সভাপতি পদে মেয়াদবৃদ্ধির পরেই বাংলায় আসছেন জগৎপ্রকাশ নড্ডা। — ফাইল ছবি।
মেয়াদবৃদ্ধির পর প্রথম দিল্লি থেকে বাংলায় আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। বুধবার রাতেই কলকাতায় পৌঁছচ্ছেন তিনি। তার পর থেকে ঠাসা কর্মসূচি। বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত নাকাশিপাড়ায় তাঁর সভা। সেই কর্মসূচিতে রাজ্য বিজেপির সমস্ত পদাধিকারীকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। তার আগে কলকাতায় সভাপতি পদে মেয়াদবৃদ্ধি হওয়া নড্ডাকে সংবর্ধনা দেবে বঙ্গ বিজেপি। মায়াপুরে পুজোও দিতে যাবেন তিনি। ঘটনাচক্রে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বাংলার জামাইও বটে। তাঁর স্ত্রী মল্লিকা বাঙালি।
মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে লোকসভা ভোট পর্যন্ত মেয়াদ বেড়েছে সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডার। যদিও নড্ডার পূর্বসূরি হিসাবে অমিত শাহ যখন বিজেপি সভাপতি ছিলেন, তখন তাঁর পূর্ণমেয়াদ (তিন বছর)-ই বাড়ানো হয়েছিল। সেই অর্থে নড্ডা সভাপতি থাকছেন ঠিকই, কিন্তু পূর্ণ মেয়াদে সভাপতিত্বের ভার দ্বিতীয় বার দেওয়া হয়নি তাঁকে। অর্থাৎ, এ যাত্রায় নড্ডার আর অমিত শাহ হওয়া হল না। এর কারণ হিসাবে উঠে আসছে নড্ডার নিজের রাজ্য হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা ভোটে বিজেপির খারাপ ফলের কথা। এই আবহে মেয়াদবৃদ্ধির পর নড্ডা প্রথম দিল্লি ছেড়ে বেরোচ্ছেন। গন্তব্য, বাংলা।
বিজেপি সূত্রে খবর, বুধবার রাতেই শহরে পৌঁছে যাবেন নড্ডা। রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নামতেই তাঁকে সেখানে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। থাকবেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রমুখ। পাশাপাশি স্থানীয় নেতা, কর্মীদেরও প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। বুধবারই কলকাতায় আসার কথা সুনীল বনশলের। আসছেন মঙ্গল পাণ্ডে, আশা লাকড়ারাও। রাতেই বঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নড্ডা। গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড় ন’টায় নিউটাউনের এক বিলাসবহুল হোটেলে বঙ্গ বিজেপি আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবর্ধনা দেবে নড্ডাকে। সেই অনুষ্ঠানের পর নড্ডার কনভয় ছুটবে নদিয়ার মায়াপুরের উদ্দেশে। সভাপতি পদে মেয়াদবৃদ্ধি হওয়ায় ইসকন মন্দিরে পুজো দেবেন তিনি। তার পর পৌঁছবেন নাকাশিপাড়ায়। সেখানে সভা করবেন তিনি। সেই সভাতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে বঙ্গ বিজেপির সমস্ত পদাধিকারীদের। পদ্ম শিবিরের অন্দরের খবর, নাকাশিপাড়াতেই কোথাও দলের পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন নড্ডা। নড্ডার নিরাপত্তারক্ষীদের অনুমোদনসাপেক্ষে সেই বৈঠক হতে পারে নদিয়ারই কোনও দলীয় দফতরে। সেখানেই সংগঠন এবং রণকৌশল নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়ার কথা বিজেপি সভাপতির।
দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বার বার উঠে এসেছে বাংলার প্রসঙ্গ। খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদী বঙ্গ বিজেপির ‘লড়াই’য়ের প্রশংসা করেছেন। এই প্রেক্ষিতে বৈঠক শেষেই সেই বাংলার পথে সভাপতি নড্ডা। প্রথমে কথা ছিল, ১৯ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার মোট দু’টি সভা করবেন তিনি। একটি হুগলির আরামবাগে এবং অন্যটি নদিয়ার কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত কোনও একটি জায়গায়। আবহাওয়ার কারণে সেই কর্মসূচি বহরে কমেছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। এর পরেই জানা যায়, শুধুমাত্র কৃষ্ণনগর লোকসভার নাকাশিপাড়াতেই সভা করবেন নড্ডা।
কিন্তু আরামবাগকে বাদ দিয়ে কৃষ্ণনগরকে বেছে নেওয়ার কারণ কী? বিজেপি সূত্রে খবর, এর পিছনে রয়েছে ভোটের পাটিগণিত। কৃষ্ণনগর আসনটি অতীতে তৃণমূলের সমর্থনে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু তার পর থেকে কৃষ্ণনগর খালি হাতেই ফিরিয়েছে পদ্ম শিবিরকে। সর্বশেষ, ২০১৯-এর লোকসভায় বিজেপির কল্যাণ চৌবে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের কাছে পরাজিত হন ৬৩ হাজার ২১৮ ভোটে। তবে তেহট্ট, কৃষ্ণনগর উত্তর এবং কৃষ্ণনগর দক্ষিণ আসনে এগিয়ে ছিল বিজেপি। আবার ২০২১-এর বিধানসভায় কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কৃষ্ণনগর উত্তরে বড় ব্যবধানে জয় ছাড়া বাকি ছ’টিতেই হেরে যায় বিজেপি। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব আশাবাদী, সঠিক পরিকল্পনা এবং জোরদার প্রচারের মিশেলে ২০২৪-এ কৃষ্ণনগরে ১৯৯৯ সালের মতোই পদ্ম ফোটানো সম্ভব। সে কারণেই সভাপতি পদে মেয়াদবৃদ্ধির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নাকাশিপাড়ার মঞ্চে ভাষণ দেবেন নড্ডা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy