যিনি প্রার্থী, তিনিই আবার ভোটকর্মী। নিজের ভোট প্রচার তাই শিকেয়। তার বদলে শুনতে হচ্ছে, কী ভাবে ব্যালটে ভোটারদের সই করাতে হবে, আঙুলে কে কালি লাগাবেন, ভোটার তালিকার সঙ্গে কারও নাম না মিললে কী করতে হবে, সে সব ফিরিস্তি। সরকারি প্রশিক্ষণ শুনে বাড়ি ফিরে শুরু করছেন নিজের প্রচার। প্রচার না করলে ভোটে হারার ভয়। প্রশিক্ষণে না গেলে সরকারি চাকরি খোয়ানোর আশঙ্কা।
এই উভয় সঙ্কটে পড়ে বিডিও থেকে জেলাশাসকের অফিসে চক্কর কাটছেন ধূপগুড়ির তিন প্রার্থী দীগেন্দ্রনাথ রায়, কনককান্তি রায় এবং হীরণ্য অধিকারী। তিন জনেই নির্দল। তিন জনই স্কুলের শিক্ষক। মনোনয়ন দেওয়ার আগে লিখিত ভাবে স্কুল এবং বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েছিলেন বলে দাবি তিন জনেরই। তিন জনের নামে প্রতীকও বরাদ্দ হয়েছে। ভোট প্রচারও শুরু করেছিলেন। আর তার মধ্যেই ভোটের কাজ। যেন মাথায় বাজ পড়ে তিন জনের।
প্রচার তো এমনিতেই বিঘ্নিত। তার উপরে নিয়ম মতো এক জেলার কর্মীদের অন্য জেলায় ভোট করাতে পাঠানো হয়। সে হিসেবে ভোটকর্মীর দায়িত্ব পালন করতে তিন জনকেই ভোটের আগের দিন এলাকা ছাড়তে হবে। চিন্তিত দীগেন্দ্রবাবু বলেন, “এলাকায় না থাকলে তো বিরোধীরা বেবাক ভোট লুঠ করবে। ভুয়ো ভোটার নিয়ে আসবে, আমি তো কিছুই করতে পারব না।” দীগেন্দ্রবাবুর নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছেন তপন রায়। তাঁকেও ভোটকর্মীর তালিকায় রাখা হয়েছে। তপনবাবু বললেন, “এ তো মহা মুশকিল। প্রার্থী এজেন্ট দু’জনকেই সরকার ভোটের ডিউটি দিয়েছে। তা হলে আমাদের ভোটটা করাবে কে?”
দীগেন্দ্রবাবু ধূপগুড়ির মাগুরমারি ২ ব্লক থেকে পঞ্চায়েত সমিতির নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। তিনি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। কনককান্তি আরামকেদারা প্রতীক নিয়ে ঝাড়আলতা ১ থেকে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। তিনি হাইস্কুলের কর্মী। হীরণ্যবাবু প্রার্থী হয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতে। কনককান্তিবাবুর আশঙ্কা, “প্রশিক্ষণে উপস্থিত না থাকলে শো-কজ করা হবে। তারপরে সাসপেন্ডও করা হয়। তেমন কিছু হলে পুরো চাকরিজীবনের ক্ষতি হয়ে যাবে।”
জেলা প্রশাসন জানায়, ভোট কর্মীদের কেউ প্রার্থী হয়েছেন তার উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারলে দ্রুত নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তবে এখনও তা হয়নি। আর তাই অবস্থা দেখে হীরণ্যবাবুর বক্তব্য, “প্রচার বন্ধ করে দিয়েছি। সরকারি কাজই করব। পাঁচ বছরের ভোটের জন্য তো সারা জীবনের চাকরি খোয়াতে পারি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy