জমে থাকা জিনিসপত্রও বিপদ বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা রোগীদের। নিজস্ব চিত্র।
বছর পাঁচেক আগে কলকাতার এক হাসপাতালের ঘটনা দেখে শিক্ষা হয়েছিল। তাই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছিল। আগুন লাগলে যাতে তা বড় আকার না নেয় সে জন্য ঢেলে সাজা হয়েছে পরিকাঠামো। কিন্তু তার পরেও দু’টি ওয়ার্ডের মাঝামাঝি রান্নাঘর-সহ কিছু অব্যবস্থা নিয়ে আসানসোল হাসপাতালে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের মনে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে এখানকার চিত্রটাও ছিল অন্য নানা হাসপাতালের মতো ঢিলেঢালা। কিন্তু বছর দেড়েক আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। তবে ছবিটা পাল্টে যেতে শুরু করে বছর দেড়েক আগে থেকে। বদলানো হয়েছে পুরনো জীর্ণ ওয়ারিং। বিদ্যুতের সুইচ গিয়ার বাক্সগুলি লোহার খাঁচায় ঘিরে দেওয়া হয়েছে। মান্ধাতার আমলের শীতাতপ যন্ত্র পাল্টে আধুনিক যন্ত্র বসানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক এমসিবি বাক্স বসানো হয়েছে। খোলা তার যাতে না থাকে, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলির গায়ে মেয়াদ ফুরনোর তারিখ লিখে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে, বিদ্যুতের পরিকাঠামো ও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, বর্ধমানের একটি সংস্থাকে সমস্ত অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলির গ্যাস পাল্টানো-সহ যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে বাইরে বেরনোর সব ক’টি দরজায় নতুন তালা লাগানো হয়েছে। চাবি কাদের কাছে থাকে, তা হাসপাতালের সমস্ত কর্মী-আধিকারিকরা জানেন। ফলে, দূর্ঘটনা ঘটলে চাবি খুঁজে পেতে সমস্যা হবে না। এ ছাড়া প্রতি ওয়ার্ডে ছেনি-হাতুড়ি রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তালা ভাঙা যাবে। আগুন লাগলে দ্রুততার সঙ্গে কী ভাবে সব রাস্তা খুলে রোগীদের বের করা হবে, নিয়মিত সেই অভ্যাস করানো হয়।
কিন্তু এর পরেও হাসপাতালের রান্নাঘরটি নিয়ে যথেষ্ট আতঙ্ক রয়েছে রোগীদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, এই রান্নাঘর থেকে যে কোনও সময়ে অগ্নিকাণ্ড হতে পারে। মূল ভবনেই পুরুষ সার্জিকাল ও মহিলা মেডিক্যাল ওয়ার্ডের ঠিক মাঝে তিনটি ঘর নিয়ে রান্নাঘর তৈরি হয়েছে। বিশাল আকারের একাধিক ভাটিতে রান্না চলছে। এই রান্নঘরটি যে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন সুপার নিখিলবাবু। তিনি জানান, হাসপাতালের বাইরে রান্নাঘর তৈরির জায়গা দেখা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে দু’টি বড় জেনারেটর রাখা হয়েছে। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘আমরা বিকল্প জায়গা দেখেছি। দ্রুত রান্নাঘরটি সরিয়ে নেব।’’
সুপার জানান, এই হাসপাতালে আগে কখনও আগুন লাগেনি। তবে কলকাতার আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তাঁরা ভুলতে পারেন না। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে পূর্ত দফতরের (বিদ্যুৎ) সহায়তায় পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলে ফেলেছেন। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘প্রতি সপ্তাহে পূর্ত দফতরের কর্মীরা পরীক্ষা করে যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy