Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Garui River

কমল জল ছাড়ার পরিমাণ, চিন্তা গাড়ুই নিয়ে

বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটির পক্ষে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে যথাক্রমে ১৫ ও ৫০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

An image of Durgapur Barrage

দুর্গাপুর ব্যারাজ। বিকাশ মশান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৬
Share: Save:

মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বুধবার প্রায় অর্ধেক করেছে ডিভিসি। তবুও দুই জলাধারে ‘হলুদ’ সতর্কতা জারি রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই জলাধারেরই জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে বইছে। তবে দুই জলাধারে গত কয়েক দিনের তুলনায় ঝাড়খণ্ড থেকে বুধবার কম জল ঢুকেছে। অন্য দিকে, এ দিনও সারাদিনই আসানসোলে অবিরাম বৃষ্টিপাত হওয়ায়, গাড়ুই নদীর জলস্ফীতি নিয়ে চিন্তায় রয়েছে জেলা প্রশাসন। যদিও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে প্রশাসনের জানানো হয়েছে।

জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটির পক্ষে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে যথাক্রমে ১৫ ও ৫০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব শশী রাকেশ ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে বরাকর ও দামোদর নদে প্রচুর পরিমাণে জল ঢোকায়, এই দুই জলাধারের জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে মাইথন জলাধারের জলস্তর ৪৮৭ ও পাঞ্চেত জলাধারের জলস্তর ৪১৪ ফুট। এই দুই জলাধারের বিপদসীমা যথাক্রমে ৪৯৫ ও ৪৩৫ ফুট। ডিভিসির জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় প্রয়দর্শী বলেন, “কর্তৃপক্ষের তরফে প্রতিটি মুহূর্তের নজর রাখা হচ্ছে।”

বুধবার মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারে দেখা গেল, আধিকারিকেরা এলাকায় টহল দিচ্ছেন। পার্শ্ববর্তী সমতল ভূমি, যেখানে বরাকর ও দামোদরের জল ঢুকেছে, সে সব অঞ্চলও পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা হয়েছে। তবে, গত কয়েক দিনের তুলনায় দুই নদে ঝাড়খণ্ড থেকে অনেক কম জল ঢুকেছে। ফলে, বুধবার মাইথনে প্রায় ২ হাজার ৪৮৯ একর ফুট ও পাঞ্চেতে প্রায় ৩ হাজার ৭০৫ একর ফুট জল ঢুকেছে। এই দুই জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ কমতে থাকে। এ দিন দুপুরে জল ছাড়ার হার ছিল ১ লক্ষ ২৯ হাজার কিউসেক। বুধবার সকালে তা কমে হয় ৯৯ হাজার ৩৫০ কিউসেক। তা রাত ৮টায় ৯৭ হাজার ৫০০ কিউসেকে নেমে আসে।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ অনেকটাই কম করা হয়েছে, সেখানে পাঞ্চেত থেকে তুলনামূলক জল ছাড়ার পরিমাণ এতো বেশি কেন? ডিভিসি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট জলাধার থেকে বেশি পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছে। এই জল পাঞ্চেত জলাধারে এসে জমা হচ্ছে। এই জলাধারের জলধারণ ক্ষমতা মাইথনের চেয়ে অনেক কম। তাই জলাধারের কোনও ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই পাঞ্চেত থেকে বেশি পরিমাণ জল ছাড়া হচ্ছে।

এ দিকে, আসানসোলের গাড়ুই নদীর জলস্ফীতি নিয়ে চিন্তায় পড়ছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের কর্তাদের কথায়, মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া হলে, শহরের শাখা নদী গারুইতে কিছুটা জল বাড়লে, তা বন্যার পরিস্থিতি তৈরি করে না। কিন্তু এর সঙ্গে
যদি অবিরাম বৃষ্টিপাত হয়, তবে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে তেমন পরিস্থিতি হলে, তা সামাল দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিয়ে রাখা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, অবিরাম বৃষ্টি ও দুই জলাধার থেকে জল ছাড়ায় বিপদ দেখা দিলে, কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে মঙ্গলবারই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস পুন্নমবলম।

জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের নোডাল অফিসার তথা এগজ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “জেলাশাসকের পরামর্শ মতো ত্রাণ ও বন্যা প্রভাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ করা হবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy