Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

দূষণ কমানোর উপায় বাতলে প্রথম

সোমবার বর্ধমানের বিদ্যার্থী বয়েজ স্কুলে সর্বশিক্ষা মিশন আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের ৫৭টি স্কুল যোগ দেয়। নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের উদ্ভাবনী চিন্তা প্রকাশ পায় মেলায়।

সৃষ্টিশীল: বিজ্ঞান মেলায় দর্শকদের মডেলের খুঁটিনাটি বোঝাচ্ছে রায়নার জগৎমাতা আঞ্চলিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

সৃষ্টিশীল: বিজ্ঞান মেলায় দর্শকদের মডেলের খুঁটিনাটি বোঝাচ্ছে রায়নার জগৎমাতা আঞ্চলিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪০
Share: Save:

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালকল থেকে অনর্গল বেরনো কালো ধোঁয়ার সঙ্গেই বাস করতে হয় রায়না, গলসির বাসিন্দাদের। অথচ চাইলেই সেই বিষাক্ত ধোঁয়াকে পরিশোধন করে অক্সিজেন যুক্ত ধোঁয়া বের করে পরিবেশ দূষণমুক্ত করা যায়। এমনই মডেল বানিয়ে বর্ধমানের বিজ্ঞান মেলায় প্রথম হল রায়নার জগৎমাতা আঞ্চলিক বিদ্যালয়।

সোমবার বর্ধমানের বিদ্যার্থী বয়েজ স্কুলে সর্বশিক্ষা মিশন আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের ৫৭টি স্কুল যোগ দেয়। নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের উদ্ভাবনী চিন্তা প্রকাশ পায় মেলায়। রায়নার ওই স্কুলের পড়ুয়ারা জানায়, কারখানার দূষণ কী ভয়ঙ্কর ভাবে প্রভাব ফেলে তা অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছে তারা। ফলে সুযোগ পেয়েই তারা তৈরি করেছে দূষণ রোখার ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল এয়ার পলিউশন কন্ট্রোলিং সিস্টেম’। সেখানে দেখানো হয়েছে, দূষিত বায়ুকে চিমনিতে পাঠানোর আগে টার্বাইনের তিনটে স্তরে ভাগ করা হচ্ছে। তারপর ‘আল্ট্রা ভায়োলেট রে’র মাধ্যমে বায়ুর দূষণের পরিমাণ কমিয়ে চিমনির মাধ্যমে বাইরে পাঠানো হচ্ছে। পড়ুয়া দেবারতি চক্রবর্তী, অনুরাধা নন্দী, আহেলি সামন্তদের কথায়, “আমাদের এলাকায় চালকল গায়ে গায়ে। প্রতিদিন দূষণের সঙ্গে আমাদের বড় হতে হচ্ছে। এই দূষণ কী ভাবে কমানো যায়, সেই চিন্তাভাবনা মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরেছি।’’ বিদ্যুৎ অপচয় রোখার উপায় বাতলে দ্বিতীয় হয়েছে শক্তিগড় গার্লস হাইস্কুল ও তৃতীয় হয়েছে কাঁকসার মলানদিঘির দুর্গাদাস বিদ্যামন্দির।

এ দিনের মেলায় পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও পরিশোধন করে কী ভাবে তা পানীয়যোগ্য করা যায় তা শিখিয়েছে পড়ুয়ারা। ওই জলকে কাজে লাগিয়ে ছোট এলাকাতেও কী ভাবে বিদ্যুৎ তৈরি করা সম্ভব সেটাও জানিয়েছে আউশগ্রামের জিজিরা উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানকার ছাত্রী প্রিয়ঙ্কা ঘোষের দাবি, “আমরা ছোট মডেলের মধ্যে দিয়ে ২ ট্রেগাওয়েট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পেরেছিলাম।’’ কেতুগ্রাম ২ ব্লকের বিল্লেশ্বর বালিকা বিদ্যালয় ভূ-উত্তাপকে কাজে লাগিয়ে কী ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব সেটা দেখিয়েছে। হিরাপুরের একটি স্কুল ‘ওয়্যারলেস’ পদ্ধতিতে সৌর বিদ্যুৎকে কাজে লাগিয়ে আলো জ্বালানো দেখিয়েছে।

সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, “পাঠ্যপুস্তকের বাইরে পড়ুয়াদের সৃষ্টিশীলতা বোঝা যায় এই ধরণের মেলায়। পড়ুয়া থেকে অভিভাবক—সবার মধ্যেই একটা অন্য জগৎ তৈরি হয়।’’ জেলা সহকারী স্কুল পরিদর্শক গোপাল পাল জানান, চক্র থেকে ব্লক হয়ে জেলাতে আসতে হয় পড়ুয়াদের। সে জন্য স্কুল থেকেই বিজ্ঞান-সচেতনতা গড়ে উঠলে পড়ুয়ারা আরও বেশি উৎসাহিত হয়ে উঠবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Control Science Fair Model
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE