কোনও ঘটনা ঘটলেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া যেন রেওয়াজে পরিণত না-হয়! সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ‘ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো’ (আইবি)-র আধিকারিকের পরিচয় ভাঁড়িয়ে একটি তোলাবাজির অভিযোগে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্ট। হাই কোর্টের ওই নির্দেশ খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এ ভাবে কথায় কথায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া যায় না।
ঘটনাটি ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের। ওই সময় হরিয়ানার পাঁচকুলায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু হয়। আইবি-র ইনস্পেক্টর জেনারেলের পরিচয় ভাঁড়িয়ে তিনি ১ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা পাঠানোর জন্য এক ব্যক্তিকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় শুরুতে তদন্ত চালাচ্ছিল রাজ্য পুলিশ। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না-হয়ে অভিযোগকারী হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আবেদন ছিল মামলার তদন্তভার যেন সিবিআইকে দেওয়া হয়। হাই কোর্টও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।
তবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ জানিয়েছে, শুধুমাত্র যে ঘটনাগুলিতে প্রাথমিক ভাবে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করবে হাই কোর্ট, সেই ঘটনাগুলিতেই সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত। কোনও অস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের ব্যাখ্যা, এই ধরনের ক্ষেত্রে মামলায় এমন কিছু প্রাথমিক তথ্যের প্রয়োজন, যাতে হাই কোর্টগুলি মনে করে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, শুধুমাত্র কিছু ‘যদি’ এবং ‘কিন্তু’র উপর ভিত্তি করে অভিযোগ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।
আরও পড়ুন:
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, গত বছরের জুন মাসে হাই কোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি হয়েছিল। তবে ওই মামলায় স্থগিতাদেশের পরে জুন মাসে সিবিআই এফআইআর রুজু করেছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এর জন্য সুপ্রিম কোর্টে ক্ষমা চেয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, ‘ভুলবশত’ ওই পদক্ষেপ হয়ে গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহণ করেছে শীর্ষ আদালত।