কোলন ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে জমানো অর্থ আগেই শেষ। চিকিৎসার জন্য নেওয়া ব্যাঙ্ক ঋণ, জমি বিক্রির টাকাও তলানিতে। তবু আশা ছাড়েনি পরিবার। কালনার মহিষমর্দিনী ইনস্টিটিউশনের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক প্রসেনজিৎ সিংহকে সুস্থ করতে নানা জায়গায় আবেদন করছেন তাঁরা। সাহায্য চাওয়া হয়েছে এলাকাতেও।
কালনা শহরের লালবাগানপাড়ার বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের এই শিক্ষকের বাড়িতে মা, স্ত্রী, ছোট ছোট দুই সন্তান, বোন-সহ বেশ কয়েক জন রয়েছেন। আগে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তিনি। ২০১৩ সালে চলে আসেন নিজের শহরের স্কুলে। স্কুলে পড়ানোর সঙ্গে এক সময় প্রচুর টিউশন করতেন। মাস তিনেক আগে কোলন ক্যানসার ধরা পরার পরে সেই সব বন্ধ। প্রসেনজিতের স্ত্রী বান্টি সিংহ জানান, তাঁর স্বামী এখন হায়দরাবাদের একটি হাসপাতালে ভর্তি। এক বার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার পরেও শরীরে মারাত্মক সংক্রমণ রয়েছে। যার জন্য প্রতিদিন ২১ হাজার টাকা দামের একটি করে ইঞ্জেকশন দিতে হচ্ছে তাঁকে। শয্যা ভাড়া-সহ আরও খরচ দিন প্রতি হাজার চারেক টাকা। সেই টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। বান্টি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক ঋণ, জমি বিক্রি সব করে ফেলেছি। অথচ চিকিৎসার অনেক ধাপ বাকি এখনও। কেউ সাহায্যের হাত বাড়ালে উপকৃত হই।’’
কালনার কোয়ালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন সাব মেজর নরেশচন্দ্র দাস ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শহরের কয়েক জন ব্যবসায়ী, শিল্পপতিও সাহায্য করেছে। তবে সেটাও যথেষ্ট নয়।কালনা মহিষমর্দিনী ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রসেনজিৎ অত্যন্ত ভাল শিক্ষক। ছাত্ররাও ওঁকে ভালবাসে। ওঁর চিকিৎসার জন্য আরও অন্তত ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। স্কুল থেকে সাহায্য করা হয়েছে। আরও চেষ্টা করছি।’’ আর এক শিক্ষক দেবব্রত মণ্ডলও বলেন, ‘‘গোটা স্কুল ওঁর জন্য মনমরা। আমাদের বিশ্বাস রয়েছে ও সুস্থ হয়ে ফের চক, ডাস্টার নিয়ে ক্লাসে যাবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)