Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

নির্যাতনের অভিযোগ নেয়নি পুলিশ, শুনলেন শমীকেরা

নির্যাতনের অভিযোগ নেওয়া তো দূরের কথা, পুলিশ উল্টে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা এবং তাঁর আশ্রিত দুষ্কৃতীদের পক্ষ নিচ্ছে বলে অাক্ষেপ করলেন নির্যাতিতা ও তাঁর মা। বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যকে সামনে পেয়ে কাঁদতে-কাঁদতে এমনই অভিযোগ করলেন ইলামবাজারের আকোনা গ্রামের নির্যাতিতা বিজেপি সমর্থক ও তাঁর মা।

ইলামবাজার থানায় নির্যাতিতার ব্লাউজ দেখাচ্ছেন বিজেপি-বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। বুধবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

ইলামবাজার থানায় নির্যাতিতার ব্লাউজ দেখাচ্ছেন বিজেপি-বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। বুধবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

মহেন্দ্র জেনা
ইলামবাজার শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৫ ০৩:৩৩
Share: Save:

নির্যাতনের অভিযোগ নেওয়া তো দূরের কথা, পুলিশ উল্টে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা এবং তাঁর আশ্রিত দুষ্কৃতীদের পক্ষ নিচ্ছে বলে অাক্ষেপ করলেন নির্যাতিতা ও তাঁর মা।

বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যকে সামনে পেয়ে কাঁদতে-কাঁদতে এমনই অভিযোগ করলেন ইলামবাজারের আকোনা গ্রামের নির্যাতিতা বিজেপি সমর্থক ও তাঁর মা। পোড়া দলীয় কার্যালয়ের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর আরও অভিযোগ, তৃণমূলে যাওয়ার জন্য তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় খুন-জখম ও পুরুষদের গ্রামছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে শাসকদল এবং তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতী বাহিনী।

গত এক সপ্তাহেরও বেশি ধরে বীরভূমের ইলামবাজার ও পাড়ুই, পাশাপাশি এই দুই থানা এলাকায় বিজেপি-তৃণমূলের সংঘর্ষ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথাও পুরুষ ও মহিলা কর্মী সমর্থকেরা ঘরবাড়ি নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন, তো কোথাও আহত অবস্থায় গোপন আস্তানায় রয়েছেন। সেই কারণেই বিজেপির প্রতিনিধি দল নিয়ে এ দিন ইলামবাজারে গিয়েছিলেন শমীক। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য নেতা রামকৃষ্ণ পাল, জেলার নেতা দিলীপ ঘোষ ও চিত্তরঞ্জন সিংহেরা।

দুপুর ১২টা নাগাদ ইলামবাজারের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ডোমনপুর গ্রামে দলের ‘শহিদ’ শেখ এনামুলের বাড়িতে যান শমীকবাবুরা। পুলিশ এনামুলের বাবার বিরুদ্ধেই আটটি মামলা রুজু করেছে। নৃপতি গ্রামে কর্মী শেখ লালুর বাড়ি গিয়ে হামলা ও আগুন লাগানোর অভিযোগ শোনে প্রতিনিধি দল। দেলরা গ্রামে গিয়ে আক্রান্ত তিন কর্মী নাজির হোসেন, আব্দুর সাত্তার ও শেখ বোরহানের সঙ্গেও কথা বলেন নেতারা। শমীকের হুঁশিয়ারি, ‘‘এমন ঘটনা দিনের পর দিন চললে, মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’’ তাঁর দাবি, শুধু ওসি বদলে হবে না। বীরভূমের পুলিশ সুপার মুখ্যমন্ত্রীকে মিথ্যা রিপোর্ট দিচ্ছেন। তাঁকে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ পাঠানো দরকার। চেষ্টা করেও পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

সোমবার আকোনায় বিজেপির এক মহিলা সমর্থকের ব্লাউজ ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই গ্রামে বিজেপির কার্যালয় পোড়ানো এবং নির্যাতনে মূল অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ হাবল এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গেরা। এ দিন শমীকবাবুর হাতে ছেঁড়া ব্লাউজটি তুলে দিয়ে ওই সমর্থকের বৃদ্ধা মা বলেন, “ওরা আমার সামনেই মেয়ের গায়ে হাত দিল। পুলিশে জানিয়েও লাভ হয়নি।” নির্যাতিতার অভিযোগ, ‘‘গোলমালের কথা শুনে ইলামবাজার থানার ওসি মহম্মদ আলি (বদলি হয়ে গিয়েছেন) এসেছিলেন। তিনি উল্টে বলেন, ওরা (হাবলরা) এমন করবেই। কিছু করার নেই। অভিযোগ করা যাবে না।” এই নিয়ে জানতে বারবার ফোন করা হলেও মহম্মদ আলি তা ধরেননি। হাবলেরও নাগাল পাওয়া যায়নি।

ব্লাউজটি নিয়ে ইলামবাজার থানায় যান শমীকেরা। কিন্তু ব্যস্ততার কথা জানিয়ে বর্তমান ওসি তপাই বিশ্বাস তাঁদের সঙ্গে দেখাই করেননি। ক্ষুব্ধ শমীক বলেন, “ফের পাড়ুইয়ের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ওখানেও অভিযোগ জানাতে গিয়ে ওসিকে পাইনি।” তাঁর হুঁশিয়ারি, পরে তাঁদের কেন্দ্রীয় দল আসছে, অত্যাচারের বিহিত করতে বিজেপি যত দূর প্রয়োজন যাবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE