নিজস্ব চিত্র।
ভাদ্রের দুপুর। গনগনে রোদ। তার মধ্যেই সাইকেলের দু’হাতলে জলভর্তি জ্যারিকেন ঝুলিয়ে এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় টাল সামলে হেঁটে চলেছেন আনন্দ বিদ নামে এক জন। ঘেমেনেয়ে একসা আনন্দবাবু জানান, তাঁদের এলাকায় এটাই ছবি বছরভরের।
এলাকাগুলি, নিয়ামতপুরের আকনবাগান, ব্রহ্মচারী স্থান প্রভৃতি। এলাকাবাসী জানান, ফি দিন অন্তত দু’কিলোমিটার পথ পেরিয়ে আলডি গ্রাম থেকে পানীয় জল আনতে যেতে হয়। আনন্দবাবুদের অভিযোগ, ভোট আসে ভোট যায়। ভোটের সময়ে নেতারা এলাকায় এসে দেদার প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু ভোগান্তি দূর হয় না। আসানসোল পুরসভার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিয়ামতপুরের এই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, শুধু জল নয়, অন্য নাগরিক পরিষেবার ছিটেফোঁটাও নেই। যেমন, কল আছে দিব্যি। কিন্তু তা থেকে জল পড়ে না। বাড়ির সামনে গর্ত খুঁড়ে ডোবা বানিয়ে সেই জলে জামাকাপড় কাচা, বাসন মাজা করেন বাসিন্দারা।
এই পরিস্থিতিতে জলের জন্য ভরসা সেই আলডি গ্রাম। কিন্তু তাতেও সমস্যা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা শিবানী কর্মকার, সীমা বাদ্যকরেরা বলেন, ‘‘গ্রীষ্মে আলডি থেকে জল আনতে গেলে ওপাড়ার বাসিন্দারা খুব ঝগড়া করেন। অনেক সময়ে জল না নিতে দিয়ে তাড়িয়েও দেন।’’ আলডিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গ্রীষ্মে জল-সমস্যা অনেক জায়গাতেই বাড়ে। ফলে নিজেদের গ্রামের প্রয়োজন মিটিয়ে অন্য জায়গার বাসিন্দাদের জল দেওয়া অনেক সময়ে সম্ভব হয় না। শুধু জল নয়, এলাকায় সাফাইও হয় না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নর্দমাগুলির বেশির ভাগই ভাঙা। মাটি, প্লাস্টিকের প্যাকেটে সেগুলি প্রায় বুজে গিয়েছে। ফলে নোংরা জল বইছে রাস্তা দিয়ে। তা ছাড়া সাফাই না হওয়ায় এলাকায় ডাঁই হয়ে রয়েছে আবর্জনা। রঞ্জিত বিদ নামে এক জন বলেন, ‘‘জোরে হাওয়া দিলে আবর্জনা উড়ে বাড়িতে ঢোকে। বর্ষায় নালার জল উপচে ঘরবাড়ি ভেসে যায়।’’
শুধু সাফাই হয় না বা নিকাশি বেহাল, এমন নয়। রাস্তাগুলিও চলাচলের অযোগ্য। এলাকাবাসী জানান, বেহাল রাস্তায় বর্ষায় হাঁটু সমান কাদা হয়। কিন্তু নাগরিক পরিষেবার এমন হাল কেন? স্থানীয় কাউন্সিলর নেপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করেছি। কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলিও যাতে দ্রুত সমাধান করা যায়, তার জন্য পুরসভার সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy