Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

উড়ালপুল অধরাই, অপেক্ষা চলছে মায়াবাজার রেলগেটে

বছর সাতেক আগে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ একবার উদ্যোগ নিয়েছিল উড়ালপুর নির্মাণের। কিন্তু ওই পর্যন্তই। দুর্গাপুরের মায়াবাজার রেলগেটে উড়ালপুল নির্মাণ এখনও তিমিরেই। বহু দিন ধরেই ওই এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্যস্ত আসানসোল-বর্ধমান রেললাইন ধরে সারা দিন ধরেই রাজধানী, শতাব্দী এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে একাধিক মেল, সুপার ফাস্ট ট্রেনের যাতায়াত লেগে থাকে। তাছাড়া পুরুলিয়া ও আসানসোল থেকে বর্ধমানগামী লোকাল ট্রেনও চলে নিয়মিত ব্যবধানে।

একের পর এক ট্রেন যায়। বন্ধ গেটের দু’পাশে বাড়ে গাড়ির ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

একের পর এক ট্রেন যায়। বন্ধ গেটের দু’পাশে বাড়ে গাড়ির ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০১:১৪
Share: Save:

বছর সাতেক আগে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ একবার উদ্যোগ নিয়েছিল উড়ালপুর নির্মাণের। কিন্তু ওই পর্যন্তই। দুর্গাপুরের মায়াবাজার রেলগেটে উড়ালপুল নির্মাণ এখনও তিমিরেই।

বহু দিন ধরেই ওই এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্যস্ত আসানসোল-বর্ধমান রেললাইন ধরে সারা দিন ধরেই রাজধানী, শতাব্দী এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে একাধিক মেল, সুপার ফাস্ট ট্রেনের যাতায়াত লেগে থাকে। তাছাড়া পুরুলিয়া ও আসানসোল থেকে বর্ধমানগামী লোকাল ট্রেনও চলে নিয়মিত ব্যবধানে। গত কয়েক বছরে ট্রেনের সংখ্যাও বাড়িয়েছে সরকার। ফলে দিনের অধিকাংশ সময়েই রেলগেটটি বন্ধ পড়ে থাকে। বাধ্য হয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে লাইনের উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয় বহু মানুষকে। এতে একদিকে যেমন বিপদের আশঙ্কা থাকে, তেমনি ভিড় বা পরপর ট্রেন থাকলে কর্মস্থলে পৌঁছতেও দেরি হয়ে যায় অনেকের।

জাতীয় সড়কে গাঁধী মোড় থেকে মায়াবাজার যাওয়ার রাস্তায় পড়ে ওই রেলগেটটি। রাষ্ট্রায়ত্ত ‘মিশ্র ইস্পাত কারখানা’ ও ডিভিসি’র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ‘দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার ষ্টেশনও’ (ডিটিপিএস) কাছেই। এছাড়া ডিটিপিএস কলোনি, একাধিক স্কুল, ব্যাঙ্ক, বাজারও পড়ে ওই রাস্তায়। ফলে মিনিবাস, গাড়ি থেকে শুরু করে মোটরবাইক এবং পথচলতি মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু রেল লাইনের উপর উড়ালপুল না থাকায় বন্ধ রেলগেটে আটকে পড়েন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে মুশকিলে পড়েন বয়স্ক, মহিলা ও স্কুল পড়ুয়ারা। বিশেষ করে স্কুল থেকে আসা যাওয়ার সময় রেলগেটে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায় বহু পড়ুয়াকে। কেউ কেউ অধৈর্য হয়ে হেঁটে বা সাইকেল নিয়েই রেললাইন পারাপার করতে শুরু করে। ওই ছাত্ররা জানায়, বহুক্ষণ অপেক্ষা করে রেলগেট খোলা না পেয়ে প্রাণহানির আশঙ্কা সত্ত্বেও তারা রেললাইন পারাপার করতে বাধ্য হয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে এডিডিএ রেল উড়ালপুল গড়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা হাতে নেয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে এডিডিএ। কিন্তু সেই পরিকল্পনার আর বাস্তবায়িত হয়নি। এডিডিএ’র বর্তমান চেয়ারম্যান তথা দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগের বোর্ড কী করেছিল, জানি না। আমরা এখনও কোনও পদক্ষেপ করিনি। রেল মন্ত্রকে চিঠি পাঠাচ্ছি। নতুন রেলমন্ত্রী যিনি হবেন তিনি যাতে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হতে পারেন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারেন, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।”

মায়াবাজার রেলগেটে উড়ালপুলের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন বাম-ডান সব মহলই। দুর্গাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “আগের থেকে জনসংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমন ট্রেনের সংখ্যাও বেড়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। উড়ালপুল হলে তবে সমস্যা মিটবে।” কংগ্রেস নেতা উমাপদ দাসও বলেন, “মায়াবাজার রেলগেটে অবিলম্বে উড়ালপুল চালু হওয়া জরুরি। বহু মানুষ উপকৃত হবেন। বিপদ থেকে দূরে থাকবেন।”

সেই উপকার কবে হবে, জানেন না দুর্গাপুরবাসী।

অন্য বিষয়গুলি:

durgapur overbridge incomplete
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE