গোলাপ গাছের পরিচর্যায় সুবীর পোদ্দার। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে পড়ার সময়ে গোলাপের চারা পেলেই আনতেন বাড়িতে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গোলাপের নেশা পেয়ে বসে তাঁকে। দুর্গাপুর শহরের প্রান্তে ডিভিসি ব্যারাজ লাগোয়া সীতারামপুর কলোনির সুবীর পোদ্দারের বাড়ি গেলে অন্তত আড়াইশো রকমের গোলাপের দেখা পাওয়া যায়। বাড়ির দরজা খুললেই ভেসে আসে গোলাপের সুগন্ধ আর মৌমাছির গুঞ্জন।
দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) কর্মী সুবীর তাঁর বাড়ির উঠোনে গোলাপের বাগান গড়েছেন। ম্যাগাজিন, ইন্টারনেট, সমাজমাধ্যম থেকে গোলাপ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন তিনি। সেই অনুযায়ী গোলাপের চারা সংগ্রহ করেন। ফুল পছন্দ হলে গাছ রেখে দেন। বাকি গাছগুলি ফেলে দেন। প্রত্যেক বছর ৮-১০ প্রজাতির নতুন গোলাপ যোগ হয় তাঁর সম্ভারে। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা আড়াইশো ছাড়িয়েছে।
হরেক রঙের গোলাপে ভরে রয়েছে সুবীরের গোলাপ বাগান। ‘গ্রেস অ্যান্ড চার্ম’, ‘ডায়না প্রিন্সেস অফ ওয়েলস’, ‘হিজ় হাইনেস’, ‘কালিফোর্নিয়া ড্রিমিং’, ‘ক্লাসিক বিউটি’, ‘স্পেশাল মেরিট’ ছাড়াও, চা পাতার গন্ধযুক্ত ‘হাইব্রিড টি’, এবং ‘হাইব্রিড টি’ ও ‘পলিয়েন্থা’ গোলাপের মিশ্রণে তৈরি ‘ফ্লোরিবান্ডা’-সহ নানা ধরনের গোলাপ শোভা
পায় তাঁর বাগানে।
সুবীর জানান, কম বয়সে গোলাপের চারা পেলেই বাড়ি নিয়ে আসতেন। দুর্গাপুর বাজারে ঝুড়িতে করে গোলাপের চারা বিক্রি হত। একটু বড় হওয়ার পরে সেখান থেকে চারা কিনে আনতেন। ডিপিএলে চাকরি পাওয়ার পরে গোলাপের বাগান গড়ায় মন দেন। সাধারণত ‘গ্রাফটিং’ করে নিজেই চারা তৈরি করেন সুবীরবাবু। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি কুঁড়ি আসতে থাকে। জানুয়ারির শুরুতে ফুল ফুটতে শুরু করে। দূষণের কবল থেকে বাঁচাতে প্রতিদিন সকালে গাছের পাতা ধুয়ে দিয়ে হয়। রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সারও দেওয়া হয়। পোকামাকড়ের হাত থেকে ফুল বাঁচাতে নিয়মিত কীটনাশক ছেটাতে হয় গাছে, জানান সুবীর।
সুবীর জানান, দুর্গাপুরের সুব্রত ঘোষ, কলকাতার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় গোলাপের বীজ থেকে চারা তৈরি করেন। তাঁদের কাছ থেকে নতুন চারা আনেন তিনি। প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিয়ে থাকেন তাঁরা। গোলাপের মরসুমে সুবীরের বাড়িতে ভিড় লেগেই থাকে। স্থানীয়েরা তো বটেই, সমাজমাধ্যম থেকে খবর পেয়ে ভিন্ রাজ্য থেকেও আসেন অনেকে। সুবীর বলেন, ‘‘অনেকেই আসেন বাইরে থেকে। গোলাপের বাগান ঘুরে দেখেন। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। গোলাপের বাগান তৈরির মাধ্যমে সৃষ্টির আনন্দে মেতে থাকি। তবে বাইরে কোথাও রাত কাটানো যায় না। গোলাপ গাছগুলির কথা ভেবে বাড়ি ফিরতেই হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy