এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ফল ও আনাজের পর্যাপ্ত জোগান থাকায় পূর্বস্থলী ১ ব্লকের কিসান মান্ডিতে তৈরি হয়েছে কালনা মহকুমার প্রথম খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। যুক্ত হয়েছেন ৯টি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ৩৭ জন মহিলা। তাঁরা ইতিমধ্যেই জ্যাম, জেলি, আচার, বড়ি, পাঁপড়, কাসুন্দি-সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কাজ শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে এই সব জিনিসের প্যাকেজিং ও বিপণনের বিষয়ে সহায়তার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে কেন্দ্রটি ঘুরে দেখেন সরকারি আধিকারিকেরা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির জন্য উদ্যানপালন বিভাগের তরফে সমুদ্রগড় পঞ্চায়েতের ৩৭ জন গোষ্ঠীর মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আধুনিক যন্ত্রাংশ কেনার জন্য ১৮ লক্ষ ১০ হাজার টাকা সরকারি সহায়তা মেলে। ঠিক হয়, মহিলাদের তৈরি এই সামগ্রী ‘পূর্বা’ ব্র্যান্ড নামে বাজারে বিক্রি হবে। সম্প্রতি এই নামেই ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসআই) থেকে লাইসেন্সও মিলেছে।
এ দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি ডাইরেক্টর অব ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড হর্টিকালচার কস্তুরি সেনগুপ্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রসেনজিৎ দাস, জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রজেক্ট ডিরেক্টর অর্ণব রায়, জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক সুদীপকুমার ভৌমিক এবং কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল-সহ সরকারি আধিকারিকেরা। সেখানে আলোচনা হয়, কী ভাবে প্রতিযোগিতার বাজারে মহিলারা বিভিন্ন বাজারে তাঁদের সামগ্রী তুলে ধরবেন। এ ছাড়াও আলোচনায় উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর ফরমালাইজেশন অব মাইক্রো ফুড এন্টারপ্রাইজ় স্কিমে এই ধরনের পরিকল্পনায় কী কী সুবিধা রয়েছে।
বৈঠকে হাজির এক সরকারি আধিকারিকরা জানান, কাঁচামালের সহজলভ্যতার জন্যই কম খরচে গোষ্ঠীর মহিলারা বিভিন্ন জিনিস তৈরি করতে পারছেন। বাজারে এই সামগ্রীর চাহিদাও রয়েছে। পরিকল্পনা করে এগিয়ে গেলে আগামী দিনে আরও গোষ্ঠী যুক্ত হয়ে এখান থেকে উপার্জন করেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল বলেন, “এ বার বড় বোতলের বদলে ছোট ঝকঝকে লেবেল আঁটা বোতলে মহিলাদের তৈরি খাদ্য সামগ্রী বিক্রি হবে। এর জন্য সৃষ্টিশ্রী প্রকল্পে কালনার চকবাজার এবং পূর্বস্থলীর চুপিতে স্টল তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।”
প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীর সদস্য পদ্ম চৌধুরী বলেন, “আমাদের তৈরি খাদ্য সামগ্রী স্থানীয় বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ধীরে ধীরে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াচ্ছি। আশা করি রাজ্য জুড়ে আমাদের তৈরি জিনিস সুনাম অর্জন করবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)