জলের তোড়ে ভেঙেছে রাস্তা। শিবপুর-জয়দেব ঘাটে বিকাশ মশানের তোলা ছবি।
মেরামতের জন্য বন্ধ পানাগড়-মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের ইলামবাজার সেতুটি। যাতায়াতের জন্য অজয়ের উপর তৈরি করা মোরামের অস্থায়ী রাস্তাও দিন তিনেকের বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছে। আবার কাঁকসার শিবপুর থেকে জয়দেব যাওয়ার কাঁচা রাস্তাটিও বৃষ্টিতে বেহাল। এর জেরে বর্ধমান ও বীরভূমের মধ্যে যোগাযোগের প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রী ও ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ৩ জুন থেকে মেরামতের জন্য বন্ধ রয়েছে সেতুটি। বিকল্প রাস্তা হিসেবে নদীর উপরে মাটি ও মোরাম ফেলে যে রাস্তাটি তৈরি করা হয়, তা দিয়েই চলছিল যাতায়াত। বাসিন্দারা জানান, দিন তিনেকের বৃষ্টিতে অজয়ের জল বেড়ে যাওয়ায় যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ওই রাস্তাটিও ভেসে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকসার বেশির ভাগ সব্জি চাষি ফসল বিক্রির জন্য বীরভূমের ইলামবাজারে যান। কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারেই বিক্রিবাটা করতে হচ্ছে বলে জানান চাষিরা। বিপাকে পড়েছে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পণ্যবাহী গাড়িগুলিও। ওড়িশা, বিহার, তামিলনাড়ু-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা পণ্যবাহী লরি, ট্রাকগুলিও পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার জন্য এই পথটিই ব্যবহার করে। এক লরি চালক জানান, সাধারণত অসম, ত্রিপুরা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বছরভর যাতায়াত করেন তাঁরা। রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়ায় অনেকেই আটকে পড়েছেন বলে জানা গেল। যেমন, তামিলনাড়ু থেকে দেশলাই নিয়ে এসেছেন মনোজ ঠাকুর, সঞ্জয় কুমারেরা। তাঁরা জানান, গত তিন দিন ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা। মনোজবাবুর কথায়, ‘‘সময়মতো পণ্য গন্তব্যে না পৌঁছলে সমস্যায় পড়তে হবে। কবে রাস্তা খুলবে, বুঝতে পারছি না।’’
কাঁকসার শিবপুর থেকে বীরভূম যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ থাকার জন্য সমস্যা আরও বেড়েছে। এর জেরে বীরভূমের বাসিন্দাদের দুর্গাপুরে আসতে গেলে ভেদিয়া বা পাণ্ডবেশ্বর হয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এর ফলে সময়ও বেশি লাগছে। পবিত্র দত্ত নামে বীরভূমের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দুর্গাপুর থেকে দিল্লিগামী ট্রেন ধরার কথা ছিল। কিন্তু ইলামবাজার ও জয়দেবের রাস্তা বন্ধ থাকায় পাণ্ডবেশ্বর হয়ে দুর্গাপুরে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে গেল। ট্রেনটাও ফসকে গেল।’’
বাসিন্দাদের দাবি, বর্ষায় নদীতে জল বেশি থাকে। তাই এ রকম গুরুত্বপূর্ণ সেতু মেরামতের আগে বিকল্প রাস্তা নিয়ে প্রশাসনের তরফে আরও ভাবনাচিন্তা করা দরকার ছিল। সমস্যার কথা স্বীকার করে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরাও বলেন, ‘‘বিকল্প দু’টি পথই ভেঙে যাওয়ায় মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। বীরভূম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy