শোকে: মেয়ে ও ছেলেকে হারিয়ে মা। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের মেনগেট এলাকায় তামলা বস্তিতে। ছবি: বিকাশ মশান
মামার বাড়ি এসে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের তামলা নালায় ডুবে মৃত্যু হল দিদি ও ভাইয়ের। পুলিশ জানায়, মৃত পূজা কুমারী (৭) ও ঋষভ কুমার (৫) বিহারের বাসিন্দা। দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরের মেনগেট এলাকার তামলা বস্তির বাসিন্দা রামচন্দ্র সিংহের মেয়ে লক্ষ্মীদেবীর বিয়ে হয়েছে বিহারের পটনার মানের এলাকায়। রামচন্দ্রবাবু অসুস্থ। তাই মেয়ে পূজা ও ছেলে ঋষভকে নিয়ে বুধবার বাবাকে দেখতে এসেছিলেন লক্ষ্মীদেবী। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ দিদি ও ভাই, দু’জনে বাইরে খেলতে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। মা-ও তাতে সায় দেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে দুর্গাপুর থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, ভাই-বোন মামার বাড়ির পাশেই তামলা নালার জলে খেলতে নামে। দু’জনেই সাঁতার জানত না। সম্ভবত, খেলতে খেলতেই তারা তলিয়ে যায় জলে।
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, শীতকাল বলে তামলা নালায় তেমন জল নেই। হাঁটু জলে চলছে পারাপার। এলাকাবাসীর মতে, এই সময়ে বড় জোর দেড় ফুট জল রয়েছে নালায়। তার পরেও কেন এমন ঘটনা? এলাকাবাসী জানান, তামলা পাড় ধরে ৫০-৬০ ফুট হাঁটা পথ। সেখানে দুর্গাপুর পুরসভা এলাকা থেকে একটি নর্দমা এসে মিশেছে তামলা নালায়। যেখানে সেই নর্দমাটি মিশছে, সেখানে মাটি ক্ষয়ে গিয়েছে। ওই এলাকাটি পার করেই যেতে হয় উল্টো দিকের খেলার মাঠে। এলাকাবাসী ও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই এলাকাটি পার হতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে। কারণ, সেখানে জলের গভীরতাও বেশি।
বাড়ি থেকে বার হওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পরেও ভাই-বোন ঘরে ফেরেনি। পরিবারের লোকজন জানান, তাঁরা ভেবেছিলেন, নতুন জায়গা। তাই হয়তো খেলতে গিয়ে দূরে কোথাও চলে গিয়েছে। ইতিমধ্যে সকাল ১১টা নাগাদ স্থানীয় এক বাসিন্দা তামলা নালায় দুই শিশুর দেহ ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে কনকনে ঠান্ডা জলে নেমে রোহিত শর্মা ও দীপক মুর্মু নামে দু’জন দেহ দু’টি উদ্ধার করেন। দেখা যায়, তা পূজা ও ঋষভের দেহ। তড়িঘড়ি তাদের দুর্গাপুর স্টিল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা দু’জনকেই মৃত বলে জানান।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় গিয়েছিলেন, স্থানীয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ ধর্মেন্দ্র যাদব। তাঁর কথায়, ‘‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। নতুন জায়গায় এসে দিদি আর ভাই সকালে খেলতে বেরিয়েছিল। তখনই বিপদ ঘটে গেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy