প্রচুর পরিমাণ গাঁজা উদ্ধারের মামলায় পাঁচ জনকে দোষী সাব্যস্ত করল বর্ধমানের মাদক সংক্রান্ত বিশেষ আদালত। যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাঁদের নাম হরেকৃষ্ণ বালা, তাঁর ছেলে শুভঙ্কর বালা ওরফে শুভ, খাম্বি সিংহ, খোয়াই বাকপম, বুম্বা সিংহ এবং মতিলাল সিং। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার দশঘড়িয়া পাড়ায় হরেকৃষ্ণ ও শুভঙ্করের বাড়ি। অসমের শান্তিপুর থানা এলাকায় খাম্বির বাড়ি। মণিপুরের বিষ্ণুপুরে খোয়াই বাকপমের বাড়ি। অপর জনের বাড়ি মণিপুরের কাওয়া থানা এলাকায়। গ্রেফতারের পর থেকে শুভঙ্কর ছাড়া বাকিরা জেলে রয়েছেন। শুভঙ্করের জামিন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। বর্ধমানের মাদক সংক্রান্ত বিশেষ আদালতের বিচারক মনোজকুমার রাই পাঁচ জনকে এনডিপিএস আইনে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি মণিপুর থেকে একটি ট্রাকে করে পূর্বস্থলীতে গাঁজা আনা হচ্ছে বলে খবর পায় এসটিএফ। সেইমতো ঘটনার দিন দুপুর থেকে পূর্বস্থলীর সুলুন্টু মোড়ের কাছে নজরদারি শুরু করে এসটিএফ। একটি ট্রাককে দেখে সন্দেহ হয় এসটিএফের গোয়েন্দাদের। ট্রাকটিকে তাঁরা দাঁড় করান। তল্লাশিতে চালকের কেবিনের পিছনে তৈরি করে রাখা বাঙ্কার থেকে থরে থরে সাজিয়ে রাখা গাঁজার প্যাকেট উদ্ধার হয়। বাঙ্কার কেটে গাঁজার প্যাকেট বার করা হয়। মোট ৮২৪ কেজি ২০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয়। ট্রাকে অসম ও মণিপুরের বাসিন্দারা ছিলেন। তাঁদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গাঁজার কারবারে হরেকৃষ্ণ ও তাঁর ছেলের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে এসটিএফ। এসটিএফের তরফে ঘটনার কথা জানিয়ে পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এসটিএফের আইনজীবী অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্যাংটি ওড়িশা, মণিপুর থেকে গাঁজা এনে এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তা পাচার করত। হরেকৃষ্ণ ও তার ছেলে শুভঙ্কর মণিপুর থেকে গাঁজা আনার বরাত দেয়। হোয়াটসঅ্যাপে ট্রাকের চালকের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অন্য কোথাও মামলা নেই বলে আদালতে বয়ান দিয়েছে হরেকৃষ্ণ। কিন্তু, সে অন্য একটি মামলায় অভিযুক্ত। আদালতে মিথ্যা বয়ান দেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও আবেদন জানিয়েছি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)