেফতারি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছিল হাই কোর্ট। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি সিংহ। তাঁর পর্যবেক্ষণ, আরজি কর ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচি। ফলে ওই ঘটনার জন্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। তাঁকে কি হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে?
কেন সায়নকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য, ওই ছাত্রনেতা নবান্ন অভিযান কর্মসূচির ডাক দেন। ওই কর্মসূচিতে পুলিশের অনুমতি ছিল না। তার পরেও মিছিল, জমায়েত করা হয়েছে। আর কোনও ভাবেই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল না। রাজ্যের আইনজীবী নবান্ন অভিযানের কয়েকটি ছবি বিচারপতি সিংহের সামনে তুলে ধরেন। হাই কোর্টের প্রশ্ন, সায়ন কোন রাজনৈতিক দলের নেতা? রাজ্য জানায়, তিনি ছাত্রনেতা। যা শুনে বিচারপতি সিংহের প্রশ্ন, ওই ছাত্রনেতাকে কী ভাবে এত প্রভাবশালী বলা হচ্ছে? তিনি কি এতই জনপ্রিয় যে ডাক দিলেন আর হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে গেল? তাঁর কী অতীত রয়েছে? সায়ন কি সক্রিয় রাজনীতিতে রয়েছেন? না কি গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল!
এই মামলায় বিচারপতি সিংহের পর্যবেক্ষণ, আরজি করের ঘটনায় মানুষ মর্মাহত। ওই ছাত্রনেতা প্রভাবশালী নন। ওই ঘটনা ঘটার আগে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। রাজ্যের যুক্তি, নবান্ন অভিযান নিয়ে সায়ন প্ররোচনামূলক বক্তব্য রেখেছিলেন। পাল্টা বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘অনেক রাজনৈতিক নেতাও তো প্ররোচনামূলক ভাষণ দেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? তা ছাড়া ওই ছাত্রনেতা সরাসরি নবান্ন অভিযানের অশান্তিতে জড়িত, এমন কোনও তথ্য নেই।’’ এ ছাড়া সায়নকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy