লগ্নি সংস্থা এমপিএসের কর্ণধার প্রমথনাথ মান্না এবং দশ এজেন্টের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে পুলিশের কাছে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন দুর্গাপুরের বেশ কিছু আমানতকারী। তাঁদের অভিযোগ, সংস্থার বিভিন্ন প্রকল্পে তাঁরা লগ্নি করেছেন। কিন্তু মেয়াদ শেষে টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পের মাসিক ফেরতও বন্ধ হয়ে গিয়েছে কয়েক মাস আগে। অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১৬ জন আমানতকারী অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব)-এর দফতরে তাঁরা অভিযোগ করেন। প্রতিলিপি জমা দেন দুর্গাপুর থানায়। তাঁরা এমপিএসের কর্ণধার প্রমথনাথবাবু এবং দুর্গাপুর ও দুর্গাপুরের বাইরের দশ এজেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী কৌশিক রায়চৌধুরী, অমল সরকার, নীলাঞ্জন সুররা জানান, ২০০৮ থেকে তাঁরা সংস্থার বিভিন্ন প্রকল্পে লগ্নি করেছেন। বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পের মাসিক ফেরত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থায়ী আমানতের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এজেন্টদের ধরলে তাঁরা বারবার তারিখ দিয়েছেন। কিন্তু টাকা ফেরত পাননি। পরে এক সময় এজেন্টরাও গা-ঢাকা দিয়েছেন।
আমানতকারীরা জানান, দুর্গাপুরে এমপিএসের রমরমা কারবার ছিল। বেঙ্গল অম্বুজায় কার্যালয় খুলেছিল সংস্থা। এজেন্টরা জানান, এক সময় দুর্গাপুর থেকে বর্ধমান ছাড়াও বীরভূম ও বাঁকুড়া জেলার কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হত। পরে অবশ্য আসানসোল, সিউড়ি, বাঁকুড়ায় আলাদা অফিস হয়। কয়েক মাস আগে অভিযোগ পেয়ে দুর্গাপুরের অফিসটি ‘সিল’ করে দেয় পুলিশ। দুর্গাপুরে আমানতকারীর সংখ্যা বেশ কয়েক হাজার। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সংস্থার কর্ণধার প্রমথনাথবাবু এবং এক ডিরেক্টর পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই তৎপর হয়ে ওঠেন দুর্গাপুরের আমানতকারীরা। তাঁরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন একাধিক বার। রবিবার এমএএমসি এবং সিটি সেন্টার এলাকায় ফের বৈঠকে বসেন তাঁরা। আমানতকারীদের পক্ষে কাঞ্চনকুমার মহন্ত বলেন, “সোমবার প্রমথনাথবাবুকে দুর্গাপুর আদালতে তোলার কথা। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সেই সময় আদালতের সামনে আমরা আমাদের লগ্নির কাগজপত্র নয়ে বিক্ষোভ দেখাব।”
সংস্থার একাধিক ডিরেক্টর অবশ্য দাবি করেন, আমানতকারীদের এক টাকাও মার যাবে না। সেবি এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সংস্থার সম্পত্তি ব্যবহারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে সংস্থার তরফে। একবার ছাড়পত্র পেলেই দ্রুত আমানকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, আমানতকারীদের মোট ১৮০০ কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে। সেখানে সংস্থার সম্পত্তির পরিমাণ ২৯৪৮ কোটি টাকা। কাজেই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে সমস্যা হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy