Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিমলকে দেখে মুখে কুলুপ বিনয়দের

সকালে দিল্লিতে ‘আত্মপ্রকাশ’ করলেন বিমল গুরুঙ্গ। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যে জরুরি বৈঠকে বসলেন বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপারা। তবে দুই নেতার কেউই এ দিন মুখ খোলেননি। একই ভাবে কিছুই বলতে চাননি পাহাড়ের অন্য নেতারাও।

কিশোর সাহা ও অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৬
Share: Save:

সকালে দিল্লিতে ‘আত্মপ্রকাশ’ করলেন বিমল গুরুঙ্গ। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যে জরুরি বৈঠকে বসলেন বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপারা। তবে দুই নেতার কেউই এ দিন মুখ খোলেননি। একই ভাবে কিছুই বলতে চাননি পাহাড়ের অন্য নেতারাও। তৃণমূল নেতা গৌতম দেব অবশ্য বুঝিয়ে দিলেন, ঘাড়ের উপরে অনেক মামলা ঝুলছে গুরুঙ্গের এবং সেই বাধা পেরিয়ে পাহাড়ে আসা এখন দূর অস্ত্।

গুরুঙ্গের পাহাড় আগমনের পথ প্রশস্ত হলে যে লোকটির রক্তচাপ সব থেকে বেশি বাড়বে, তিনি বিনয় তামাঙ্গ। দীর্ঘদিন ধরে গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। এ বারের আন্দোলনের প্রথম দিকেও দু’জনকে পাশাপাশি দেখা গিয়েছে। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনাপর্ব শুরু হওয়ার পরে বিনয় তাঁর পুরনো নেতার পাশ থেকে সরে আসেন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের নির্দেশেই জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান হয়েছেন তিনি। ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন গুরুঙ্গের আর এক পুরনো সঙ্গী অনীত থাপা।

এ দিন বিমলের আত্মপ্রকাশের পরে মুখ খুলতে চাননি বিনয়। মোর্চার একটি সূত্র বলছে, বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই বিনয়ের পক্ষে দুম করে কিছু বলাটা ঠিক নয়। অনীতও এ দিন শুধু বলেছেন, যথা সময়েই প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

বিমলকে কী ভাবে সামলানো হবে, তা নিয়েও আলোচনাপন্থীরা দু’ভাগ। এক দলের দাবি, এক সময়ে দিল্লি ফেরত সুবাস ঘিসিঙ্গকে যেমন শিলিগুড়ির পিনটেল ভিলেজেই অবরোধ করে আটকে দেওয়া হয়েছিল, বিমলের বেলাতেও একই পথ নেওয়া হোক। অন্য পক্ষের প্রস্তাব, সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানি কোন পথে যায়, সে দিকে নজর রাখা উচিত। কেন না, ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত গুরুঙ্গ সুপ্রিম কোর্ট থেকে রেহাই না পেয়ে পাহাড়ে পা রাখার চেষ্টা করবেন না।

বিমলের আত্মপ্রকাশ নিয়ে মুখ খোলেনি জিএনএলএফ-ও। তাদের কথায়, এটা মোর্চার অভ্যন্তরীণ বিষয়। আগামী ২৮ জানুয়ারি তাদের বড় মাপের সভা রয়েছে। দলের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা জানান, ২০০৭ সাল থেকে কী ভাবে পাহাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হবে ওই সভায়। গোর্খা লিগের গোবিন্দ ছেত্রীর মন্তব্য, ‘‘কারা পাহাড়ের মানুষের আবেগ নিয়ে খেলছে ও কারা পাহাড়বাসীকে প্রকৃত ভালবাসেন, তা সময়ই বলবে।’’

তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বারবার সকলকে আলোচনায় ডেকেছিল। কিন্তু গুরুঙ্গ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর নামে ইউএপিএ ধারায় মামলা রয়েছে। দেশে আইন-বিচারব্যবস্থা রয়েছে, কেউই তার ঊর্ধ্বে নয়।’’ পাহাড়ের মানুষের বক্তব্য, গৌতমের সুর যতটা কঠোর বলে বিমলপন্থীরা আশা করেছিলেন, মোটেও তা নয়।

বামেদের বক্তব্য, গুরুঙ্গ যখন চাইছেন, আলোচনায় বসুক রাজ্য। বিমান বসু থেকে অশোক ভট্টাচার্য, সকলেই এক কথা বলেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE