শুষ্ক ত্বক, মুখে বলিরেখা? দুধ, বেসন কিংবা অলিভ অয়েল নয়, ত্বকের লাবণ্য ফেরাবে কাঁচালঙ্কা! খাবারে ঝাল স্বাদ আনার জন্য যে লঙ্কার ব্যবহার, হাতে কাঁচালঙ্কা বাটা লাগলেই যেখানে ত্বক জ্বলে যায়, সেখানে ত্বকেরই যত্নে কাঁচালঙ্কার কথা শুনে যে কেউ অবাক হতেই পারেন।
তবে সমাজমাধ্যমে কেউ কেউ বলছেন, কাঁচালঙ্কা খেলেই জেল্লা ফিরবে ত্বকে। নেপথ্যে যুক্তিও দেখানো হচ্ছে।
কাঁচালঙ্কা কেন ত্বকের জন্য ভাল?
১। কাঁচালঙ্কায় থাকে ভিটামিন সি। রোগ প্রতিরোধে এই ভিটামিনের কার্যকারিতার কথা অনেকেই জানেন। তবে ত্বকের জেল্লা ফেরাতেও ভিটামিন সি-এর ভূমিকা কিছু কম নয়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে ভিটামিন সি। বলিরেখা কমাতেও এটি দারুণ উপকারী। ত্বকের পরিচর্যায় ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করেন অনেকে।
২। কাঁচালঙ্কায় থাকে বিটা-ক্যারোটিন। এটি এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা ত্বক মসৃণ, সুন্দর রাখে। মুখের জেল্লা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তারুণ্য ধরে রাখতেও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট জরুরি।
৩। কাঁচালঙ্কায় রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। ত্বকের ছোটখাটো সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে এটি। ফলে ব্রণ, ফুস্কুড়ির মতো সমস্যা দূরে রাখার জন্যেও কাঁচালঙ্কা রাখতে পারেন দৈনন্দিন খাবারে।
কিন্তু সত্যিই কি কাঁচালঙ্কা ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আনে?
পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক অনন্যা ভৌমিক এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নন। তিনি বলছেন, ‘‘কাঁচালঙ্কায় ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট অবশ্যই আছে। এগুলি ত্বকের জন্য ভাল। তবে কাঁচালঙ্কার ব্যবহার হয় খাবারে ঝাল বৃদ্ধির জন্য। দৈনিক যে পরিমাণ কাঁচালঙ্কা কেউ খান, তাতে সরাসরি ত্বকের ঔজ্জ্বল্যে প্রভাব পড়বে, এমন নয়। এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই।’’ পুষ্টিবিদের কথায়, কাঁচালঙ্কায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এজিং বা বয়সের বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে শ্লথ করতে পারে ঠিকই, তবে সরাসরি ত্বকের বলিরেখা কমিয়ে ফেলবে, এমন কিন্তু নয়। বরং কাঁচালঙ্কার বদলে নানা ধরনের ফল, সব্জি, বাদাম খাওয়া যেতে পারে, যাতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে।
একই সঙ্গে পুষ্টিবিদেরা সতর্ক করছেন, উপকারিতা থাকলেও মুঠো মুঠো কাঁচালঙ্কা খাওয়া চলে না। কাঁচালঙ্কায় রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্যাপসিসিন। বেশি কাঁচালঙ্কা খেলে পেটে জ্বালার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। হজমেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে দিনে একটি বা দু’টি কাঁচালঙ্কাই যথেষ্ট।