বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসি এবং বিকম পার্ট ৩ পরীক্ষার ফল বেরোয়নি তিন মাস ১৩ দিন পরেও। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে টিএমসিপি-র লোকজন তাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ এসএফআইয়ের। আবার আগাম না জানিয়ে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ায় তা গ্রহণ করেননি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক আবসোস আলি। টিএমসিপি নেতারা অবশ্য ধাক্কাধাক্কির কথা মানেননি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষার ফল বেরিয়ে যায় মাস তিনেকের মধ্যেই। কিন্তু, এ বার এই পার্ট ৩-এর ফল এখনও বেরোয়নি। কবে বেরোবে, তা-ও জানায়নি বিশ্ববিদ্যালয়। এসএফআই নেতাদের অভিযোগ, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন চার জেলায় ছড়িয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩টি কলেজ। প্রতি দিনই পড়ুয়ারা ফল প্রকাশের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হতাশ হয়ে ঘুরে যাচ্ছেন। পড়ুয়াদের একাংশ ভিন্ রাজ্যের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির ফর্ম দেওয়ার দিন পেরিয়ে গেলেও বর্ধমানে এখনও পার্ট ৩-এর ফল ঘোষণা হয়নি। এই কারণে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পরীক্ষা নিয়ামকের কাছে ফল প্রকাশে দেরি নিয়ে স্মারকলিপি দিতে যান জেলা এসএফআই-এর আট প্রতিনিধি। তবে পরীক্ষা নিয়ামকের নির্দেশে মাত্র দু’জন, এসএফআইয়ের রাজ্য কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষ ও জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর দে ভিতরে যান। তাঁরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে কথা হওয়ার সময়েই টিএমসিপি-র একদল নেতা-কর্মী ঘরে ঢুকে প্রথমে গালিগালাজ করে, তার পরে ধাক্কা দিয়ে তাঁদের বাইরে বের করে দেয়। পরীক্ষা নিয়ামক কোনও বাধা দেননি বলে বিনোদবাবুদের অভিযোগ।
টিএমসিপি অবশ্য এসএফআইয়ের দুই প্রতিনিধিকে ধাক্কা দেওয়া বা গালিগালাজের কথা মানেনি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি খন্দকার আমিরুল ইসলাম ও সম্পাদক দীপক পাত্রদের পাল্টা দাবি, “ছাত্র আন্দোলনে প্রাসঙ্গকিতা হারানো এসএফআই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। তাই নিজেদের অস্তিত্ত্ব রক্ষায় মিথ্যা অভিযোগ করছে।” ওই দুই নেতার দাবি, ভিন্ রাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ধমানের কিছু পার্ট ৩ পরীক্ষার্থীকে ভর্তির ব্যবস্থা করার জন্য তাঁরা পরীক্ষা নিয়ামকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন এ দিন। তাঁদের সঙ্গে এসএফআইয়ের নেতাদের দেখাই হয়নি। পরীক্ষা নিয়ামকও এই ধরনের ঘটনার কথা মানেননি।
তিন মাস পেরিয়ে গেলেও পার্ট ৩ বিএ, বিএসসি বা বিকমের ফল প্রকাশ হয়নি কেন? পরীক্ষা নিয়ামকের বক্তব্য, “বিকম এবং বিএসসি-র পরীক্ষকেরা অধিকাংশ খাতা জমা দিলেও, বিএ-র খাতার বড় অংশই এখনও জমা পড়েনি। তাই দশ দিনের মধ্যে বিএসসি এবং বিকমের ফল প্রকাশ হলেও, বিএ-র ফল প্রকাশে দেরি হবে।” কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কত জন পরীক্ষক এখনও খাতা জমা দেননি বা জমা না পড়া খাতার সংখ্যা কত তা বলতে পারেননি পরীক্ষা নিয়ামক। তাঁর যুক্তি, “আমি মাত্র কিছুদিন হল দায়িত্ব নিয়েছি। তাই সমস্ত তথ্য জানতে পারিনি। পরীক্ষকদের আমরা এখনও অনুরোধ করছি যাতে তাঁরা দ্রুত খাতা জমা দেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy