সাধারণত এ ভাবেই ঘরে তৈরি হত সেমুই। গলসিতে। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ এক মাস সংযমের পরে আসে খুশির ইদ। আর সেমুই ছাড়া ইদের সেই ‘দাওয়াত’ অসম্পূর্ণ। কেউ প্যাকেটবন্দি ‘লাচ্চা’ কেনেন, কেউ কেনেন ‘পাল্লি ভাজা’। কিন্তু কেনা সেমুইয়ের আড়ালে হারাতে বসেছে ঘরে হাতে তৈরি সেমুই। গলসির প্রবীণ বাসিন্দাদের অনেকেরই ঘিয়ে ভাজা সেই সেমুইয়ের স্বাদ মনে পড়লে জিভে জল আসে এখনও।
তাঁরা জানান, একটা সময় প্রায় সমস্ত মুসলিম পরিবারেই কাঁসা-পিতলের সেমুই তৈরির যন্ত্র থাকত। সারা রমজান মাস ধরে বাড়ির পুরুষদের সাহায্যে সেমুই বানানো হত ঘরে ঘরে। এখন অবশ্য যন্ত্র থাকলেও হাতের কাছে কেনা সেমুই পেয়ে তার ব্যবহার করেন না বেশির ভাগ জনই। পুরসার বাসিন্দা, প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক শেখ ফিরোজ আহম্মদ বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগেও গ্রাম বাংলার বহু বাড়িতেই তৈরি হত সেমুই। তাঁর স্বাদই ছিল আলাদা। কিন্তু বাজারের বিভিন্ন জাতের সেমুইয়ের চাপে হারিয়ে গিয়েছে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি সেই সেমুই। কাজের চাপে আর সময়ের অভাবে এখন কেউই বাড়িতে সেমুই তৈরি করেন না।’’
গ্রামের মহিলারা জানান, প্রথমে ময়দায় জল দিয়ে লেই তৈরি করা হত। সেই লেই কাঁসা বা পিতলের যন্ত্রে ঢুকিয়ে দেওয়া হত। যন্ত্র ঘোরালেই ছাঁকনি দিয়ে সেমুই হয়ে বার হত। কাঁচা সেমুই গরম ঘিয়ে ভেজে তার পরে রান্না করা হত। ইদের দিনে সেই দিয়ে তৈরি হত হরেক রকমের পদ। এখন অবশ্য কেনা সেমুই দিয়েই সেই সব রান্না করেন মহিলারা। বর্ধমান শহরের বাসিন্দা মনোহরা বেগম বলেন, ‘‘বাড়িতে জিনিসপত্র এনে সেমুই বানানো পরিশ্রমের। সময়সাপেক্ষও। এর থেকে বাজার থেকে কেনাই সহজ।’’ গলসি বাবলার বাসিন্দা আসরফ মণ্ডল, দয়ালপুরের বাহারদার সরকারেরা জানান, আগে রমজান মাস পড়তেই গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে সেমুই তৈরি করার রেওয়াজ ছিল। ইদ যে দরজায় কড়া নাড়ছে তা সেমুই তৈরির প্রস্তুতি দেখেই বোঝা যেত। এখন ইদ এসে গেলেও অব্যবহারে মরচে ধরছে সেমুই তৈরির যন্ত্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy