উৎসবে ভিন দেশের প্রতিনিধিরা।—নিজস্ব চিত্র।
বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের শহরে এনে ঘুরে দেখানো হবে নানা পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন, যাতে তাঁরা ফিরে নিজেদের অভিজ্ঞতা অন্যদের জানাতে পারেন। এভাবেই বাইরের পর্যটকদের কাছে কালনাকে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিল পর্যটন উৎসব কমিটি।
বৃহস্পতিবার থেকে শহরের রাজবাড়ি মাঠে শুরু হয় এই উৎসব। প্রথম দিনেই হাজির ছিলেন স্পেন, ফ্রান্স এবং চেকস্লোভকিয়ার তিন প্রতিনিধি। উৎসব কমিটির দাবি, ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলা এই উৎসবে কলকাতার মাদার হাউস-সহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা বিদেশীদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। আজ, শুক্রবার জলপথে বিদেশীদের একটি বড় দলকে নিয়ে একটি নৌকারও পৌঁছনোর কথা কালনায়। ওই দলের সদস্যদের শহর এবং তার আশপাশের বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে দেখানো হবে। রাখা হয়েছে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও।
উৎসব শুরুর আগে দুপুরে বর্ণাঢ্য মিছিল বের হয় শহরে। তাতে পা মেলায় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। তার আগে এক যুবক চোখ বেঁধে শহরের রাস্তায় মোটরবাইক চালানোর নানা কেরামতিও দেখায়। এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো-সহ বেশ কিছু মন্ত্রীর আসার কথা থাকলেও বিকেলে জানা যায় কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলন চলায় তাঁরা আসতে পারবেন না। ফলে পর্যটন মেলার প্রথম দিনে রাজ্যের একমাত্র মন্ত্রী হিসেবে হাজির ছিলেন স্বপন দেবনাথ। স্বপনবাবু বলেন, “কালনার ১০৮ মন্দির সারা পৃথিবীতে সমাদৃত। এই ধরনের উৎসবের সঙ্গে কালনার দ্রষ্টব্যগুলি ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচার করা হলে সাধারন মানুষের আগ্রহ বাড়বে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকেও সক্রিয় হতে হবে।” বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুও জানান, উৎসবের মূল লক্ষ্যই হল বেশী সংখ্যক পর্যটক এ শহরে টেনে আনা। তাঁর দাবি, এ বছর উৎসব কমিটির প্রচারের মূল হাতিয়ার বিদেশীরা, যাঁদের কালনা শহর দেখাতে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনা হচ্ছে। বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, বিদেশিদের সাহায্যে উৎসব প্রাঙ্গনের কাছাকাছি বিভিন্ন ছোট যান রাখা হয়েছে। শহরের অন্যান্য মন্দির ঘোরার সময়ে তাঁদের সঙ্গে গাইড দেওয়া হবে। এমনকী বিভিন্ন মন্দিরের ভোগের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। রয়েছে রাত্রিবাসের ব্যবস্থাও। এ ছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ভ্রমনপিপাসুদের জন্য চার পাতার একটি লিফলেট রাখা হয়েছে, যেখানে সমস্ত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের বিবরণ, কালনায় পৌঁছনোর পথ নিয়েও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া রয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ছাড়াও বর্ধমানের জেলাশাসক, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু ,বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুনীল মণ্ডল, কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ প্রমুখেরা উপস্থিত ছিলেন।
চার দিনের এই উৎসবে বৃত্তাকারে রাজবাড়ি মাঠ ঘেরা হয়েছে। বসেছে ৫০টিরও বেশি স্টল। সেখানে শক্তিগড়ের ল্যাংচা, কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া, বর্ধমানের মিহিদানা, কালনার মাখাসন্দেশ-সহ বেশ কিছু বিখ্যাত মিষ্টি রয়েছে। রয়েছে টেরাকোটার কাজ করা বিভিন্ন মাটির পুতুল, স্বয়ম্বর গোষ্ঠীর তৈরি রকমারি পণ্যও। এছাড়া প্রতি সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে বলেও উৎসব কমিটি জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy