সারদা কেলেঙ্কারি এবং শিক্ষক নিয়োগের পরে এ বার হোমগার্ড নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার ও শাসক দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সিবিআই তদন্ত দাবি করল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, পুলিশকর্তাদের একাংশ এই দুর্নীতিতে জড়িত। সেই অভিযোগেই ডিজি (হোমগার্ড) আরজেএস নালোয়াকে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ পাঠানো হয়েছে।
বিজেপি যখন এই অভিযোগ সামনে আনছে, সরকারি স্তরেও তখন হোমগার্ড নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তের জন্য কমিটি গড়তে হয়েছে। শিল্পসচিব সি এম বাচওয়াত এবং অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের সচিব পি রমেশ কুমারকে নিয়ে তৈরি ওই কমিটিকে দ্রুত তদন্ত সেরে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তবে এর জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। নবান্নের খবর, আগামী সপ্তাহেই ওই কমিটি কাজ শুরু করবে। বুধবার রাতে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নালোয়া ফোন ধরেননি, এসএমএসের উত্তরও দেননি।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে ন’হাজার হোমগার্ড নিয়োগের প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করেছেন নালোয়া। সেই প্রক্রিয়া চলাকালীন আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ জমা পড়েছে নবান্নে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এ দিন বলেন, “শুধু মুর্শিদাবাদের এসপি বা ডিজি (হোমগার্ড)-কে কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে পাঠালেই হবে না। তৃণমূল নেতাদের দেওয়া তালিকা নিয়ে টাকা লেনদেন করে যে ভাবে নিয়োগ হয়েছে, তা উদঘাটন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিন। তাতে খুব আপত্তি থাকলে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করান।”
রাহুলবাবুর অভিযোগ, বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের সুপারিশ মেনে সেখানকার ১৭২ জনকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। মাত্র ২৮ জনকে নেওয়া হয়েছে পুলিশের তালিকা মেনে। তাঁর দাবি, “আমাদের কাছে খবর আছে এক জন এসপি নবান্নে নালিশ জানিয়ে বলেছেন তাঁর দেওয়া তালিকা পুরোপুরি বদলে দেওয়া হয়েছে।” নালোয়াকে নিশানা করে রাহুলবাবুর অভিযোগ, “নিয়োগ চলাকালীন ডিজি (হোমগার্ড) কেন টানা এক মাস বীরভূমে গিয়ে বসেছিলেন? ১৯৯২ সালে তিনি যখন বীরভূমের এসপি ছিলেন, তখন দুর্নীতি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর হয়েছিল। তখন বীরভূমের জেলাশাসক ছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব। দুর্নীতির শিকড় নির্মূল করতে গেলে এই সরকারের পুলিশ দিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়।”
রাহুলবাবুকে ‘টিউবলাইট’ আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, “সরকার নিজেই উদ্যোগী হয়ে যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে তখন ওঁরা এ সব বলছেন। আসলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ার পরে ওঁরা সেটা বানচাল করার চেষ্টা করছেন!”
তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই অফিসাররা কোন আমলে নিযুক্ত হয়েছেন, সেটাও তো দেখা দরকার!” আর অনুব্রত বলেছেন, “রাহুলবাবু পাগলের প্রলাপ বকছেন। সকলের সামনে মাঠে দৌড়ে হোমগার্ড নিয়োগ হয় উনি হয়তো তা জানেন না! এক মাস ধরে হোমগার্ডের ডিজি সিউড়িতে থেকে ওই নিয়োগ করেছেন। আমি কোনও চাকরিপ্রার্থীর নাম পাঠাইনি। তবে শুনেছি অনেক সিপিএম বাড়ির ছেলে চাকরি পেয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy