Advertisement
E-Paper

ববিতারও চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়! নিয়োগ পেলেন সেই অনামিকা

ববিতার চাকরি বাতিলের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আর এক পরীক্ষার্থী। অভিযোগ ছিল, এসএসসি-র কাছে আবেদন করার সময় স্নাতক স্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখান ববিতা।

Babita Sarkar

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারালেন সেই ববিতা সরকার। ফাইল চিত্র ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ১২:১২
Share
Save

তাঁর আবেদনে চাকরি গিয়েছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর। এ বার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারালেন সেই ববিতা সরকার। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ববিতার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ববিতার চাকরি পাবেন অনামিকা রায়। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) অনামিকাকে চাকরির সুপারিশপত্র দিতে হবে বলেও জানিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। নির্দেশ, অনামিকাকে বাড়ির কাছে কোনও স্কুলে চাকরির সুপারিশ দিতে হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, আগামী ৬ জুনের মধ্যে ববিতাকে ১৫ লক্ষ ৯২ হাজার ৮৪৩ টাকা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে। হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার সেই টাকা নতুন চাকরি প্রাপক অনামিকা রায়ের হাতে তুলে দেবেন। তবে এত দিনে চাকরির জন্য যে বেতন পেয়েছেন ববিতা, সেই টাকা তাঁকে ফেরত দিতে হবে না। অঙ্কিতার চাকরি যাওয়ার পর তাঁর টাকা বিভিন্ন কিস্তিতে ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ মতো যে টাকা পেয়েছিলেন ববিতা, সেই টাকা ফেরত দিতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।চাকরি খোয়ানোর পর ববিতা আদালত চত্বরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘আমার চাকরি চলে গেল। আমার ভুল না কমিশনের ভুল জানি না। আমার নথি তখনই খতিয়ে দেখা উচিত ছিল। তখনই বলা উচিত ছিল। এক বছর চাকরি করার পর চাকরি কেড়ে নেওয়া কাম্য নয়।’’অন্য দিকে, চাকরি পাওয়ার পর অনামিকা বলেন, ‘‘এটাই হয়তো আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন। আমি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে প্রথম এই খবর পেয়েছি। খুব আনন্দ হচ্ছে। একজন চাকরিপ্রার্থীর কাছে চাকরি পাওয়ার চেয়ে ভাল খবর তো আর কিছু হয় না।’’ আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে ববিতার সঙ্গে আমার কোনও শত্রুতা নেই। ওঁর জায়গায় অন্য কেউ হলেও তাঁকে চাকরি হারাতে হত। ২ নম্বর কমে যাওয়া মানে র‌্যাঙ্ক অনেকটা পিছিয়ে যাওয়া।’’ ববিতা যাতে ভবিষ্যতে চাকরি পেয়ে যান, সেই কামনাও তিনি করেন বলে জানিয়েছেন অনামিকা।পরেশ-কন্যা অঙ্কিতাকে বেআইনি ভাবে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন ববিতা। তাঁর অভিযোগ ছিল, এসএসসির মেধাতালিকায় অনেক পিছনে থাকা অঙ্কিতার নাম প্রথমে নিয়ে আসায় তিনি চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এর পর অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে ‘যোগ্য’ প্রার্থী হিসাবে ববিতাকে সেই চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। অঙ্কিতার এত দিনের চাকরির সব বেতনও দিয়ে দেওয়া হয় ববিতাকে। কিন্তু চাকরি পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই প্রশ্নের মুখে পড়ে ববিতার নিয়োগও।

দুর্নীতি না ভুল, কিসের জন্য চাকরি হারাতে হল ববিতা সরকারকে?
দুর্নীতি ৪৪%
ভুল ৩৯%
স্পষ্ট নয় ১৫%
মোট ভোট ১৪৪৯০

শিলিগুড়ির ববিতার চাকরি বাতিলের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরই শহরের আর এক এসএসসি পরীক্ষার্থী অনামিকা। অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছে আবেদন করার সময় ববিতার স্নাতকস্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। যার ফলে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে। সেখান থেকেই তৈরি হয়েছে যাবতীয় জটিলতা। ববিতার আবেদনপত্র অনুযায়ী, স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অথচ, স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাব ৬০ শতাংশ বা তার বেশি উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনপত্রে। অর্থাৎ, ‘ভুল’ সেখানেই। যে কারণে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ গণনায় ভুল হয়েছে। নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের দাবি ছিল, এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, সে ক্ষেত্রে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ ৩৩-এর বদলে কমে ৩১ হবে। এতে র‌্যাঙ্কিংয়েও অনেকটাই পিছিয়ে পড়বেন ববিতা!অনামিকার দাবি, ববিতার র‌্যাঙ্কিং পিছিয়ে গেলে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ জনের তালিকার ২০ নম্বরে উঠে আসবে তাঁর নাম। ফলে চাকরিটা তাঁরই পাওয়ার কথা। এই নিয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনামিকা।সেই মামলার শুনানি চলাকালীন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ববিতাকে এমন নির্দেশও দিয়েছিলেন, অঙ্কিতার বেতনের যে টাকা তাঁকে দেওয়া হয়েছিল, তা যেন ববিতা আলাদা করে সরিয়ে রাখেন। ভবিষ্যতে তা তাঁকে ফেরত দিতে হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন বিচারপতি। সেই মামলাতেই মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।

Babita Sarkar Justice Abhijit Gangopadhyay Recruitment Scam Ankita Adhikary Paresh Chandra Adhikary Bengal Teacher Recruitment Case

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}