বুদবুদে খড়ি নদী। — নিজস্ব চিত্র।
দূষণের কবলে পড়েছে খড়ি নদী। অভিযোগ, পানাগড় শিল্পতালুকের একটি মদ কারখানার বর্জ্য জলে দূষিত হচ্ছে নদী। প্রশাসনের কাছে দূষণরোধের আর্জি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। গলসি ১ ব্লক প্রশাসনের তরফে দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
মানকর পঞ্চায়েতের মাড়ো গ্রামের জলাশয় থেকে বেরিয়ে খডড়ি নদী গোয়ালাপাড়া ছুঁয়ে বুদবুদের সাধুনগর, বুদবুদ বাইপাস হয়ে গলসি পেরিয়ে আউশগ্রামে গিয়েছে। নাদনঘাটে ভাগীরথীতে মিশেছে খড়ি। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, নদীতে সারা বছর জল থাকে না। তবে বর্ষায় নদীর জলে চাষ করেন বুদবুদ ও গলসির বহু মানুষ। দীর্ঘদিন নদীর সংস্কার না হাওয়ায় সেটি মজে যেতে বসেছে। পাশাপাশি দূষিত হয়েছে জল। জলের রং কালো হয়ে গিয়েছে। নাব্যতা কমায় বর্ষায় নদীর জলে প্লাবিত হয় কৃষিজমি।
পারাজের বাসিন্দা শেখ আমনের দাবি, আট বছরের বেশি সময় ধরে নদীর জল দূষিত হচ্ছে। ব্যবস্থা না নেওয়া হলে নদীর অস্তিত্ব থাকবে না। গলসির বিভিন্ন এলাকায় নদীতে কিছুটা হলেও জল থাকে। সেই জলে অনেকেই মাছ ধরতেন। স্থানীয়দের দাবি, নদীর জল ব্যবহার করলে চর্মরোগ হচ্ছে। এখন নদীতে মাছ নেই বললেই চলে। দূষণে মাছ মরে যাচ্ছে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এলাকার মদ কারখানার বর্জ্য নিয়মিত নদীর জলে পড়ছে। ফলে জল দূষিত হচ্ছে। জল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বুদবুদ থেকে মানকর যাওয়ার রাস্তায় আন্ডারপাস পেরোনোর পরে দুর্গন্ধ টের পাওয়া যায়।
কারখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কারখানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কারখানার কোনও বর্জ্য নদীতে মেশে না। আধুনিক যন্ত্র লাগানো আছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ দেখে গিয়েছে।’’
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে রামপ্রণয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নদীর জল সম্পদ। খড়ির দূষণ রোধ, নাব্যতা বৃদ্ধি, শিল্পতালুকের দূষিত জল নদীতে না ফেলার মতো নানা দাবিতে ইতিমধ্যেই ব্লক প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।’’ মাড়োর বাসিন্দাদের একাংশ জানান, এক সময় আউশগ্রাম ২ ব্লকের কোটা, বলরামপুর-সহ নানা জায়গার জল খড়ি নদীর উৎপত্তিস্থলে জমত। ফলে সারা বছরই নদীতে কমবেশি জল থাকত। পরে সেচখাল তৈরি হয়। বিভিন্ন গ্রামের জল সেচখালে পড়তে থাকে। খড়ি নদীর উৎপত্তিস্থলে জলের পরিমাণ কমে যায়। নদী বাঁচাতে হলে অবিলম্বে সংস্কার করা দরকার।
গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘খড়ি নদীর উৎপত্তিস্থল মাঝেমধ্যেই সংস্কার করা হয়। নদীটির সংস্কার করা হবে।’’ গলসি ১ ব্লক প্রশাসনের তরফে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy