‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
‘দিদির দূত’দের ঘিরে বিক্ষোভ থামছেই না। এ বার এলাকায় গিয়ে পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারির মুখে পড়লেন রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে শনিবার আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বক্তারনগর গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের দাবি জানিয়ে সেখানে পোস্টারও সাঁটান স্থানীয়েরা। এর পাল্টা তাপস বলেছেন, ‘‘ভোট বয়কট করলে ভালই হবে। এত কাজ করেছি, তা-ও ২০১৪ সালে (লোকসভা নির্বাচন) ভোট পাইনি।’’ এ নিয়ে বিধায়ককে বিঁধেছেন এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষের অভাব-অভিযোগ জানতে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তৃণমূল। জনপ্রতিনিধি ও নেতারা ‘দিদির দূত’ হিসাবে গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন। কর্মসূচি শুরুর প্রথম দিন থেকেই বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন ‘দিদির দূত’রা। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, সাংসদ শতাব্দী রায়, মালা রায়, বিধায়ক লাভলি মৈত্র থেকে শাসকদলের একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিকে ঘিরে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। এই তালিকায় এ বার জুড়ল রানিগঞ্জের বিধায়কের নাম।
শনিবার রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত বল্লভপুর পঞ্চায়েতের বক্তারনগর এলাকায় যান তাপস। বিধায়কের যাওয়ার আগেই গ্রামে পোস্টার দেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাতে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে একাধিক দাবির কথা লেখা ছিল। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। বিধায়ক গ্রামে যেতেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। একাধিক দাবিও জানান তাঁরা।
বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তাপস বলেন, ‘‘ভোট বয়কট করলে ভাল হবে। এখানে ৩ কোটি টাকার কাজ করেও আমরা দু’বার হেরেছি। গ্রামের লোকেরাও তো বলেছেন, আমি কাজ করেছি। আর কেউ করেননি। কাজ করার ফল পাইনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে। যাই হোক আমি আমার কর্তব্য করেছি।’’ ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তাপস। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রানিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন তিনি। সে বছর আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূলের সায়নী ঘোষের সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল। ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়। বর্তমানে তৃণমূলের বিধায়ক বাবুল। কাজ করেও ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ওই এলাকার বাসিন্দাদের ভোট তৃণমূল পায়নি, সেই ক্ষোভের কথাই বলেছেন তাপস।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকায় উন্নয়নের কাজ হয়নি। বার্ধক্য ভাতা, লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুবিধা থেকেও তাঁরা বঞ্চিত বলে অভিযোগ। তাঁদের হুঁশিয়ারি, ভোটের আগে যদি কোনও পদক্ষেপ না করা হয়, তা হলে পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করবেন। মান্নালাল বন্দ্যোপাধ্যায় নামে তৃণমূলের এক সমর্থকও বিধায়ককে দুষেছেন। বলেছেন, ‘‘আমি নিজে তৃণমূল করি। কয়েক জন নেতার কুপরামর্শ মেনে চললেন বিধায়ক। কিছু পেটোয়া লোকের কথা শুনে চলে গেলেন। সকলের কথা শুনলেন না।’’
বিধায়ককে ঘিরে গ্রামবাসীদের অভিযোগ ও ভোট বয়কটের দাবি নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পরিমল মাজি। বলেছেন, ‘‘দিদির দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। চারদিকে দুর্নীতি হচ্ছে। দুর্নীতি ঢাকতে এলাকায় তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়েছিলেন। যে বিক্ষোভ হয়েছে, তা জনগণের রোষ। দিদির দূত হিসাবে গিয়ে বাস্তব ছবিটা দেখলেন। ভোট বয়কটের কথা বলছেন গ্রামবাসীরা, একটা সরকারের কাছে এটা লজ্জার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy