কালো হয়ে গিয়েছে সবুজ পাতা। জামুড়িয়ার ইকরায়। নিজস্ব চিত্র।
স্পঞ্জ আয়রন কারখানা দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র চালাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে চতুর্দিক ঢাকছে কালো ছাইয়ে। দূষণের ফলে বাড়ছে রোগও। এমনই অভিযোগ করেছেন জামুড়িয়ার ইকরা শিল্পতালুক লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের বড় অংশই।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় জামুড়িয়া শিল্পাঞ্চলে বাতাসের গুণমানের সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) ছিল ১৬২। সূচক ১০০-র নীচে থাকলে, তা ভাল বলা হয়।
২০০৩-এ ইকরা শ্মশানের অদূরে প্রথম স্পঞ্জ আয়রন কারখানা চালু হয়। তার পরে থেকে মোট ১৪টি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা চালু হয়েছে। কিছু কারখানার ভিতরে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে।
এই কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলির জন্য শিল্পতালুক লাগোয়া ইকরা, মামুদপুর, চণ্ডীপুর, শেখপুর, সার্থকপুর, ইকরা স্টেশন এলাকার বাসিন্দারা দূষণ-সমস্যায় ভুগছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, অমর কোড়া, শান্তি ঘোষেরা বলেন, “এলাকার অনেকের রুজি-রুটির সংস্থান হয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু কারখানাগুলি বেশির ভাগ সময়ে দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বন্ধ রাখে। ফলে, দূষণ ছড়াচ্ছে। চতুর্দিক কালো ছাইয়ে ঢাকা।”
এলাকাবাসী জানান, গাছের সবুজ পাতা কালো হয়ে গিয়েছে। বেশির ভাগ সময় বাড়ির জানলা বন্ধ রাখতে হয়। তা ছাড়া, বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসা ছাই পড়ে রান্নাঘরের খাবারেও। এলাকার নদী সিঙ্গারণের জলও ছাইয়ে পরিপূর্ণ। তা গবাদি পশু পর্যন্ত পান করতে পারে না।
এলাকাবাসী জানান, ইকরা গ্রামে কুড়ি জনের বেশি ক্যানসার আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে। ইকরা গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা বুড়ো চট্টোপাধ্যায় জানান, দূষণের ভয়ে অনেকে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র বাড়ি করে বসবাস করছেন। তাঁর আর্জি, “প্রশাসনের দ্রুত বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করা দরকার।”
সাবেক আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার শ্যামল স্যানাল জানান, কালো ছাইয়ে মিশে থাকে কয়লা, লোহা ও স্পঞ্জ আয়রনের গুঁড়ো। এর আয়তন ২.৫ মাইক্রন। এই ছাই মানুষের শ্বাসযন্ত্রে ঢুকলে শাসকষ্টজনিত রোগ থেকে আয়ু কমে যেতে পারে। পাশাপাশি, জল ও জমিতে আস্তরণ তৈরি করে ছাই। এই জল ব্যবহারের ফলে, চাষাবাদেও ক্ষতি হয়।
যদিও, দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র না চালানোর অভিযোগ মানেননি ‘জামুড়িয়া স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ়ের’ সভাপতি পবন মাওন্ডিয়া। তাঁর বক্তব্য, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কড়া নজরদারি এড়িয়ে কোনও সংস্থার পক্ষে দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বন্ধ রেখে কারখানা চালানো সম্ভব নয়।” পাশাপাশি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক কর্তার বক্তব্য, “যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র না চালানো হলে জরিমানা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy